ইন্সপেক্টর মামুনকে যে কারণে খুন করে পোড়ানো হয়

July 19, 2018 10:12 pm0 commentsViews: 64

[স্বল্প পরিচয়ে কেউ দাওয়াত দিলেই কোন অনুষ্ঠানে যাবেন না। কোন আহবানে সাড়া দেবেন না।]

পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি) পরিদর্শক পদে কর্মরত মামুন ইমরান খানকে (৩৪) হত্যার কোন পরিকল্পনা ছিল না খুনিদের। তারা মূলতঃ মামুনের বন্ধু রহমত উল্লাহকে ব্লাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা আদায় করতে চেয়েছিল। কিন্তু রহমতের সাথে মামুন সেখানে যাওয়ায় সে পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। মামুন নিজেকে পুলিশের কর্মকর্তা পরচিয় দিলে তারা বিপদে পড়ার ভয়েই তাকে মারধরের পর হত্যা করে এবং পরদিন সকালের দিকে মাইক্রোবাসে করে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানা এলাকায়  লাশটি একটি জঙ্গলে ফেলে দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ১৯ জুলাই, বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম-কমিশনার আব্দুল বাতেন।

এর আগে বুধবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বাড্ডা ও হাজারীবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৪ জনকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেফতারকৃতরা হলেনঃ মিজান শেখ, মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা ওরফে আফরিন ওরফে আন্নাফি, সুরাইয়া আক্তার ওরফে কেয়া, ফারিয়া বিনতে মীম।

যেভাবে খুন হন ইন্সপেক্টর মামুনঃ ডিবির যুগ্ম-কমিশনার আব্দুল বাতেন জানান, এসবির পরিদর্শক মামুন ইমরান খান মাঝে-মধ্যে টেলিভিশনের বিভিন্ন ক্রাইম সিরিয়ালে অভিনয় করতেন। সেই সূত্রে ৪-৫ বছর ধরে রহমত উল্লাহ নামে এক ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল। রহমত উল্লাহর পরিচিত মেহেরুন্নেছা স্বর্ণা ওরফে আফরিন ওরফে আন্নাফিও তাদের সঙ্গে বিভিন্ন সময় অভিনয় করেছেন। রহমত উল্লাহর সঙ্গে আফরিনের মাঝে মধ্যে সেই সুবাদে যোগাযোগ হত। সেই সূত্রে গত ৮ জুলাই আফরিন রহমত উল্লাকে তার বাসায় জন্মদিনের দাওয়াত দেন।

রহমত উল্লাহ ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে পুলিশ বন্ধু মামুনকেও যাওয়ার অনুরোধ করেন। আর সেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েই খুন হন পুলিশ কর্মকর্তা মামুন। আব্দুল বাতেন আরো জানান, ঘটনার দিন রহমত উল্লাহ তার গাড়ি নিয়ে আফরিনের ঠিকানা অনুযায়ী বনানীর বাসায় যান এবং মামুন মোটর সাইকেল নিয়ে ওই বাসায় যান। এর কিছুক্ষণ পর স্বপন, মিজান, দিদার, আতিক বাসায় ঢুকে তারা অপকর্মে লিপ্ত বলে অভিযোগ করে। তখন মামুন নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে রহমত উল্লাহ ও মামুনকে বেঁধে মারধর শুরু করে।

তিনি বলেন, রহমত উল্লাহকে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করা তাদের টার্গেট ছিল। কিন্তু মামুন নিজেকে পুলিশ পরিচয় দেওয়ায় তাদের টার্গেট মামুনের দিকে চলে যায়। মারধরের এক পর্যায়ে মধ্যরাতে মামুন মারা যায়। এতে তারা চিন্তিত হয়ে পড়ে এবং রহমত উল্লাহর বাঁধন খুলে দেয়। তখন রহমত উল্লাহ মামুনকে ডেকে এনেছে বলে সে ফেঁসে যাবে ভেবে রহমত উল্লাহও তাদের সঙ্গে মিলে যায়।

যেভাবে লাশ গুমের চেষ্টা করে খুনিরাঃ পরদিন সকালে মামুনের লাশ বস্তায় করে তারা রহমত উল্লাহর গাড়িতে উঠায়। এদের মধ্যে স্বপন, দিদার ও আতিক সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে। তারা গাড়ি নিয়ে রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্টে যায় এবং খাওয়া-দাওয়া করে। মিজান লাশটি পুড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনা করে এবং ক্যান্টনমেন্টের একটি পাম্প থেকে পেট্রোল কেনে।

সন্ধ্যার দিকে তারা গাড়ি নিয়ে কালীগঞ্জের দিকে যায়। এরপর জঙ্গলে লাশ নামিয়ে পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে তারা রহমত উল্লাহকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেন। ১০ জুলাই বাসায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই রহমত উল্লাহকে গ্রেফতার করে ডিবি। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার তিন নারীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, তারা বনানীর ওই বাসাটি দুই মাস আগে ভাড়া নিয়েছিল। মানুষকে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করাই তাদের লক্ষ্য ছিল। আর তাদের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন রবিউল। ওই বাসাটি ভাড়া নিয়েছিল নজরুল নামের একজন। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নজরুলের সম্পৃক্ততা কেউ স্বীকার করে নি। এ ঘটনায় জড়িত অন্তত আরও চারজনের বিস্তারিত নাম পরিচয় পাওয়া গেছে এবং যাদেরকে খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা সম্ভব বলে আশা প্রকাশ করেন ডিবির ঊর্দ্ধতন এই কর্মকর্তা। সূত্রঃ বিডিট্রিবিউন

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com