খালেদার রায়।। কে এই বিচারক আক্তারুজ্জামান?
আক্তারুজ্জামান ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। সহপাঠী এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সঙ্গে সম্প্রতি নিজের উদ্বেগ এবং জীবনহানির আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছেন আক্তারুজ্জামান। আক্তারুজ্জামান আততায়ী কিংবা বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পক্ষ থেকেই নিজের চরম ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। আক্তারুজ্জামান তার বন্ধুর সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, এ মামলাটির তেমন কোন আইনগত ভিত্তি নেই। এ মামলার প্রথম বিচারক বাসুদেব রায় আইন সচিব পিস্তল দুলালের নির্দেশে চার্জ গঠন করেছেন যুক্তিহীনভাবে। কিন্তু এ মামলাটি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তার উপর মারাত্মক প্রেসার তৈরি করা হচ্ছে। এদিকে উচ্চাভিলাষী আক্তারুজ্জামানের পরিবারও তার কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারাও তাকে নানাভাবে বুঝিয়েছে, নিরস্ত করার চেস্টা করেছে। পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা উদ্বিগ্ন এ কারণে যে শেখ হাসিনা অত্যন্ত প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং আত্মকেন্দ্রিক। নিজের প্রয়োজনে ইমরান সরকারকে ব্যবহার করেছিল শেখ হাসিনা। কাজ উদ্ধার শেষে এখন সরকারের হামলা মামলার শিকার ইমরান এইচ সরকার। ছাত্রলীগের চড় থাপ্পড়ের ভয় ইমরান সরকারকে সারাক্ষণ তাড়িয়ে বেড়ায়। শেখ হাসিনার স্বার্থ রক্ষায় বিচারপতি এস কে সিনহা নিজের মত আইনের ব্যাখ্যা করে অনেক সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের জেল ও ফাঁসি দিয়েছেন। সিনহাকে ব্যবহার করে কার্য উদ্ধার শেষে ‘পাগল ছাগল এবং রাজাকার আখ্যা দিয়ে অতিউৎসাহী সিনহাকে দেশ ছাড়া করেছেন শেখ হাসিনা।
এসব কারণে এখন আক্তারুজ্জামান বুঝে গেছেন যে, তিনি সম্পূর্ণ আওয়ামী লীগের স্বার্থে ব্যবহৃত হচ্ছেন। তাকে দিয়ে কার্য উদ্ধার শেষে যে কোন সময় আওয়ামী আততায়ীর কবলে পড়তে পারেন তিনি এই আশঙ্কা তাকে ঘিরে ধরেছে। তার ক্ষত করে আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষের উপর দোষ চাপিয়ে ঘোলা পানিতে স্বার্থসিদ্ধি করবে। কারণ কাজ উদ্ধার হয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা কাউকেই রেহাই দেন না। আখতরুজ্জামানও হয়ত শেষ পর্যন্ত আওয়ামী আততায়ী কিংবা আওয়ামী নিষ্ঠুরতা থেকে রেহাই পাবেন না।
আক্তারুজ্জামান ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানায়, লোভে পড়ে আওয়ামী ফাঁদে পা দিয়েছিলেন রংপুর জেলার মঙ্গাপীড়িত কাউনিয়া উপজেলার ৫ নং বালাপাড়া ইউনিয়নের নাম হরিশ্বর গ্রামের রইছ উদ্দিনের পুত্র আক্তারুজ্জামান। কাউনিয়াতেই স্কুলের পাঠ চুকিয়ে কারমাইকেল কলেজ এবং এরপর ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন ছাত্রলীগের ক্যাডার। তবে সেই সময় ক্যাম্পাসে তার গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে জাসদ ছাত্রলীগের দুধর্ষ সন্ত্রাসী রুহুল কুদ্দুস বাবু ওরফে কিলার বাবুর সঙ্গে। উলেখ্য, রুহুল কুদ্দুস বাবু বর্তমানে হাইকোর্টের বিচারপতি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স শেষ করে আক্তারুজ্জামান মাস্টার্স করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়াশুনা শেষ করেই বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিতে ঢুকেন আকতারুজ্জামান। এরপরই ছাত্র রাজনীতির সময়কার সম্পর্ক কাজে লাগিয়ে নানা ফাঁক ফোকর দিয়ে ভাগ্য বদলাতে থাকেন আখতারুজ্জামান।