সৌদিতে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকের ওপর পৈশাচিক নির্যাতনের ভয়াবহতা।

February 27, 2018 7:23 pm0 commentsViews: 26

সৌদিতে বাংলাদেশি নারীকে পৈশাচিক নির্যাতন

[নিয়োগকারীরা কারণ হিসেবে তাদের কাজে অনীহার কথা বললেও একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ‘বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের কাজে অনীহার কারণ ভিন্ন। তারা নির্যাতনের শিকার এবং তাদের বেতনও খুব কম দেয়া হয়।] সৌদিতে বাংলাদেশি নারীকে- সৌদি আরবে বাংলাদেশি এক নারী গৃহকর্মী পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ওই গৃহকর্মী ফেরার পথে রিয়াদ বিমানবন্দরে তাকে নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশি দূতাবাস বিষয়টি তদন্ত করছে।

ভাইরাল হওয়া ওই ইউটিউব ভিডিওর তথ্য অনুযায়ী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে। তাতে বলা হয়েছে, সাত মাস আগে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরবে গিয়ে নির্যাতনের ক্ষত নিয়ে দেশে ফিরেছেন। সম্প্রতি রিয়াদ বিমানবন্দরে উড়োজাহাজে বসে এক আরবকে ওই নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। তার বক্তব্য ভিডিও করেছেন ওই আরব। ভিডিওতে ওই নারীর এক হাতে ক্ষতচিহ্ন, আরেক হাতে গোটা গোটা ফোস্কা দেখা যায়। এক প্রশ্নের জবাবে ওই নারী বলেন, সৌদি আরবে কাজে আসার পর প্রতিদিন তাকে ছয় থেকে সাতবার গরম কিছু দিয়ে ছ্যাঁকা দেয়া হত। ওই ছ্যাঁকাতেই হাতে ফোস্কা হয়েছে। কেন নির্যাতন করা হত জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশে কারও সঙ্গে, বিশেষ করে স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে মালিক দিত না। দেশে ফিরতে চাইলে নির্যাতন করা হত। এভাবে নির্যাতনের পর সৌদি মালিক তাকে বিমানবন্দরে রেখে চলে যায়। এ কয় মাসে তাকে কোন বেতন দেয়া হয় নি। কিন্তু বিমানবন্দরে রেখে যাওয়ার সময় বেতন নিয়েছেন মর্মে স্বাক্ষর নিয়ে গেছেন মালিক। ভিসা ও পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, নির্যাতিত ওই বাংলাদেশি নারীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গায়।

তিনি গত ২২ জানুয়ারিতে সৌদি আরব যান। সৌদিতে তার নিয়োগকর্তা আজিজা নাশহাত মোহাম্মদ আলী কাকা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর সরওয়ার আলম বলেন, ‘আমরা ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সম্পর্কে জেনে তদন্ত শুরু করেছি। আমরা বাংলাদেশ এবং সৌদি আরব দু’জায়গায়ই যোগাযোগ করেছি। আমরা এখন ওই নারী গৃহকর্মীর বক্তব্য গ্রহণ করব।’

তিনি বলেন, ‘তিনি এখন বাংলাদেশেই তার গ্রামের বাড়িতে আছেন। তার বক্তব্য নেয়া হচ্ছে। আর আমরা সরকারের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি।’ সৌদি আরবে বাংলাদেশি গৃহকর্মী নির্যাতনের আরও অভিযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু অভিযোগ এর আগেও পেয়েছি।’

চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় সাংবাদিক জানান, নির্যাতিত ওই নারীর নাম সালমা। তিনি গ্রামে ফিরে আসার পর তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে নির্মম নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। তিনি শুধু বলেছেন আমার ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তা বললে আপনারা স্তব্ধ হয়ে যাবেন।’

সৌদি আরব এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৮০ হাজারের মতো নারী গৃহকর্মী নিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ বা ৪০ হাজার নারী গৃহকর্মীকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নিয়োগকারীরা কারণ হিসেবে তাদের কাজে অনীহার কথা বললেও একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, ‘বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের কাজে অনীহার কারণ ভিন্ন। তারা নির্যাতনের শিকার এবং তাদের বেতনও খুব কম দেয়া হয়।’ গত বছর রিয়াদে অবস্থিত বাংলাদেশি দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, তিনটি কারণে নারী গৃহকর্মীরা তাদের কাজ ছেড়ে পালাচ্ছেন। কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, গৃহকর্মীদের দিয়ে কঠিন কাজ করানো, গৃহকর্মীদের নিজের বাড়ির প্রতি দুর্বলতা থাকা এবং গৃহকর্তার কাছ থেকে নানা দুর্ব্যবহার ও নির্যাতনের শিকার হওয়া।

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com