দেশে এখন শুধু এ রকম লুটতরাজের খবরই। জলে গেল ১৫৭কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সংস্কার ও আধুনিকায়ন করতে ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় ১২২ কোটি ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই বছরই ঠিকাদার নিয়োগ করতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা এন্টারপ্রাইজ ও ম্যাকস্ ইন্টারন্যাশনাল। এ ছাড়া কাজের মান তদারকি করতে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (উন্নয়ন) হারুন-অর-রশিদকে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) নিয়োগ করে। পাঁচটি প্যাকেজে ভাগ করে কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ ছাউনির পুরনো টিন পরিবর্তন করে নতুন টিন লাগানো, স্কাই লাইট স্থাপন, পুরনো যন্ত্রাংশের স্থলে নতুন যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন, কারখানার অভ্যন্তরে রেললাইন সংস্কারকরণসহ অন্যান্য কনস্ট্রাকশন কাজ। প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল ২০১২ সালের জুন মাসে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করা হয়। এর পরও কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধিসহ ব্যয়ে সংশোধনী এনে আরও ৩৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে চূড়ান্ত ক্ষণ নির্ধারণ করা হয় ২০১৫ সালের জুন মাস। অর্থাৎ সব মিলে ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৫৭ কোটি টাকা। এ সময়ে পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে চারটি প্যাকেজের কাজ শেষ হয় জুনের পরিবর্তে ডিসেম্বর মাসে। অবশিষ্ট একটি প্যাকেজের কাজ শেষ করতে সময় লাগে ২০১৬ সালের জুলাই মাস। ফলে সংস্কারকাজের শেষ বছরেই বর্ষাকালে টিনের ছাউনি ও গার্ডার দিয়ে অঝোরে পানি পড়া শুরু হয়। এতে করে নতুন প্রতিস্থাপিত যন্ত্রাংশগুলোতে মরিচা ধরতে শুরু করেছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে স্কাই লাইট। এ অবস্থায় কারখানা সচল রাখতে চলতি বছরেও আরও এক কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। শ্রমিক-কর্মচারীদের অভিযোগ, কাজে অনিয়ম ও নিম্নমানের টিন ব্যবহার করায় লোকসান খাত বাড়ছে রেলওয়ের।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) মুহাম্মদ কুদরত-ই-খুদা জানান, বিষয়টির ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালকই বলতে পারবেন। প্রকল্প পরিচালক ও প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (উন্নয়ন) হারুন-অর-রশিদ নিম্নমানের টিন ও উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেন।