গ্রিসে এখনও চলে মুসলিম শাসন।। আছে একাধিক ইসলামি আদালতও।।
আইন অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে নির্বাচিত মুফতিগণ সংক্ষিপ্ত পরিসরে ইসলামিক আইন প্রয়োগ করবেন। ১৯৯১ সাল থেকে স্থানীয় মুসলিমগণ বিচারক হিসেবে মুফতি নির্বাচন করেন। তারা আইনপ্রণয়ন ও তারা ইসলামি আদালতগুলো পরিচালনা করে। সরকার তাদের নিয়োগ অনুমোদন করে।
গ্রিসের উত্তরে অবস্থিত এ অঞ্চল তুর্কি বংশোদ্ভূত মুসলিম দ্বারা শাসিত হয়ে আসছে ১৯১৩ সাল থেকে। ৮ বর্গ কিলোমিটারের এ অঞ্চলে বসবাস করে ১ লাখ ২০ হাজার মুসলিম। যাদের অধিকাংশ তুর্কি বংশোদ্ভূত।
তাদের জন্য রয়েছে একাধিক ইসলামিক কোর্ট। ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র গ্রিসেই ইসলামিক কোর্ট রয়েছে।
১৯২৩ সালে এক চুক্তির মাধ্যমে তুরস্ক তুর্কি সম্রাজ্যের অংশ পশ্চিম থ্রেসকে গ্রিসের হাতে তুলে দেয়। চুক্তি অনুযায়ী গ্রিস পশ্চিম থ্রেসে মুসলিম স্বায়ত্বশাসন ও ইসলামিক কোর্ট মেনে নেয়। তখন থেকে একাধিক মুসলিম আইন বিশেষজ্ঞ মুফতি সেখানে সরকারিভাবে নিয়োগ দেয়া হয়।
গ্রিসের স্বায়ত্বশাসিত পশ্চিম থ্রেসে চলে প্রেসিডেনশিয়াল শাসন। তিনি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট হোসে সালেহ আফেন্দি।
পশ্চিম থ্রেসের রাজধানী কমোটিনি।
গ্রিক আইন অনুযায়ী মুসলিম উত্তরাধিকার বিষয়ে একমাত্র মুফতিরাই সিদ্ধান্ত দিতে পারবে।
এতোদিন ইসলামিক আদালতের মুফতিগণ স্বাধীনভাবে আইন প্রয়োগ করতে পারতো। তবে গ্রিস সরকার আঞ্চলিক বিচারক মুসলিম শাসকদের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। এমনকি তারা শতবছরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে ইসলামিক কোর্টের ক্ষমতাকে পারিবারিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।
গত মঙ্গলবার গ্রিক আইন সভার সদস্যগণ একটি প্রস্তাব পাশ করেছে। নতুন আইন অনুযায়ী পশ্চিম থ্রেসের ইসলামিক আদালত শুধু মুসলমানের পারিবারিক বিষয় সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন।
গ্রিক প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস বলেছেন, অত্র অঞ্চলের খ্রিস্টানদের আইনি সমতা লক্ষ্য করেই এ প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার তুর্কি সরকার গ্রিস সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা গ্রিক-তুর্কি চুক্তির আালোকে মুফতিদের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছে।
তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমরা সতর্কতার সঙ্গে দেখছি মুফতিদের উপর কিভাবে অন্যায় চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
অন্যদিকে গ্রিক সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় মানবাধিকার আদালতে মামলা ঠুকেছে পশ্চিম থ্রেসের একজন মুসলিম।
রাজধানী কমোটিনির অধিবাসী মোল্লা হাতিজাহ সাল্লি গ্রিক সরকারকে চ্যালেঞ্জ করে এ মামলা দায়ের করেছেন।
সূত্রঃ ডেইলি সাবাহ, ডয়েচে ভেলি, উইকিপিডিয়া