পুলিশে বাড়ছে অপরাধ!
।। প্রীতম সাহা সুদীপ।।
অক্টোবর ২৮, ২০১৭
[চলতি বছর ইন্সপেক্টর থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত ১৫ হাজার ১০০ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।]
পুলিশ সদস্যদের অপরাধে জড়িয়ে পড়ার হার দিনকে দিন উদ্বেগজনক হারে বেড়েই চলেছে। একই সাথে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হারও বেড়েছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছর ইন্সপেক্টর থেকে কনস্টেবল পর্যন্ত ১৫ হাজার ১০০ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
সম্প্রতি পুলিশ সদর দফতরের একটি সূত্র পরিবর্তন ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানায়, চলতি বছরে (২০১৭ সাল) ১৫ হাজার ১০০ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এদের মধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে মাত্র ১ জনকে।
এর আগে ২০১৬ সালে প্রায় ১৩ হাজার ৬০০ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। তাদের মধ্যে ৭০ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছরই পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার হার বেড়েছে।
ওই বছর ১০ হাজার ৩৪ জন পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে চাকরিচ্যুত হয়েছেন মাত্র ৭৮ জন।
আর ২০১৪ সালে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ হাজার ৪০০ জন পুলিশ সদস্যকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে চাকরিচ্যুত হন মাত্র ৮০ জন। আর ‘গুরুতর’ অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭৬২ জনকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সহেলী ফেরদৌস পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, পুলিশের কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক পদবী পর্যন্ত দোষী সদস্যদের বিরুদ্ধে সরাসরি পুলিশ সদর দফতর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, অসদাচরণ, পারিবারিক অভিযোগসহ বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন ধরনের শাস্তি প্রদান করা হয়। যে ধরনের অপরাধ ফৌজদারী অপরাধের আওতায় পড়ে না, এ ধরনের অপরাধেও আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।
গত ২৫ অক্টোবর ভোরে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়কে একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশী চালিয়ে ১৭ লাখ টাকাসহ ডিবির ছয় সদস্যকে আটক করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। গাড়ির গ্লাস ভেঙে পালিয়ে যাওয়ার পর জড়িত আরেকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার পুলিশের সদস্যরা হলেন— এসআই মনিরুজ্জামান (৩৫), এসআই আবুল কালাম আজাদ (৩৯), এএসআই গোলাম মোস্তফা (৩৬), এএসআই ফিরোজ আহমদ (৩৪), এএসআই আলা উদ্দিন (৩২), কনস্টেবল মোস্তফা আজল (৫২) ও কনস্টেবল মো. আল আমিন (২৬)।
এ ঘটনায় ডিবির সাতজনকে আসামি করে টেকনাফ থানায় অপহরণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ী গফুর আলম।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) কক্সবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোশাররফ হোসেন অভিযুক্ত সবাইকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে এআইজি সহেলী ফেরদৌস পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ফৌজদারী মামলায় ডিবির সাত সদস্যের দোষ প্রমাণিত হলে সরকারি চাকরির বিধি অনুযায়ী তারা এমনিতেই চাকরিচ্যুত হবেন। তাদের বিরুদ্ধে আলাদা করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। তারা যদি দোষী হয়ে থাকেন, তাহলে আমরা তাদের উপযুক্ত শাস্তির প্রত্যাশা করি।
সূত্রঃ পরিবর্তন