ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ও বিরোধীদলের প্রতি সরকারের অভিযোগ প্রসঙ্গে।

August 3, 2018 11:13 pm0 commentsViews: 12
।।নিউইয়র্ক থেকে ড ওমর ফারুক এবং
তুরস্ক থেকে মুহম্মদ রাজীব খাজা।।
বিরোধীদল বাংলাদেশে এমনই কোন ঠাসা যে, তাদের হাবভাব ধরন ধারণ দেখলে মনে হয়, তারা পারে না যে, অন্য গ্রহে গিয়ে বসবাস করে। থাক ত আবার জনগণের ইস্যু নিয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সময়ের প্রয়োজনে গড়ে ওঠা গণ রোষে তারা সম্পৃক্ত হয়ে সে ন্যায্য দাবী আদায়ের আন্দোলনকে বেগবান করবে। বিরোধীদলকে এরপরও এ সব আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আছে বলে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছ থেকে তীব্র হুঙ্কার শুনতে হয়। এটা আমি বুঝি, কেন করে! কারণ একাধিক।  বিরোধীদলকে সম্পৃক্ত করে সেটি দমন করতে গিয়ে চরম সহিংস কর্মকাণ্ড চালানো সহজ হয়। কেউ সহিংসতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে বলা যাবে, সরকার অবৈধ হলেও এখনও যেহেতু চেয়ার জোর করে দখল করে আছে, বিরোধীদল কেন পাকা ধানে মই দিতে আসল।
হ্যাঁ যখনই জনগণের কোন ইস্যু নিয়ে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদী হয়ে রাস্তায় নামে। সরকার তার পুলিশ, RAB, বি, জি এন্ড বি (বিজিবি) এবং সরকারের নিজস্ব মিলিশিয়া বাহিনী দিয়ে দমন। আওয়ামীলীগের অনেক নেতাকর্মী, মন্ত্রী মিনিস্টার এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যখনই এ রকম পরিস্থিতির সম্মূখীন হন, বলে বেড়ান  এটা জামায়াত শিবির ও বিএনপি উস্কানি দিচ্ছে।
আমি তো মনে করি, বিএনিপি, জামাত শিবির উস্কানি তো দিতে আসেই না, বরং তাদের হাবভাবে মনে হয়, বিরক্তির কারণই তো ঘটালো দেখি, এতদিন তো কোন রকম বাসা বাড়িতে থাকতে পারতাম, এখন তো গ্রেফতার, হামলা, মামলা এবং এমনকি গুম ও খুনের শিকারও হতে হবে। সরকার  এটা হইল, খুব ধুরন্ধর। তারা আগে আক্রমণের নীতিতে বিশ্বাসী। ফলে কী দাঁড়ায়, বিএনপি ও জামায়াত এ রকম পরিস্থিতিতে দোয়া কালাম ও পড়তে থাকে। তারা শুধু নিভৃতে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতে থাকে, আল্লাহ এ আবার কোন ঝামেলায় পড়লাম। আমরা তো জান বাাঁচানো ফরজ মনে করে দিন কাটাচ্ছিলাম। এখন এ রকম কোটা সংস্কার আন্দোলন, আবার এ ছোট ছোট বাচ্চাগুলো ।
আমি মনে করি, এ সবই প্রপাগান্ডা করে বিরোধীদলকে আরও কোনঠাসা করে রাখার প্রয়াস। এমনিতেই গর্তে লুকিয়ে থাকা বিরোধীদল নিজেদের রক্ষায় ব্যস্ত। এরপর আবার এমন অভিযোগ দিলেই তো তাদের অবস্থা হল, ”মরার ওপর খাড়ার ঘা।” অথচ যুগ যুগ ধরে তো এমনই দেখে আসছি, জনগণের ইস্যু নিয়েই তো বিরোধীদল মাঠে বেশি নামে। সরব হয়। সরকার হটানোর আন্দোলন হলেও বা দোষের কিছু নয় তো। গণতান্ত্রিক কাঠামোতে এমন আন্দোলন তো অযৌক্তিক কিছুও নয়।জনগণের সমস্যা সুরাহা করতে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে সরকার তো নিজ থেকেই পদত্যাগ করে। সে তো লজ্জা শরমের বালাই নেই, এমন সেব দেশের শাসকরা করেই না। বিরোধীদল যদি তা করে, তাতে সমস্যা কি? আওয়ামী লীগ এমন পরিস্থিতিতে কী করত? কত আগে বিএনপি বা অন্য যে কোন সরকারকে ফেলে দিত। জনগণের সমস্যা নিয়ে যদি বিরোধীদল রাজপথে না আসে, তাহলে বিরোধীদল থাকারই বা দরকার কি? একদলীয় শাসনব্যবস্থার কাঠামোর সরকারেই তো তাহলে দেশ চলে বুঝতে হবে।