এখন তার টাকার অভাব নেই। ঢাকায় চারটি বাড়ি-ফ্লাট,উত্তরা ও পুর্বাচলে তিনটি প্লট , একটি অভিজাত মার্কেটে দু’টি দোকান স্পেস এর মালিক তিনি। তার বন্ধুটি জানান,বেগম জিয়ার মামলা দ্রুত শেষ করে তার বিরুদ্ধে রায় দেয়ার বিনিময়ে আখতার দু’টি প্রমোশন পাবেন। এরইমধ্যে পেয়েছেন কোটি টাকাসহ নানাসুবিধা। কানাডা ও মালয়েশিয়ায় বাড়ি কিনেছেন আখতারুজ্জামান। ঢাকার প্রতিবন্ধী স্কুলে অধ্যয়নরত আখতারুজ্জামান এক মাত্র সন্তানকে উন্নত চিকিৎসা করানোর জন্য রায়ের পর যেতে চান বিদেশে।
আখতার এ মামলাকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে খুশি করার মধ্য দিয়ে পৌছে যেতে চান মঞ্জিলে মকসুদে । শশুর বাড়ি কুস্টিয়ার খোকসায়ও নিজের উচাকাঙ্খার কথা জানিয়েছেন আখতারুজ্জামান। তবে আখতারুজ্জামান এখন নিশ্চিত আভাষ পাচ্ছেন, তার ঘাঁড়ে বন্দুক রেখে কাজ হাসিল করে শেষ পর্যন্ত এ আওয়ামী লীগই তাঁর জীবনের হুমকি হয়ে দাঁড়াতে যাচ্ছে।
রাজশাহীর বন্ধুকে আখতারুজ্জামান আরও বলেছেন, অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে যেভাবে আওয়ামী লীগ ফাঁসিয়ে দিয়েছে তাঁকেও একইভাবে ফাঁসিয়ে দেয়া হতে পারে অথবা আততায়ীর হাতে তার আক্রান্ত হওয়ার প্রবল আশঙ্খা রয়েছে। তার রেহাই পাওয়ার পথ নেই। তবে আখতারুজ্জামানের বন্ধুটি তাকে শেখ হাসিনার এ মৃত্যুচক্রব্যূহ থেকে পরিত্রাণ চাইলে সাহসী হয়ে ন্যায্য বিচার করার পরামর্শ দিয়েছেন।
বন্ধুটি আখতারুজ্জামানকে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, সঠিক রায় দাও।খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও জাল জালিয়াত মামলার কথা রায়ে ঘোষণা কর। জনগণকে সত্যটা নিজের মুখে জানিয়ে দাও।
তোমার ব্যক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কিছু কর। পরামর্শ দিয়ে বন্ধুটি আখতারুজ্জামানকে আরও বলেছে।. ‘তোমার সামনে ইতিহাস অপেক্ষা করছে। হাসিনার নির্দেশিত রায় ছিঁড়ে ফেল। তুমি পিস্তল দুলালের লেখা রায় ঘোষণা করলে দেশে গৃহযুদ্ধ লেগে যেতে পারে। সঠিক রায় দিলে শান্তি ফিরে আসবে। ন্যায় বিচার করলে এতে তোমার বিরুদ্ধে হাসিনা রুষ্ট রুষ্ট হবে বটে, তবে তোমার বড় কোন ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ দেশের জনগণের সেন্টিমেন্ট তখন তোমার পক্ষে থাকবে ।
ওই বন্ধু আখতারুজ্জামানকে আরও বলেছেন, আখতার ,তুমি সিদ্ধান্ত নাও ,তুমি হিরো হতে চাও নাকি নিকৃষ্ট ভিলেন? তুমি নরকের কীট হতে চাও নাকি মানুষের অভিনন্দন ধন্য বিচারক ?
তুমি কি শেখ হাসিনার উচ্ছিষ্ট হয়ে প্রাণ-সংহারে নিজেকে সপে দেবে, নাকি বীর হয়ে বাঁচতে চাও? সিদ্ধান্ত তোমার কাছে। উল্লেখ্য, রায়ের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। এ বন্ধুটিও এখন আখতারুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।