এরশাদ শেষাবধিও যে ভাবে টিকে গেল রাজনীতিতে।।

February 17, 2018 7:51 am0 commentsViews: 13
  • জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদছবির কপিরাইটঃ GETTY IMAGESঃ জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ

বাংলাদেশে ৩৫ বছর আগে ১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্ররা আন্দোলনের সূচনা করেছিল। সেদিন ঢাকায় শিক্ষা ভবন অভিমুখে ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়। সেই আন্দোলন কালক্রমে গণআন্দোলনে রূপ নিয়েছিল এবং জেনারেল এরশাদের শাসনের পতন হয়েছিল নব্বইয়ের শেষে। কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে পতন হলেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছেন জেনারেল এরশাদ। কিন্তু কিভাবে সেটা সম্ভব হয়েছে, এমন প্রশ্ন তোলেন অনেকই। বিশ্লেষকদের অনেকে এজন্য আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, প্রধান দুই দলের ক্ষমতার রাজনীতিকে দায়ী করেন। ঢাকায় শিক্ষাভবনের উল্টো পাশে কার্জন হলের সামনের রাস্তায় জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সেই ৮৩সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি প্রথম ছাত্র মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। সেখানে নিহত ছাত্রদের স্মরণে রাস্তার কোণায় একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে। প্রতিবছরের মত এবারও দিনটি ফিরে এলে সেই ছাত্র মিছিলের নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রনেতাদের অনেকে সেখানে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নিহতদের শ্রদ্ধা জানিয়ে সেদিনের কথা স্মরণ করেন। সেই মিছিলের একজন সংগঠক, তৎকালীন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক পুলিশের গুলির মুখে মিছিলের সামনের কাতারে থেকেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি বলছেন, গত সাড়ে তিন দশকে দেশের রাজনীতিতে জেনারেল এরশাদের একটা অবস্থান দেখে তাদের এখন দুঃখ হয়। সেই যে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল, পরে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল শ্রমিক, আইনজীবীসহ পেশাজীবীদের মধ্যে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৫দল এবং বিএনপির নেতৃত্বে সাতদল এবং এর বাইরে অন্যান্য দল যুগপৎ আন্দোলনে নেমেছিল। আন্দোলন মাঝেমধ্যে থমকে গিয়েছিল। শেষপর্যন্ত সব দলের ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের মুখে জেনারেল এরশাদকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। তখন তাঁকে জেলে নেয়া হলেও পরে রাজনীতিতে ভূমিকা রাখার মত তাঁর একটা অবস্থান তৈরি হয়।

অধ্যাপক রওনক জাহান মনে করেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, প্রধান দুই দলের কাছে ভোটের রাজনীতি প্রাধান্য পায়। সেই সুযোগে জেনারেল এরশাদ এবং তার দল জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে বৈধতা পেয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক রওনক জাহান বলেছেন, জেনারেল এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র ফিরে এলেও আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি, প্রধান দুই দলের কাছে ভোটের রাজনীতি প্রাধান্য পায়। সেই সুযোগে জেনারেল এরশাদ এবং তার দল জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে বৈধতা পায় বলে তিনি মনে করেন। “নির্বাচনের গণতন্ত্র যখন ফেরত এল, ১৯৯১ সালের পর থেকে আমরা যে ক’টা নির্বাচন দেখেছি, ওদের পপুলার ভোটের শেয়ার যে অনেক আছে, তা নয়। কিন্তু কয়েকটা আঞ্চলিক জায়গায় এরশাদ নিজে এবং তার দলের কিছু লোক নির্বাচিত হয়ে আসতে পারছেন।”             “যেহেতু প্রধান দু’টি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটের শেয়ার খুব কাছাকাছি, এবং আমাদের যে ইলেকটোরাল সিস্টেম, তাতে কোন নির্বাচনী এলাকায় কেউ অল্প ভোটের ব্যবধানে জিতে যেতে পারেন। ফলে এরশাদের জাতীয় পার্টি এবং অন্যদিকে জামায়াত, যাদের কাছে ছয় বা সাত শতাংশ ভোট আছে, প্রধান দুই দল তাদের কাছে টানে। এভাবেই এরশাদ রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়ে যাচ্ছেন।” নববইয়ের শেষে জেনারেল এরশাদের পতনের সাথে সাথেই ঢাকার রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ নেমে এসেছিল। মানুষের উচ্ছ্বাস আনন্দে সে সময় নগরীর রাস্তাগুলো ভিন্ন চেহারা নিয়েছিলো। সেই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে এখনও অনেকে বিস্মিত হন রাজনীতিতে জেনারেল এরশাদের অবস্থান দেখে।

