বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সাইবার হামলার ঝুঁকিতেও বাংলাদেশ।
ড. ওমর ফারুক সম্পাদিত।।
নিউইয়র্ক থেকে।।
স্থানীয় সময়ঃ ৪ নভেম্বর ২০১৭ সকাল সাতটা।
[২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির জন্য অভিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং গ্রুপ লাজারাস এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনেক দেশসহ বিশ্বব্যাপী অসংখ্য সার্ভার ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড সহ আরো অনেক দেশে ক্যাসপারেস্কি এ সব সার্ভারের সন্ধান পেয়েছে। যদিও এ চুরি’র সাথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বড় বড় পজিশনে বসা ডাকাতরা জড়িত আছে। যার ফলে অতি সহজে দেশের এ বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট হতে পেরেছে। এসব দেশীয় লুটপাকারী উচ্চ শ্রেণিতে অবস্থানকারীরাই মূলতঃ হ্যাকার গ্রুপকে সহযোগিতা করে চুরিটাকে সহজ করে দিয়েছে। ]
বিশ্বে সবচাইতে বেশি ম্যালওয়ার হামলার ঝুঁকিতে বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের নাম এসেছে। গত ২৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, প্রকাশ করা ২০১৭-কিউ ১ নামের একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে মাইক্রোসফটের নিরাপত্তা সংস্থা। এতে বলা হয়, সাইবার হামলার কবলে পড়ে নিজ ডিভাইসে প্রবেশ করে হ্যাকারদের অর্থ প্রদান করা দেশগুলোর মধ্যে এ দু’টি দেশের স্থান সর্বোচ্চ। এরপরই আছে কম্বোডিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া’র মত দু’টো দেশের নাম।
এ দেশগুলোর চারজন কম্পিউটার ব্যবহারকারীর মধ্যে একজন ম্যালওয়ার হামলা প্রতিরোধক মাইক্রোসফটের নিরাপত্তা পণ্য ব্যবহার করে থাকেন বলেও উক্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ‘এসকিউআর’ এর সিইও নিথেইন থমাস বলেন, ভাইরাস ছড়ানো সফটওয়্যারগুলো অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ডার্কওয়েবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে একটি বাজারজাতকরণ করা হচ্ছে। বর্তমানে এ ধরনের হুমকি মোকাবেলা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
এদিকে ২৬ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার, রুশ সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ক্যাসপারেস্কি জানিয়েছে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরির জন্য অভিযুক্ত উত্তর কোরিয়ার হ্যাকিং গ্রুপ লাজারাস এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অনেক দেশসহ বিশ্বব্যাপী অসংখ্য সার্ভার ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড সহ আরো অনেক দেশে ক্যাসপারেস্কি এ সব সার্ভারের সন্ধান পেয়েছে। যদিও এ চুরি’র সাথে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বড় বড় পজিশনে বসা ডাকাতরা জড়িত আছে। যার ফলে অতি সহজে দেশের এ বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাট হতে পেরেছে। এসব দেশীয় লুটপাকারী উচ্চ শ্রেণিতে অবস্থানকারীরাই মূলতঃ হ্যাকার গ্রুপকে সহযোগিতা করে চুরিটাকে সহজ করে দিয়েছে।
এছাড়া গত ২৫ অক্টোবর, বুধবার, রাশিয়া ও ইউক্রেনে ‘ব্যাড র্যাবিট’ নামের একটি র্যানসমওয়্যার হামলা চালিয়েছে। এর আগে ওয়ানাক্রাই ও পেটায়া নামের দুটি র্যানসমওয়্যারে আক্রান্ত হয়েছিল সাইবার বিশ্ব।
‘২০১৭-কিউ১’ নামের ওই প্রতিবেদনে জানা যায়, সাইবার নিরাপত্তার দিক দিয়ে এশিয়া অঞ্চলে শীর্ষ স্থানে অবস্থান করছে জাপান। দেশটির মাত্র ২ শতাংশ কম্পিউটারে ম্যালওয়ার হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে।
অন্যদিকে মাইক্রোসফট রিয়েল টাইম নিরাপত্তা পণ্য ব্যবহার করা সত্ত্বেও ২০১৭ সালে মালয়েশিয়ার ১২.৯ ভাগ কম্পিউটার ক্ষতিকারক হামলার শিকার হয়েছে। যারা সারা বিশ্বের সাইবার হামলার চেয়ে ৯ ভাগ বেশি। কিন্তু ইতিবাচক বিষয় হল ২০১৬ সালের চেয়ে এর পরিমান চার ভাগ হ্রাস পেয়ে। ওই বছর মালয়েশিয়ার ১৬.৭ ভাগ কম্পিউটার সাইবার হামলার শিকার হয়েছিল।
এ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক সফটওয়্যারের কারণে সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত করা অসম্ভব। বিশ্বের অনেক সংস্থা তাদের সাইবার নিরাপত্তার জন্য সবচাইতে নির্ভরযোগ্য ডেটা হাব হিসেবে ক্লাউড-বেজড সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। এটিও হামলার ঝুঁকিতে আছে।