অবশেষে ব্যারিস্টার মইনুলও কী রাজনীতির বলি হলেন! এখন তসলিমা’র কী হবে?
নিউইয়র্ক থেকে ড ওমর ফারুক।
সর্বশেষ আপডেট-এর স্থানীয় সময়ঃ ২২ অক্টোবর ২০১৮ সময় সন্ধা সাতটা।
বুদ্ধিবৃত্তিক জগতে একজন ব্যক্তিকে কত ছোট মানের মনে করলে কেউ খোলাখুলিভাবে এমন অভিধা’য় অভিযুক্ত করে লিখতে পারে। লেখায় এমন সব নিম্নমানের শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং কোন রকম রাখ ঢাক ছাড়াই। বিশেষত দু’জনই ত একই লিঙ্গ ওএকই মতাদর্শের। এরপর যারা এ রকম পঁচা নর বা নারী বা উভলিঙ্গ, ল্যাবরেটরি রিপোর্ট ছাডা আমি কারও কথায় বিশ্বাস করব না, পক্ষে বিবৃতি দেয়, সমস্বরে কণ্ঠ মিলিয়ে গান গায়, তারা কী একটুও ভেবে দেখে না যে, তারা নিম্নমানের একটা অকৃতজ্ঞ ও ফেক ব্যক্তিকে সমর্থন দিয়ে তারাও নিম্ন স্তরে নেমে জাতিকে তাদের আসল পরিচয় জানান দিয়ে দিচ্ছে প্রকারান্তরে। তসলিমা নাসরিন সম্পর্কে যেটুকু জানি, তিনি নির্ভেজাল সত্য কথা বলে ফেলেন। সে এখন নয়, যখন তিনি স্বল্প পরিসরে পরিচিত ছিলেন মানুষের কাছে, তখনও। মেডিকেল কলেজে পডুয়া তিনি, যখন অল্প বিস্তর সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ছোট ছোট ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপনেই মূলত তার গরম শীতল বক্তব্য দিয়ে নিজ পরিচয় জানান দিতেন। এবং মাঝে মাঝে দু’চারটি কবিতাও ছাপা হত এখানে সেখানে।
অতএব সকলই বিষয়টি ভেবে দেখবেন, যখন আপনার মত আরেক জন বুদ্ধিজীবীকে এভাবে অন্যায় ভাবে হ্যানস্তা করা হয়। হয়ত তিনি আপনার মতাবলম্বী নয়।এক্ষেত্রে ভিন্ন মতাবলম্বী বড় কোন বিষয় নয়। বরং এ রকম দুষ্ষ্কৃতির স্বীকার এক মতাবলম্বী হয়ে আপনিও হতে পারেন। ব্যারিস্টার মইনুল কোন ভাবেই তাকে ব্যক্তিগত ভাবে দেষারোপ করে নি। চরিত্র নিয়ে দোষারোপ করার সুযোগ এ ডিজিটাল যুগে আদৌ আছে কিনা, সে প্রশ্ন করি, আমি বিনীত ভাবে সকলের কাছে? কার কাছে কোনটি চরিত্র ও অভ্যাস্ত জীবনের মানদণ্ড, সে ত ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্নতা লাভ করে। আমি কোন পেশাকে খাটো করে এ সময় অন্তত বলতে চাই না। সে না হয়, অন্য সময় বলা যাবে ক্ষণ! একজন পতিতাকে আপনি যদি চরিত্র নেই বলে গাল দেন, সে কী হাস্যস্পদ নয়? আমি কিন্তু কোন ভাবেই বলি নি যে, সেই মানুষটি এরকম। আমি একটা উদাহরণ দিলাম মাত্র। সে কী, সে জানে আর তাকে, আমাকে এবং সকলকে যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি জানেন। মইনুল সাহেবের সাথে আমারও যে কোন কোন বিষয়ে মতের ভিন্নতা একদমই নেই, তা কিন্তু নয়। বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যোগ দেওয়া সমর্থন দেওয়া। তিনি নীতি নৈতিকতার সুউচ্চ মাপকাঠি প্রকাশ করেছেন ত সে সময়ই, সেটি ত ইতিহাস স্মরণ করবে আজীবন। সমস্ত ভয় ভীতি ও লোভ লালসার উর্দ্ধে উঠে ১৯৭৪ সালে একদলীয় ফ্যাসিবাদী শাসনের সময়টাতে তিনি বাকশালে যোগদান করেন নি।
