স্কলারদের লেকচার শুনে আমরা জ্ঞানার্জনের ক্ষেত্রে অনেক সময় সাশ্রয় করতে পারি।।
নিউইয়র্ক থেকে ড ওমর ফারুক।
তারিখ: ২১ মে ১২:২৫ এ.এম.
মুফতী কাজী ইব্রাহীম বস্তুতপক্ষে এক অনন্য প্রতিভাধর গবেষক। আমি তাঁর লেকচারগুলোর মাঝে অধিকতর যুক্তি ও বাস্তবতা খুঁজে পাই। আমি নিজেও কেয়ামতের পূর্ব লক্ষণ, ইমাম মাহদী ও ইসা (আ) আগমন সংক্রান্ত বিষয়ে এখন ব্যাপক স্টাডি করি। আলহামদুলিল্লাহ। এছাড়া ডা: জাকির নায়েকসহ বেশ ক’জন তো আছেনই।
একাধিক স্কুল ও ইউনিভার্সিটিতে পডাশোনা করলেও মাদ্রাসা এডুকেশনের ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকায় অনেক সময় প্রত্যাশিত জ্ঞান আহরণে অসহায় বোধ করি। আমেরিকায় সকলই ব্যস্ত। যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে যত সহজে একজনের সময় নেওয়া যেত, এখানে অনেক সময় সেটিও কঠিন। তবুও প্রায়শ বিশিষ্ট স্কলার মাওলানা মাহবুবুর রহমানকে ফোন করে সাহায্য নেই। হর হামেশা তাকে বেশি বিরক্ত করি। কোন লেখা লিখতে গেলে কিংবা স্টাডি করে বুঝতে গেলে দরকার পড়ে ।
আমি যে কথা এ সীমিত পরিসরে তুলে ধরতে চাই, তা হল দ্বীনি এলেম লাভের জন্য গতবাঁধা সেই আর্লি লাইফের ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা মাদ্রাসা শিক্ষা থাকলে ভাল হয়।
বস্তুতপক্ষে, আমরা যে ১২ বছর, ১৪,১৫ বা ২০ বছর প্রাথমিক শিক্ষালয় থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষাগারে পৌঁছে গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স, ফাজিল, কামিল, মুফতী বা পিএইচডি সনদপত্র লাভ করি, এ দিয়ে মূলত আমরা জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করার জন্য একজন শিক্ষার্থী বা ছাত্র হিসেবেই স্বীকৃতি বা সনদপত্র লাভ করি। কোনভাবেই তা একজন সবজান্তা পণ্ডিত হিসেবে নয় তা। এ বিষয়টি অনুধাবন করতেও আমাকে জ্ঞানাহরণের রাজ্যে অনেক কসরত করতে হল এবং হচ্ছে। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো প্রথম দিকের প্রায় এক দশকের বেশি সময় দক্ষিণ পূর্ব এশীয় দেশগুলো বিশেষ করে মালয়শিয়া ও পরবর্তীতে আরও দশটি বছর ইউরোপীয় দেশগুলোতে ঘুরে ঘুরে কাটিয়ে দিলাম। আলহামদুলিল্লাহ এরপর আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে এ পারে আসার পর আমার অন্য বিষয়গুলো কতটুকু অর্জন হল বা হবে, সে বড় কথা নয়, স্টাডি করার নতুন ক্ষেত্র, সময় ও সুযোগ পেলাম। যা আমি একনিবেশ হয়ে যখন মিডিয়া ও প্রকাশনা জগতে সম্পাদনা ও প্রকাশনায় সংশ্লিষ্ট ছিলাম, ব্যাপক স্টাডির সময় করা তখন কঠিন ছিল।
আমি যে কথাটি বুঝাতে চাই, তা হল কোরআন ও হাদীসের জ্ঞানার্জনের জন্য মাদ্রাসা এডুকেশন থাকলে খুব সুবিধা হয়। কিছু বিশিষ্টজনের কথা ভিন্ন। যেমন- দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদূদী (রহ), ডা: জাকির নায়েক, আহমদ দিদাত, আরব দেশগুলোতে হাসানুল বান্না, আব্দুল কাদের আওদাহ, সাইয়েদ কুতুবসহ অনেকই।
আল্লাহ কিন্তু পড়তে বলেছেন, সে পড়া আমাদের এসব হাটটিমা টিম টিম জাতীয় পড়া নয়। স্রষ্টা ও সৃষ্টিকে বুঝা, আত্মোপলব্দির দ্বার উন্মোচন, মানবতাকে হেদায়াত ও মুক্তির পথে আহবান ও নিজের জীবনে সে হেদায়াতের জ্ঞানের প্রতিফলন এ সব কিছু অর্জনের পড়া পড়তে বলেছেন।
এখন অন্য উপায় নেই। জ্ঞানাহরণের সহজ পথ হল, হকপন্থী স্কলারদের বয়ান শুনা। এতে করে অনেক সময় বাঁচবে। কেননা তাঁরা অলরেডি বছরের পর বছর স্টাডি করে নিজেকে সমৃদ্ধ করে লেকচারগুলো আমাদের মত কম জ্ঞান সম্পন্নদের উপহার দিচ্ছে।ইউ টিউবে ও গুগল চার্চে হেন কিছু নেই যে, চার্চ করে পাওয়া যায় না। স্কলারগুলোর লেকচার থেকে শুনে একটা দিক নির্দেশন পেয়ে এরপর কোরআন তাফসীর এবং হাদীস সমূহ পাঠ করলে অতি অল্প ইনভেস্টমেন্টে অধিক জ্ঞানার্জন সম্ভব।
সে জন্য আমি নিজে শুনি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে আমার প্রায় দশ হাজার বন্ধু ও ফলোয়ারসহ বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য প্রায়শ আমি কিছু সময়োপযোগী লেকচার শেয়ার করে থাকি। আল্লাহ আমাদের দ্বীনি জ্ঞানার্জন এবং নিজের বাস্তব জীবনে তা পালনের জন্য কবুল করুন । আমিন। আমি নিছক আত্মোপলব্দি থেকে এ লেখা লিখেছি। আমার আব্বা হুজুর মরহুম আবদুর রহিম চৌধুরী প্রায়শ আমার জন্য আফসোস করে বলতেন, কেন যে তোমাকে আমি মাদ্রাসা শিক্ষায় আর্লি লাইফে (আমার) দেই নি। আমি বাবার সে কথাটি কখনও ভুলে যাই না। আর মনের অজান্তেই তখন পড়ি :”রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়া নি ছগিরা।”
মা রাহমাতুন্নেছা চৌধুরী বেঁচে আছেন, আলহামদুলিল্লাহ । যদিও সরাসরি মায়ের খেদমত করতে পারছি না। তবে প্রতিনিয়ত দোয়া করি, যথাযথ খোঁজ খবর নেই। আলহামদুলিল্লাহ । আপনারাও দোয়া করবেন।
সর্বশেষ যে কথা, আমার এ অনুভূতি শেয়ার করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চয়ই আমি ও আমার মহান স্রষ্টা ওয়াকিফহাল। আমরা একজনের অভিজ্ঞতা থেকেই আরেকজন শিখব।
[ড. ওমর ফারুক।। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী লেখক, সামাজিক গবেষক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। ইংরেজি সাপ্তাহিক ঢাকা পোস্ট সম্পাদক, ডেইলিঢাকাপোস্টডটকম অনলাইন পোর্টালের চিফ এডিটর ও নিহাল পাবলিকেশনের স্বত্বাধিকারী।]