সুস্থ থাকার জন্য নারীদের করণীয়।।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ১৯৯০ সালের পর থেকে সারা বিশ্বে নারীদের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মৃত্যুহার। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে নারীদের বেশ কিছু বিষয় ভালভাবে অনুসরণ করে চলতে হবে।
ইমিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা এ গবেষণায় দেখা গেছে, ৯০-এর দশকের পর থেকে যেখানে কম বয়সি পুরুষদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেছে, সেখানে নারীদের শারীরিক অবনতি ঘটেছে চোখে পড়ার মত। ফলে ২৫-৩৪ বছর বয়সি নারীদের মধ্যে বেড়েছে মৃত্যুহার। ১৯৯০ সালে যেখানে নারীদের অসুস্থতার হার ছিল মাত্র ৮.৫ শতাংশ, সেখানে ২০১৪ সালে এটি বৃদ্ধি প্রায় ২০ শতাংশের মত হয়েছে।
এদিকে, কেস স্টাডিতে দেখা গেছে ছেলেরা নিজেদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে যতটা সচেতন, নারীরা এ বিষয়ে বড়ই উদাসীন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নারীদের মধ্যে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, অ্যাংজাইটি এবং স্ট্রেসের মত মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এমন পরিস্থিতিতে নারীদের সুস্থভাবে বাঁচতে হলে আপনাকে বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
নারীদের সব সময় মনে রাখতে হবে, একজন সুস্থ মা মানে একটি সুস্থ সন্তান। আর সুস্থ সন্তান মানে ভবিষ্যত এর একটি সুস্থ প্রজন্ম। তারপর শুধু শারীরিক সুস্থতা নয়, নৈতিক চরিত্রের দিক থেকেও নারীরা যদি ধর্মীয় ও মানবিক মূল্যবোধগুলো লালন করে, তা সন্তানের জন্য কল্যাণকরই হবে।
১) ডায়াটের দিকে নজর দিনঃ নারীদের শরীর ছেলেদের তুলানায় অনেক বেশি জটিল। তাই নারীদেরকে তাদের শরীরের প্রতি বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে হবে। নারীদের প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো ডায়েটের প্রতি নজর দেওয়া। এক্ষেত্রে প্রতিদিনের ডায়েটে ফল, সবুজ শাকসবজি ছাড়াও ডিম, মাছ এবং মাংসের মতো প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারও খেতে হবে। অন্যদিকে ৪০-এর পর থেকে নারীদের শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই এই সময় প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে।
২) শরীরচর্চাঃ একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে শরীরচর্চার অভাবে নারীদের মধ্যে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও শরীরচর্চার অভাবে ওবেসিটি, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি রোগও বৃদ্ধি পায়। তাই নিয়ম করে শরীরচর্চা করার অভ্যাস গড়ে তোলতে হবে।
৩) মদ্যপান এবং ধূমপানঃ বর্তমান সমাজে কিছু অতি আধুনিক নারী মদ্যপান ও ধূমপান করাকে ফ্যাশন হিসেবে মনে করে থাকে। কিন্তু এ মদ্যপান এবং ধূমপান নারীদের শরীরের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। তাই তাদের উচিত মদ্যপান ও ধূমপান থেকে নিজেদের বিরত রাখা।
৪) স্ট্রেসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবেঃ মানসিক চাপকে একেবারে ঘাড়ে উঠানো চলবে না। কারণ স্ট্রেস হলো ডায়াবেটিসের মতে এক ধরনের সাইলেন্ট কিলার। তাই তো একবার যদি এ রোগ শরীরে প্রবেশ করে যায়, তাহলে ধীরে ধীরে সব শেষ করে দেয়। তাই যখনই ক্লান্ত লাগবে, মনে হবে আর স্ট্রেস নিতে পারছেন না, তখনই সব কিছু ছেড়ে কিছুদিন কোথাও থেকে একটু ঘুরে আসবেন। প্রয়োজনে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে সময় কাটাবেন। দেখবেন মানসিক চাপ আর আর বেশি ক্ষতি করতে পারবে না।
৫) ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকে সাবধানঃনারীদের জন্য বর্তমানে সবচেয়ে মারাত্মক হুমকির নাম হচ্ছে ব্রেস্ট ক্যান্সার । আর এটি জীবনযাত্রার কারণে হোক বা পরিবেশ গত কারণে হোক এর প্রতি নারীদের অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে। তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর এই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলা যাবে না। কারণ এই মরণ রোগকে যদি আটকাতে চান, তা হলে আপনাকে সচেতন হতেই হবে।
[ বোল্ডস্কাই অবলম্বনে।]