বাংলাদেশের নিরাপত্তাহীন জনগণ। সমাধান জানা নেই।

July 6, 2018 8:28 pm0 commentsViews: 26
নিউইয়র্ক থেকে ড ওমর ফারুক।
স্থানীয় সময়ঃ ৬ জুলাই ২০১৮, বিকেল সাড়ে সাতটা।
 
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালে সরকারে থেকে নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখেছিল কিন্তু দেড় মাসের বেশি টিকতে পারে নি। এদিকে ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে প্রায় ৫ বছর ধরে অবিচল আস্থার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে এভাবে কি হাসিনা এভাবে শেষাবধি ২০৪১সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় নিরংকুশ আধিপত্য বিরাজ করে এভাবে দুমড়ে মুছড়ে এ জনপদ শাসন করে যেতে পারবেন? তিনি যে খালেদা্র মত দু তিন মাসের মাথায় ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিলেন না। উপরিউন্তু কি কাজ করলে ক্ষমতায় একক আধিপত্য লাভ করে নির্বিকভাবে দেশ শাসন করে যাওয়া যাবে। তিনি বিগত ৫ বছর ধরে সেভাবেই চালিয়ে এসেছেন। তার ক্ষমতায় থাকা নির্বিগ্ন করতে তিনি ভারতকে যত কিছু দেবার সব দিতেও কুণ্ঠিত হন নি। এ কথা তিনি নিজ মুখে বলেছেন।
২০২০-২১ বর্ষটি তিনি ’মুজিব বর্ষ’ হিসেবে পালনের ঘোষণাও দিলেন।
আমাকে অনেকই বলছেন যে, এভাবে জাতি আবার কখন মুজিব কন্যার বর্ষ পালন করতে সমর্থ হবে। জাতি কি সৌভাগ্য কোনদিন লাভ করতে পারবে? আমি কিছু বলতে পারি না। এসবই শুনে থাকতে হয়। ফেসবুক বন্ধুরা টাইম লাইনে না এসে আমাকে শুধু ইনবক্সে এসব বলে পাঠায়। আমি জানি না, তাদের এত আস্থা কেন যে, আমি সুচিন্তিত উত্তর দিতে পারব।
 
তবে খালেদার সে নির্বাচনের সময় আমি দেশে ছিলাম না। তখন আমি কুয়ালালুমপুর বসবাস করি। যতটুকু জেনেছি, সে নির্বাচনে বিএনপি ও বিএনপি প্রধান খুব লজ্জিত হয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ প্রধানসহ আওয়ামী লীগ নেতা ও কর্মীদের একচিট বড় সুবিধা হল, তাদের কোন লজ্জা নেই। লজ্জা না থাকলে অনেক সুবিধা। কে কি বলল, সে গায়ে না মাখলে সবই করা যায়। বিগত দিনগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা শুনলে যে কোন নাগরিক বুঝবে, দিগম্বর হয়ে সারলে আর অন্য লজ্জা কোনটিই লজ্জা নয়। এই কোট সংস্কর আন্দোলন শিক্ষার্থীদের ওপর নাকি জামাত শিবির হামলা করেছে, ছাত্রলীঘ করে নি। এমন কথা বলছে, নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এরকম আরও কত কথা। সেসব ফালতু কথা নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশ করলে সে গ্রন্থ বিশাল ভলিউমের হবে।
 
খালেদার শেষে একটু লজ্জা লাগছিল, কারণ তিনি শেষাবধি লজ্জা বুঝেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বেশ সাহসের সঙ্গে বীরত্ব দেখিয়ে নির্বাচন করেছিলেন বিএনপি প্রধান কিন্তু পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের দুর্বার আন্দোলন, বিদেশী চাপ, রাজনীতিবিদ ও সুশীল সমাজের সমালোচনা ও সাধারণ জনগণের অনীহার কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
 
তবে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বিদেশী চাপ, আলোচনা-সমালোচনা, জনগণ চাইছে কি, চাইছে না কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে বীরের মত ক্ষমতায় রয়েছেন। এখন প্রশ্ন হল, এভাবে আসলেই কি ক্ষমতায় থাকা যায়? না, হাসিনা বুঝিয়ে দিলেন যে, লজ্জা না থাকলে আর কোন বড় দেশ যদি পাশে থাকে এবং জনগণের কোন কল্যাণ ও অকল্যাণ, মানবাধিকার এসব কছিুতেই তোয়াক্কা করা যাবে না, তাহলে থাকা যায়। অবশ্য অনেকই আবার বলছে, শেখ হাসিনা হয়ত দিতে দিতে এখন এমন হয়েছে, বাঘের পিঠে উঠে আর নামতে পারছেন না।
 
আমার জানা মতে, এরশাদ, খালেদা জিয়াসহ পৃথিবীর ইতিহাসে কোন সরকারই দমন-পীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারেন নি। আর বাংলাদেশে তো পারবেই না। কারণ ৩০ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময় পাওয়া এই বাংলার মানুষ আর যাই, সহ্য করুক না কেন? কোন অন্যায় সহ্য করবে না। এর প্রমাণ ১৯৭১ সালেই বাঙালী দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো এরশাদ, খালেদা পারেন নি। শেখ হাসিনা কি পারবেন, আর পারলেও তা কত দিন?
 
আমার সাধারণ জ্ঞান মতে, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার চেয়ে শেখ হাসিনা একটু বেশিই পারবেন। কারণ, রাজনৈতিক জ্ঞান ও শক্তির দিক থেকে আওয়ামী লীগের সামনে বাংলাদেশে কেউ নেই। এর প্রমাণ তো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমেই দিয়ে গেছেন।
 
তবে কে কত দিন ক্ষমতায় ছিল, আছে, থাকবে? সে নিয়ে আমার মাথা ব্যথা আগে কখনও ছিল না। কেননা আমি রাজনীতিক দলগুলোর ওপর বরাবরই বীতশ্রদ্ধ। যে কথা বলে, সে অনুযায়ী কাজ করে না। তবে একজন মানুষ হিসেবে খুবই খারাপ লাগছে এজন্যে, স্বাধীন দেশে জম্ম নিয়ে যদি দেশের সর্বত্র শোনা যায়- আমি আসলে কি করব, একটা ব্যবসাও শুরু করতে পারছি না।, জনজীবনে অশান্তি, দুর্বিসহ জীবন, কোন কিছুতেই নিরাপত্তা নেই। কোন সময় কে খুন হয় কেউ জানে না। কি পুলিশ মারে, না র‌্যাব মারে, না সরকার দলের কেউ মারে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের হাতে চলে এসেছে নতুন হাতিয়ার, হাতুড়ি। এ হাতুড়ির আঘাতের ভয় এখন দেশের নাগরিকদের মনে শক্ত করে গেঁড়ে বসেছে। দেশে কি হবে, কোন সময় এ সরকার চলে যাবে, দেশ কি আবার কে ক্ষমতার বিনিময়ে ভারেতের হাতে তুলে দিয়েছে একেবারেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল বলল, দেশে নাকি ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী কাজ করছে। তাহলে এখন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের শেষ গন্তব্য কোথায়। পথ জানা নেই। সব কিছুতে এরকম নিরাপত্তা হীনাতা সত্যিই আমাদের জন্য খুবই কষ্টদ্বায়ক, দুর্ভাগ্যজনক এবং লজ্জাজনক।

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com