ব্যাংকিং খাত বিষফোঁড়া।।

June 24, 2018 11:46 pm0 commentsViews: 27
জাফর আহমদ 
ব্যাংকিং খাত বিষফোঁড়া

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী এবং বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ব্যাংক মালিকরা গর্ভনরকে হোটেলে দাওয়াত দিয়ে সিএসআর (ব্যাংকের বিধিবদ্ধ জমা) কমিয়ে নিয়েছে।

অন্যদিকে, অর্থপ্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা দিতে চাইলেও কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত চাওয়ার কারণে তা নিতে চান না। চাকরি শেষে বাড়তি সুযোগ নেওয়ার কারণে প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতাকে খর্ব করা হয়। গতকাল রোববার রাজধানীর হোটেল লেকশোর-এ সিপিডির বাজেট ২০১৮-১৯ পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে তারা এ কথা বলেন।

সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তাফা কামাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ব্যাংকিং খাত অর্থনীতির জন্য বিষফোঁড়া হয়ে গেছে। একদিকে দুর্নীতি, অনিয়ম; অন্যদিকে খেলাপি ঋণের দৌরাত্ম্য অর্থনীতির সব অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। খেলাপি ঋণের সংস্কৃতি সরকারগুলোর ধারাবাহিক ফল বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহম মুস্তাফা কামাল বলেন, চলমান উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে সরকার সর্বোচ্চ জনকল্যাণমুখী বাজেট প্রণয়ন করেছে। এ বাজেট প্রবৃদ্ধিমুখী, দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানমুখী। বাজেটে বছর মেয়াদের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ভিশন রয়েছে। এ বাজেটের লক্ষ্য হলো ২০২১ সালে দেশকে মধ্যম আয়, ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন ও ২০৪০ সালের দেশে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যাওয়া। সে লক্ষেই সরকার পদ্মা সেতুসহ বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন; মাতারবাড়ি, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প; ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা এবং তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

ব্যাংকিং খাতে সংগঠিত অনিয়ম সম্পর্কে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দোষী কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ফারমার্স ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের দোষী কর্মকর্তাদের অনিয়মের দায়ে জেলে ঢোকানো হয়েছে। কমিশন গঠন করে যারা ভালো তাদের সম্মানিত করা হবে। আর যারা খারাপ তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ না থাকা ও রপ্তানির পরিমাণ বেশি না হওয়ার কারণে দেশে কাঙ্খিত বিদেশি বিনিয়োগ আসছে না। আগের সরকার গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি খাতকেই অবহেলা করেছে। আগের সরকরের বিদ্যুতের খাম্বায় (খুঁটি) বিদ্যুতের বদলে হাম্বা (গরু) বাঁধা ছিল। তথ্যপ্রযুক্তিকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে মুষ্টিমেয় মানুষের কাছে কুক্ষিগত করে রেখেছিল। এসব কারণে একদিকে যুবশক্তিকে কাজে লাগানো যায়নি; অন্যদিকে বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি। বর্তমান সরকার পুরো অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রেখেছে।

এমএ মান্নান বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, নারী উন্নয়ন, অবকাঠামোসহ সব খাতে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে সরকার। বিএনপি সরকারের আমলে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪০ শতাংশ। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ২৪ শতাংশে। তারই ধারাবাহিকতায় নিম্নমধ্য আয়ের দেশ থেকে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ।

বাজেটকে ‘খিচুড়ি’র সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, বাজেটের আগে বিভিন্ন অংশীজন হাজারো প্রস্তাব দিয়েছে। তাই এককভাবে বাজেটে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের চাওয়া-পাওয়া মিলবে না। বাজেট সামষ্টিক মানুষের চাওয়া-পাওয়ার প্রতিফলন পাওয়া যাবে। তাই বাজেটকে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভালো নাও লাগতে পারে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দেশের পাঁচ শতাংশ মানুষ সম্পদ লুট করেছে। মেগা প্রকল্প, শেয়ার বাজার-ব্যাংক লুট নামে টাকা হাতিয়ে তারা বিদেশে পাচার করেছে। কানাডা, লন্ডন আর মালয়েশিয়া এ সব মানুষের ঠিকানা। এনবিআর এসব লোককে ধরার ব্যবস্থা করলে রাজস্ব বাড়বে।

তিনি বলেন, সরকার ভোটে নির্বাচিত হয় না। তাই বাজেট প্রণয়নে জনগণকে তুষ্ট করার চিন্তা করতে হয় না। মানব সম্পদ উন্নয়নে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব ক্ষেত্রে অরাজকতা চলছে। সূত্রঃ পরিবর্তন

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com