মুসলিম বিশ্বে ঈদুল ফিতরের দিনে জনপ্রিয় কিছু খাবার।।
একমাস রোজার শেষে মুসলিমরা ঈদ উদযাপন করছেন। সৌদি আরব এবং ইউরোপে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে শুক্রবার। বাংলাদেশসহ অন্য অনেক দেশে ঈদ হবে শনিবার।
ঈদ মানেই উৎসব। আর এই উৎসবের প্রধান উপকরণ খাওয়া-দাওয়া। প্রচুর খাওয়া দাওয়া। প্রধান খাবারের সাথে থাকে নানারকম মিষ্টি। বিশ্বের নানা প্রান্তের কিছু জনপ্রিয় ঈদের ডিশ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া গেল।
দক্ষিণ এশিয়া – সেমাইঃ
বাংলাদেশ সহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে ঈদুল ফিতরের দিনে সেমাই সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার। এটি চাল বা গমের সরু নুডলস।
শুধু ঘি, চিনি এবং সুগন্ধি দিয়েও এটি রান্না করা যায়। আবার যখন ঘন দুধ দিয়ে রান্না করা হয়, তখন সেমাইকে অনেক জায়গায়, বিশেষত পাকিস্তানে, এটি শির খুরমা নামে পরিচিত।
রাশিয়া- মানতিঃ
রাশিয়ার জনসংখ্যার কমপক্ষে ১৫ শতাংশ মুসলিম।
ঈদের দিনে তাদের অনেকের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার – মানতি। এটি এক ধরণের ডাম্পলিং বা পুলি পিঠা। মাখানো আটার ভেতর ভেড়া বা গরুর মাংসের কিমার পুর দিয়ে তা ভাপানো হয়। পরিবেশন করা হয় মাখন এবং সাওয়ার ক্রিম দিয়ে।
রাশিয়ায় অঞ্চল ভেদে মানতির রেসিপি একেক রকম। কিন্তু যদি বলা হয় রাশিয়ায় ঈদের দিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার কী? উত্তর হবে -মানতি।
চীন- শানজিঃ
চীনে মুসলিমের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি ৩০ লাখের মত। তাদের সিংহভাগের কাছে ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার -শানজি।
ময়দার লেই দিয়ে মোটা করে নুডলস বানিয়ে তা ডুবো তেলে কড়া করে ভাজা হয়। তারপর তা পিরামিডের মত করে সাজিয়ে পরিবেশন করা হয়।
চীনের মুসলিম অধ্যুষিত শিনজিয়াং প্রদেশে উইগুর মুসলিমদের খুবই জনপ্রিয় খাবার এটি। ঈদের আগে তাদের দোকানে ঢুকলে মুচমুচে শানজির দেখা মিলবেই।
মধ্যপ্রাচ্যঃ মাখন দিয়ে তৈরি কুকি বা বিস্কিট
পুরু বিস্কিটের মধ্যে খেজুরের পেস্ট অথবা আখরোট বা পেস্তা বাদামের পুর দিয়ে ওপরে হাল্কা চিনির গুড়া ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
পুরো রমজান মাস জুড়ে এবং ঈদের দিনে মধ্যপ্রাচ্যের অধিকাংশ দেশে বিশেষ এই কুকি খুবই জনপ্রিয়।
নানা দেশে অবশ্য এর ভিন্ন ভিন্ন নাম। যেমন সিরিয়ায় এর নাম – মামুল, ইরাকে ক্লাইচা এবং মিশরে কাহাক।
ইন্দোনেশিয়া – কেটুপাটঃ
নানা ধরণের মুখরোচক মিষ্টি ছাড়াও ইন্দোনেশিয়ায় ঈদ উদযাপনের প্রধান একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার – কেটুপাট। পাম গাছের পাতায় মোড়া এক ধরনের চালের আটার পিঠা।
মাংসের বিভিন্ন আইটেমের সাথে (ওপর আয়াম- নারকেল দুধ দিয়ে রান্না মুরগি অথবা সাম্বাল গোরেং কেনটাং- বিফ এবং আলুর ডিশ) কেটুপাট পরিবেশন করা হয়।
ব্রিটেন – বিরিয়ানিঃ
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মত ব্রিটেনের মুসলিমদের কাছে ঈদের দিনে অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার এখন বিরিয়ানি। চাল, মাংস এবং সবজি দিয়ে তৈরি এই মুখরোচক খাবারের সাথে থাকে দৈ এবং পুদিনার চাটনি।
ব্রিটেনে বিরিয়ানির জনপ্রিয়তা বোধগম্য। কারণ এখানকার জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশ দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত।
কামবাবুর – সোমালিয়াঃ
পাতলা রুটি বা প্যানকেকের মত দেখতে খাবারটি সোমালিয়ায় খুবই জনপ্রিয়। মাংস বা সবজির সাথে গরম গরম পরিবেশন করা হয় ঐতিহ্যবাহী এই প্যানকেক। চিনি এবং দৈ দিয়ে আলাদাভাবেও খাওয়া হয় এটি। ইথিওপিয়ায় এটির নাম -ইনজেরা। সূত্রঃ বিবিসি