“আমাদের দেশে রাজনীতির যে বিভাজন, দুই পরাশক্তি বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ, এদের একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে খেলিয়ে অনেক সময় এরশাদ এর সুবিধা নিতে পেরেছেন।” বলছেন লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ।

তবে রাজনীতি বিষয়ে গ্রন্থের লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বিশ্লেষণ করছেন ভিন্নভাবে।  তিনি বলছেন, প্রধান দুই দলের বিভেদের রাজনীতির সুযোগ নিয়ে এরশাদ নয় বছর ক্ষমতায় থাকতে পেরেছেন। ক্ষমতা ছাড়ার পরও একই ধরনের সুযোগ তাঁর কাছে এসেছে বলে তিনি মনে করেন। “আমাদের দেশে রাজনীতির যে বিভাজন, দুই পরাশক্তি বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ, এদের একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে খেলিয়ে অনেক সময় এরশাদ এর সুবিধা নিতে পেরেছেন।” মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলছিলেন, “আমরা তো সুদূর অতীতটা ভুলে যাই, নিকট অতীত মনে রাখি। এরশাদের যত খারাপ কাজ আছে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা, সংবিধানকে বিকৃত করা, এগুলো অনেক কিছু করেছে। কিন্তু ঐ যে গণতন্ত্রের কথা বলেন যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি তারা তাকে ব্যবহার করতে চেয়েছে। তাকে শাস্তি দিতে চায় নি। এবং শাস্তি যদি দিতেও চেয়ে থাকে, সেটাও হচ্ছে, শাস্তির ভয় দেখিয়ে ব্যবহার করার জন্য। এজন্যই কিন্তু এরশাদ টিকে গেছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অপরাজেয় বাংলার পাশে বটতলায় জড়ো হয়ে সেখান থেকেই ছাত্ররা জেনারেল এরশাদের বিরুদ্ধে সেই প্রথম মিছিল বের করেছিলেন। এখন নতুন প্রজন্মও রাজনীতিতে এরশাদের অবস্থানকে মেনে নিতে পারেন না। তারাও মনে করেন, এমন পরিস্থিতির জন্য প্রধান দুই দলেরই দায় রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে এমন ধারণাই পাওয়া গেল।

তাদের একজন সানজিদা আকতার বলছিলেন, “এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতা এবং দেউলিয়াপনার কারণে এরশাদের মত স্বৈরশাসক এখনও বাংলাদেশের রাজনীতিতে রয়েছে।”

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম মনে করেন, এরশাদের অবস্থান তৈরির ক্ষেত্রে ভোটারদেরও ভূমিকা আছে

সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৯৮৬ সালে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ জেনারেল এরশাদকে এক ধরণের বৈধতা দিয়েছিল বলে দলটির বিরুদ্ধে সমালোচনা রয়েছে।

পরে ১৯৯৬ সালে সরকারের গঠনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়েছিল। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মহাজোট করেছিল। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনেও অনেক নাটকীয়তার পর শেষপর্যন্ত জাতীয় পার্টিকে সাথে রাখতে সক্ষম হয়েছিল আওয়ামী লীগ।

এখন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে রয়েছেন জেনারেল এরশাদ।

তাঁর স্ত্রী রওশন এরশাদ সাংসদে বিরোধীদলীয় নেতা। একই সাথে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের জাতীয় পার্টি থেকে তিনজন মন্ত্রী আছেন।

ফলে আওয়ামী লীগের ওপরই দায় বেশি আসে। কিন্তু দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম মনে করেন, এরশাদের অবস্থান তৈরির ক্ষেত্রে ভোটারদেরও ভূমিকা আছে। “গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যখন ওনার পতন হয়, তারপরই কিন্তু নির্বাচনে উনি নিজে পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেন। ঐটিই ছিল তাঁর ভিত মানে রাজনীতির পুনর্বাসন।” শেখ সেলিম আরও বলেছেন, “আওয়ামী লীগ তাকে টেনেছে কী করে, বরং বিএনপিই টানার চেষ্টা করেছে। বিএনপি যে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে, যেমন ২১শে অগাস্টের গ্রেনেড হামলাসহ অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে। আমাদের কাউন্টার পার্ট যখন আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চায়, তখন কেউ যদি আমাদের সাথে আসতে চায়, আমরা ডিনাই করতে পারি না। সেজন্যই আমরা এরশাদের সাথে মহাজোট করি।”

বিএনপিও দায় এড়াতে পারেনা বলে অনেকে মনে করেন।

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান মনে করেন, গণ বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত কেউ যাতে রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে দলগুলো থেকেই একটা চেষ্টা হওয়া প্রয়োজন।

