চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনফিং নিরঙ্ক ‍ু শ ক্ষমতা পাওয়ার পর আর বেশি দেরী করতে চান না। তিনি ক্ষমতা একচ্চত্র ও কুক্ষিগত করার পরপরই যুদ্ধের হুমকি দিলেন । দেশের পার্লামেন্ট, ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে চীনের স্থানীয় সময় ২১ মার্চ, বুধবার, পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিলেন, তিনি বিশ্বের সর্বোচ্চ আসনেই চীনকে দেখতে চান। তিনি এই চীন বলতে কিন্তু ঐক্যবদ্ধ চীনের কথাই বুঝালেন। বিদেশি শক্তি, যারা সে ঐক্য ভাঙতে চাইবে, তাদের উদ্দেশ্য করে চীনা প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট ভাষায় বললেনঃ ‘‘চীনের সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। যে কোন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের জন্য চীনের শক্তিশালী ও বিশাল সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।’’ অবশ্য এ বিদেশি শক্তি কারা, তা তিনি পরিষ্কার ভাবে না বললেও অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, এ হুঁশিয়ারি মূলতঃ তাইওয়ানকে ঘিরেই। স্বায়ত্তশাসিত ‘তাইওয়ান’ প্রদেশটি অনেকদিন থেকে চীন থেকে আলাদা একটি রাষ্ট্র হতে চাইছে।

বেজিং মনে করে, গোপনে তাইওয়ান আলাদা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য গোপনে ঘোষণার জন্যও প্রস্তুত হচ্ছে প্রদেশটির ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি । এরমধ্যে আমেরিকার সাথে বাণিজ্য যুদ্ধ তো আছেই। ইতোমধ্যে ইস্পাত ও এ্যালুমিনিয়ামের উপর চড়া শুল্ক বসানোয় চীন ভীষণ ভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে। আমেরিকা তাইওয়ানকে গোপনে উষ্কিয়ে দিচ্ছে বলেও চীন মনে করে। এজন্য চীনা প্রেসিডেন্টের কড়া বক্তব্য আমেরিকাকে উদ্দেশ্য করেও বলেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একই দিন চীনের প্রধানমন্ত্রী, Li Keqiang সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে চীন এখন মরিয়া।  চীনের বাজারে স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যবসা বাড়াতে তিনি সহযোগিতাও চেয়েছেন বিশ্বের অন্য দেশগুলোর। বাণিজ্য আর আর্থিক উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে এদিন  শি জিনফিংও কিঞ্চিৎ আশ্বাস দিয়ে বলেন, দেশে-বিদেশে তাঁদের যে সব উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে,  এতে প্রতিবেশি দেশগুলোর অহেতুক ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। দ্বিতীয় বারের জন্য প্রেসি়ডেন্ট নির্বাচিত শি জিনফিংকে অভিনন্দন জানাতে  ফোন করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বেজিং জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে  অনেক সমস্যা রয়েছে চীনের। আবার দক্ষিণ চীন সাগরে বেজিংয়ের ‘দাদাগিরি’ নিয়েও ফিলিপাইন, মালয়শিয়ার মত দক্ষিণ এশীয় দেশেগুলোর অভিযোগ কম নয়। ‘আজীবনের প্রেসিডেন্ট শি জিনফিং অবশ্য সেসব দেশগুলোকে নিয়ে কোন মন্তব্য করেন নি।

পার্লামেন্টের বার্ষিক অধিবেশনের ২১ মার্চ ছিল শেষ দিন। ১৮ দিনের এই ‘ঐতিহাসিক’ অধিবেশনেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা পেয়েছেন পঁয়ষট্টি বছর বয়সী শি জিনফিং। দেশের সংবিধানে পরিবর্তন এনে পার্লামেন্ট জানিয়ে দিয়েছে, ২০৩৩-এর পরও যতদিন খুশি প্রেসিডেন্ট থাকবেন তিনি।