মানুষের জীবন ত এক জায়গায় থেমে থাকে না। এটিও আঁকাবাঁকা নদীর মত নানান প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এগিয়ে যায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনিও হয়ত কিছু রাজনীতিবিদদের ওপর আস্থা হারিয়ে থাকতে পারেন।তিনি যখন মাসুদাকে চরিত্রহীন বলছিলেন, তখন কিন্তু আলোচনা হচ্ছিল পেশাগত বিষয় নিয়ে। মইনুল সাহেবের সাথে আলোচনাই হওয়ার কথা রাজনীতি নিয়ে।সে সময় মাসুদা’ নামের এ নারী, যিনি সাংবাদিক বলেই পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্চন্দ বোধ করেন বলে মনে হয়, তিনি কোন প্রমাণ ছাড়া অনেকটা বাল্যখিল্য আচরণে ব্যারিস্টার মইনুলকে যখন জামায়াতকে নিয়ে আক্রমণ করলেন অযাচিত ভাবে এবং এ রকম আন্দাজে কাউকে বলা কোনক্রমেই একজন সাংবাদিকের নীতিমালার মধ্যে ত পড়েই না, বরং সে রকম সাংবাদিক পরিচয় দানকারী’র জ্ঞান ও পরিপক্কতার মেচুরিটি নিয়ে প্রশ্ন এসে যায়। সে পরিস্হিতিত মইনুল সাহেব মেজাজের খেই হারিয়ে ফেলা অস্বাভাবিক নয়। কেননা তিনি হয়ত তৎক্ষনাত এমন ধরনের অভিযুক্ত হবার চিন্তা মাথাতেই রাখেন নি। হতচকিত হয়ে দিয়ে যা হয়, যা বলা হয়, তেমনটি ঘটেছে হয়ত। তারপরও তিনি যে মসুদা’কে চরিত্রহীন বললেন, সে নিছক পেশাগত চরিত্রই বুঝাতে চেয়েছেন। যেহেতু আলোচনা ত পেশাগত বিষয় নিয়েই, যা হর হামেশাই রাজনীতির ময়দানে এবং অন্য সব সেক্টরে একজন আরেকজনকে অভিযুক্ত করার রেওয়াজ শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর তাবৎ দেশেই চলে আসছে। কিন্তু সেটিকে টেনে এনে নিজের চরিত্রের প্রকাশ নিজে ঘটিয়ে বাজার পাবার নজির পৃথিবীতে কমই আছে। আমি যখন এ লেখা লিখতে শুরু করি, তখনও ব্যারিস্টার মইনুল গ্রেফতার হন নি। পরে ত তিনি গ্রেফতারও হলেন। কিন্তু এখন তসলিমা নাসরিনের কী হবে, সেটিও দেখার বিষয়।
ইতোমধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেছে। মাসুদা যে তার নামের সাথে টাইটেল ‘ভাট্টি’ ব্যবহার করে, সেও আরও বড় দুই নম্বরির গল্প সেখানে। স্বল্পকালীন একত্রে বসবাস হওয়ার পরই সে ঘর ভেঙ্গে যায়। কিন্তু ব্রিটেন হোম অফিসে এখনও মাসুদা’র নামের সাথে সেই ভাট্টি টাইটেল র্সংযুক্ত আছে। সে টাইটেল প্রমাণ করার জন্য মাসুদা তখন তার কর্মস্থল ‘সাপ্তাহিক পত্রিকা’র মালিক ও সম্পাদক ছাড়াও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের প্রত্যয়ন পত্র নিয়ে তারপর সে ’ভাট্টি’ টাইটেল নামের সাথে হোম অফিসে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়েছে। এখনও ব্রিটিশ হোম অফিসে খবর নিলে সে বিষয়টি সম্পর্কে অফিসিয়ালি নিশ্চিত হওয়া যেতেই পারে। বিষয়টি লন্ডন থেকে একজন সাংবাদিক ও লেখক আমাকে জানিয়েছে।[আরও আপডেট হবে ইন শা আল্লাহ।]