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ভূমিকার জন্য তাঁকে আপোষহীন নেত্রী হিসেবে তুলে ধরেন তাঁর দলের নেতা কর্মীরা। কিন্তু জেনারেল এরশাদের পতনের পর ১৯৯১ সালে বিএনপিই ক্ষমতায় এসেছিল। তখন এরশাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১০টির বেশি মামলা হয়েছিল। মাত্র একটি মামলায় সে সময় বিচার শেষ হয়েছিল। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি জেনারেল এরশাদকে নিয়ে চারদলীয় জোটও গঠন করেছিল। এছাড়াও বিএনপি বিভিন্ন সময় জেনারেল এরশাদকে সাথে রাখার চেষ্টা করেছে। বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল খান বলেছেন, “এটা দুর্ভাগ্য আমাদের। বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বের অন্যদেশের মতো এখানেও দুই দল দেখতে চায়। কিন্তু আমরা এই দুই দলই অনেককে সাথে নিয়ে তাদের বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিচ্ছি।” একইসাথে মি. খানও তাদের এমন অবস্থান নেয়ার জন্য দোষ চাপিয়েছেন আওয়ামী লীগের ওপর। “১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের ঐ সরকারের সময়ে আমাদের সবার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দিয়েছিল। আমাদের উপর আওয়ামী লীগের এ ধরনের নিপীড়নের কারণেই এরশাদ এবং জামায়াতকে নিয়ে আমরা চারদলীয় জোট করেছিলাম।” ভোটের রাজনীতি যখন প্রাধান্য পাচ্ছে, তখন প্রধান দুই দলের জোট গঠনের ক্ষেত্রে আদর্শের মিল বা নৈতিকতা কতটা কাজ করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি দুই দলই স্ব স্ব আদর্শ বহাল রেখে অন্য দলের সাথে ঐক্য করার দাবি করছে।

আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, তাদের দলের অবস্থান মেনে নিয়েই জাতীয় পার্টি জোটে এসেছে।

“আমরা আমাদের আদর্শ বা নৈতিকতা থেকে এক পাও সরে আসি নি। আমাদের যে আদর্শ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, এগুলো মেনে আমাদের সাথে কেউ এলে, সেখানে তো আপত্তির কোন কারণ নেই।”

দুই দলের কাছে সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের যে কদর রয়েছে, সেটা যে রাজনীতিতে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে, দল দু’টোর নেতারা অবশ্য তা স্বীকার করেন।

বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান মনে করেন, গণবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত কেউ যাতে রাজনীতিতে অবস্থান তৈরি করতে না পারে, সে ব্যাপারে দলগুলো থেকেই একটা চেষ্টা হওয়া প্রয়োজন।

এই চেষ্টাটা করবে কে, সেই প্রশ্নের জবাব কিন্তু মেলেনি।

লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ মনে করেন, আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির যে পরস্পরবিরোধী অবস্থান, তাতে এমন চেষ্টা সম্ভব নয়।

“এখন শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য রাজনীতি। আর এই রাজনীতিতে ক্ষমতায় যাওয়াটাই হচ্ছে মুখ্য। এখানে নৈতিকতা শুধু বক্তৃতা বিবৃতিতে।”

জেনারেল এরশাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জাতীয় পার্টির অন্য নেতারাও আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিতে রাজি নন।

তারা অবশ্য মনে করেন, ক্ষমতা ছাড়ার পর জেলে থেকেই ‘৯১ এর সংসদ নির্বাচনে জেনারেল এরশাদ নিজে ৫টিসহ তাদের দল ৩৫ আসন পেয়েছিল। সেটাকে ভিত্তি করে তাদের নেতা কৌশলে রাজনীতিতে তাদের অবস্থান করেছেন।

তবে এর সাথে একমত নন বিশ্লেষক অধ্যাপক রওনক জাহান।

“আসলে উনি নিজে কতটা প্রো-অ্যাকটিভভাবে এটা চালাচ্ছেন। নাকি দু’টো দলই তাকে নিয়ে খেলছে। যেহেতু তার বিরুদ্ধে অনেকগুলো কেইস ওনারা বাঁচিয়ে রেখেছেন।সেখানে উনি আসলে দুই দলের হাতে একটু ক্রীড়নক হয়ে আছেন।”

তবে জেনারেল এরশাদ যে প্রধান দুই দলের কাছে দর কষাকষির অবস্থানে এসেছেন, সেটাকে বিশ্লেষকদের অনেকে বাস্তবতা বলে মনে করেন।

আবার অনেকে মনে করেন, আগের তুলনায় আঞ্চলিক ভিত্তিতেও জাতীয় পার্টির জায়গাগুলোতেও তাদের আসন কমে আসছে, সেটা কিছুটা ইতিবাচক ইঙ্গিত হতে পারে।

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 1366 White Plains Road, Apt. 1J, The Bronx, New York-10462

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com