 এবার দেখি ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা সেগুলো আসলে কীঃ

১. বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই বিধান সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।
২. নৌপরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না।
৪. বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
৫. শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভারব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৬. প্রত্যেক সড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্পিডব্রেকার দিতে হবে।
৭. সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্রছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।
৮. শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে থামিয়ে তাদের নিতে হবে।
৯. শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এগুলোর কোনটিই তো অযৌক্তিক দাবী নয়। সরকার পালানোর কথা কোনটিতে নেই। তাহলে সরকার যে বিরোধীদলের ওপর অনাহুত আক্রমণ করে অনর্গল বকবক করে যাচ্ছে, এর কোন হেতু কি আছে? নেই।

আমরা এমন দেশের নাগরিক। আর তিনি এমন দেশের প্রধানমন্ত্রী, যে দেশের কাজ কারবার চলছে এভাবেঃ

 খোদ আপনার দপ্তরের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ বিচারপতির গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ মন্ত্রীদের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ এমপিদের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ নির্বাচন কমিশনের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ দুদুকের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ ডিআইজির গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ বিজিবির গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।
 খোদ সাংবাদিকের গাড়ির লাইসেন্স নাই ।

পাবলিকের তো নাই ই একমাত্র দেশের গর্বিত সন্তান সেনাবাহিনী ছাড়া কারোরই লাইসেন্স এবং গাড়ীর কাগজ নাই। আপনিই বলুন এই দেশ কে আপনি কিভাবে উন্নত দেশের সাথে তুলনা করেন? আপনিই বলুন এই দেশের গন্তব্য কোথায়?

তারপর উল্টোপথে গাড়ি চালিয়ে যাওয়াতে অনেক মন্ত্রী, সচিব, পুলিশ, মিডিয়া কর্মী এবং খোদ প্রধানমন্ত্রীই যেখানে আছে, যেখানে বড় বড় কথা বলার সুযোগ একদমই নেই।

অথচ আপনারাই আবার যখন মুখ ভেঙ্গচিয়ে, দাঁত কেলিয়ে নিয়ম-নীতি, আইন-আদালতের কথা শুনান তখন আসলে ঘেন্না ধরে যায়।

ছাত্র সমাজ শুধু একটি মাত্র সেক্টরে “নিরাপদ সড়কের দাবী” তুলে আপনি থেকে টেক্সি চালক পর্যন্ত সবার মুখোশ খুলে দিয়েছে যদি পালের হাওয়ায় জনগণ এবং বিরোধীদল তাল দেয় এবং প্রতিটা সেক্টর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে তাহলে কিন্তু আর শেষ রক্ষা হবেনা।

এতএব আশাকরি এগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত সকল সরকারি বেসরকারি সেক্টর কে দুর্নীতিমুক্ত করে আমাদের মান সম্মান ইজ্জত কে রক্ষা করবেন। প্রবাসে যখন মানুষ দেশের এ সব দুর্নীতির কথা জিজ্ঞেস করে তখন বোবা হয়ে যাই কারণ এছাড়া যে আর কোন পথ নাই।

 

Image may contain: outdoor and text

 

 

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com