তারাবিহ শেষে ক্রসফায়ার।।
By Siraji M R Mostak from Bangladesh:
মাদক বিরোধী অভিযানের নামে আজ ৩০ জুন, ২০১৮ সিরাজগঞ্জ জেলায় কামারখন্দে আসান নামে একজন ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে। এ নিয়ে সারাদেশে শতাধিক মানুষ ক্রসফায়ারের নির্মম শিকার হল। আসান’ এর ক্রসফায়ারের বর্ণনার মাধ্যমে প্রত্যেকটি হত্যার চুলচেরা বিশ্লেষণ ও অসহায় পরিবারের বিবৃতি প্রকাশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় অনুমতি প্রার্থনা করছি।
উল্লেখ্য যে, আসান এক সময় মাদক ব্যবসায়ী ছিল। বেকারত্বের চরম কশাঘাতে সে সাধারণ মাদক
ব্যবসায়ীদের সাথে জড়িত হয়েছিল। এজন্য বেশ কয়েকবার জেলও খেটেছিল। বয়স ৩২-৩৪ বছর। দু’সন্তানের জনক। বড় ছেলে ৭ ও ছোট ছেলে ২ বছর বয়স। আশ্চর্যের বিষয় হল, তিনি নিজে মাদক সেবন তো দূরের কথা, সামান্য বিড়ি-সিগারেট বা পানও খেত না। এখন পুরোপুরি মাদক ব্যবসা বাদ দিয়েছিল। রমজান মাসের রোজা পালন ও তারাবিহ নামাজে নিয়মিত যোগ দিত। আজও পিতা-পুত্র পাঞ্জাবি পরে তারাবিহ পড়তে গিয়েছিল।
তারাবিহ শেষে দুজন লোক তাকে জোর করে ধরে মোটর সাইকেলে তুলে নিয়ে গেছে বলে তার ছেলেটি
কান্না বিজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করে। এদিকে রাত ১২.০০ টার দিকে পাঁচ লাখ টাকা চেয়ে একটি ফোনও এসেছিল। কিছুক্ষণ পর খবর আসে, আসান ক্রসফায়ারে নিহত। শুনে নিহতের সন্তানের কান্না থামান যাচ্ছিল না।
ছেলেটি কাঁদতে কাঁদতে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিল। তাকে মাথায় পানি ঢেলে কোন মতে সুস্থ করা হয়েছে। নিহতের অসহায় স্ত্রী চোখে অন্ধকার দেখছে। দুটি ছোট বাচ্চা নিয়ে কিভাবে চলবে, ভেবে কুল পাচ্ছেনা। দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার প্রতিটি পরিবার আজ এমন নির্মমতার শিকার। তাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই।
মিডিয়া কর্মীরাও তাদের করুণ অবস্থা তুলে ধরতে সাহস পায় না। হয়ত যে পত্রিকায় এ লেখা প্রকাশ পাবে,
পরদিন থেকে তা বন্ধ হয়ে যাবে। আসানকে তারাবিহ শেষে তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের ঘটনা সকল নির্মমতাকে হার মানিয়েছে বলে মনে করে এলাকার সকলই। এভাবে আসানের মত আর কতজনকে বিচারবহির্ভূত হত্যার মত নির্মমতার শিকার হতে হবে, কে জানে।