স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ প্রমাণ করতে আদালতে কালেমা পাঠ

স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণের বিষয়টি প্রমাণ করতে পাকিস্তান হাইকোটের বিচারপতির সামনে কালেমা পাঠ করলেন এক হিন্দু তরুণী।মেয়েটির পরিবারের দাবি, তাকে অপহরণের পর একজন মুসলিম যুবককে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং তাকে জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে। পরিবারের এমন দাবিকে মিথ্যে প্রমাণ করতে শনিবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত আজিজ সিদ্দিকীর সম্মুখে মেয়েটি কালেমা পাঠ করেন।২১ বছর বয়সী মারিয়া আদালতকে জানায় যে, তিনি নিজের ইচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য তাকে কেউ চাপ দেয়নি। পরে তিনি তার নতুন গৃহীত বিশ্বাস প্রমাণ করার জন্য আদালতে কালেমা পড়তে শুরু করেন।এসময় মেয়েটির চাচা কিশান লাল মেয়েটিকে ‘দারুল আমানের’ হেফাজতে পাঠাতে আদালতকে অনুরোধ করেন। সেখানে মেয়েটির সঙ্গে তার বাবা-মায়ের একটি বৈঠকের পর তার জবানবন্দি রেকর্ড করার অনুরোধ জানান তিনি।পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুদের অবস্থার কথা উল্লেখ করে আদালতকে কিশান লাল বলেন, ‘হাজার হাজার হিন্দু পাকিস্তানে বসবাস করছে। তাদের মেয়েদের অপহরণ করা হচ্ছে এবং ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে যা ‘অন্যায়’ এবং এই বিষয়টির একটি বিহিত করা উচিত।’তিনি আরো বলেন, ‘আমরাও পাকিস্তানি। আমাদেরও ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার আছে।’জবাবে বিচারপতি সিদ্দিকী বলেন, ‘আইনের চোখে সকল ধর্মের নাগরিক সমান।’ ‘অনার কিলিংয়ের’ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ইসলাম গ্রহণ করার জন্য একজন মেয়েকে হত্যা করা উচিত নয় এবং বিয়ের বিষয়ে মেয়েদের ইচ্ছার মূল্য দেয়া উচিৎ।’বাবা-মার সঙ্গে একটি বৈঠকের জন্য অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সিদ্দিকী আগামী ২৫ আগস্ট পরবর্তী শুনানির দিনে মেয়েটি এবং তার বাবা-মায়ের মধ্যে একটি বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। এই সময় পর্যন্ত মেয়েটি ও তার স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।আগের শুনানিতে আদালত তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী বিবাহের ব্যবস্থা করতে ইসলামাবাদের ইন্সপেক্টর জেনারেলকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তাদের পুলিশি পাহারায় ১৮ আগস্ট আদালতে হাজির করতেও নির্দেশ দেয়া হয়।নিজেদের ইচ্ছায় বিয়ে করা এই দম্পতির জীবন রক্ষা করার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তা ব্যাখ্যা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন জাস্টিস সিদ্দিকী।
সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন