পাল্টে যাবে দেশের রাজনীতি, বিচারপতি সিনহা সাহেব ফিরছেন শীঘ্রই!!!
প্রকাশিত হয়েছে, লন্ডন সময় : ৩:৫৬:০৬,অপরাহ্ন ১৮ অক্টোবর ২০১৭ |
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী।।
গত লেখায় লিখেছিলাম ওয়ান ইলেভেন কি আসছে? আর যায় কোথায়? বন্ধু বান্ধবদের সমালোচনা আমাকে অতিষ্ট করে তুলেছে। আমি নাকি গনতন্ত্রের দুশমন। দেশের নাকি ভালো চাইনা। দেশ এগিয়ে যাক এটা নাকি কোনোভাবেই আমার কাম্য নয়। লন্ডনে বসে লম্বা লম্বা কথা লিখি ইত্যাদি। আামার এক বন্ধু লেখা পড়ে জানতে চেয়েছেন আওয়ামী সরকারের সময় কতটুকু? আমি বলেছি জানিনা। তারপর তিনি আমাকে খোঁচা মেরে লিখেছেন “জয় গাল ফুলা কামাল, ইউনুস, মান্না ইত্যাদি। বন্ধুর মেসেজ পড়ে কিছুটা বিব্রত হয়েছি। লন্ডনে ডঃ কামাল হোসেন স্যার আসলে চ্যানেল আই লন্ডন ষ্টুডিওতে আসেন। আমার টক শো ষ্ট্রেুইট ডায়লগে বসেন। আমি অনেকটা জোর করে তাকে নিয়ে আসি ষ্টুডিওতে। তিনি অন্য কোনো বাংলা চ্যানেলে যাননা। কেন যেতে চাননা আমি জানিনা। আমি অবশ্য অন্যান্য টেলিভিশনের মালিকদের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছি। তারা তাকে দাওয়াত দিয়েছেন তিনি বলেছেন তাদের সবার ষ্টুডিওতে যাবেন। এ পর্যন্তই। এখন আমি নাকি ডঃ কামাল সাহেবের দল করি। আমি নাকি তার এজেন্ট ইত্যাদি। কামাল হোসেন সাহেব এর সাথে আমার সম্পর্ক হচ্ছে সম্পূর্ণ প্রপেশনাল। তিনি লন্ডনে আসলেই আমি ইন্টারভ্যিউ করি। আমার ভালো লাগে। একজন অভিজ্ঞ মানুষ। কামাল সাহেব যে ধুয়া তুলসি পাতা তা আমি বলিনা। দোষে গুনে মিলে মানুষ। দোষ থাকতেই পারে। কিন্তু কামাল সাহেব যে একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তিত্ব এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তার সাথে অনেকের মতের মিল না হতে পারে তাই বলে তাকে গাল ফুলা কামাইল্যা বলবে এটা তো মেনে নেয়া যায়না। নারায়নগঞ্জের শামীম ওসান সাহেব যে বক্তব্য রেখেছিলেন কামাল সাহেব সম্পর্কে সেটা ফেইসবুকে দেখে অবাক হয়েছি আমি। আমার ধারনা ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শামীম ওসমান সাহেবকে ডেকে নিয়ে অন্তত ধমক দিবেন। কিন্তু না তা হয়নি। অবশ্য রাজনীতিতে শিষ্টাচার বর্জিত কথাবার্তা কে কিভাবে শুরু করেছিলেন তা আমি জানিনা। তবে বেশীর ভাগ সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখে আমি অনেক কিছু শুনেছি। সর্বশেষ যেটি তিনি বলেছিলেন সেটি ছিল “ আওয়ামীলীগে প্রেমিক খুঁজলে ফালুর কি হবে“ এ ছাড়া ও আরো অনেক কিছুই বলেছেন অনেকেই। তাদের এ্ অকথ্য ভাষা থেকে জাতি কি পেয়েছে? যে দেশের রাজনীতিবিদরা সুন্দর করে কথা বলতে পারেনা, যে দেশের রাজনীতিতে ভদ্রতা, শিষ্টতা, সামাজিকতা নেই সে দেশের সাধারন মানুষ কি শিখবে নেতাদের কাছ থেকে? দোষ সবার আছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ম্যাডাম খালেদা জিয়ার ছেলে কোকো মারা যাওয়ার পর যখন শান্তনা দিতে বাসায় গিয়েছিলেন তাকে গেইট খুলে দেয়া হয়নি। একজন সাধারন মানুষ যদি কারো বাড়ীতে যায় তাকে অন্তত দরজা খুলে দেয়া উচিৎ। সেখানে বিএনপির শিমুল বিশ্বাস সহ অনেকেই নাকি সন্তা রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পেয়েছিলেন।
সে যাক, ডঃ কামাল হোসেন সাহেব নাকি পালিয়ে গেছেন গত কিছুদিন থেকে দালালদের পত্রপত্রিকায় এভাবেই খবর আসছে? আমাকে লন্ডনে ফোন করে জিজ্ঞাস করেছেন অনেকেই। আমি জানতামনা তিনি কোথাায় আছেন? কিভাবে আছেন? তবে সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তিনি দিল্লিতে বিচারপতিদের এক সেমিনারে যোগ দিয়ে ইউরোপে এসেছেন। এসব খবর দালালদের পত্রিকায়ই বেশী থকে। কারন দালাল সাংবাদিকরা সব সময় সব সরকারের কাছ থেকেই সুবিধা গ্রহন করে। এখন কথা হচ্ছে, কামাল সাহেব দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, সেই সাথে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বিচারপতি সিনহা সাহেব। আমার অত্যন্ত সুপরিচিত বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক সাহেব বলেছেন বিচারপতি শুধু প্রধান বিচারপতি থেকে সরবেননা দেশ ছেড়েও তাকে পালাতে হবে!! মানিক ভাইকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি। দীর্ঘদিন তিনি লন্ডনে ছিলেন। তার সাথে আমার বেশ কিছু দুঃখের স্মৃতি রয়েছে। একবার ২০১১ অথবা ২০১২ সালে চ্যানেল আইর লন্ডন ষ্টুডিওতে এসেছিলেন আমার টক শোতে। সে রাতে বিএনপি একদল নেতা কর্মী চলে এসেছিলেন তাকে অপদস্ত করতে। আমি তখন আমার ষ্টুডিও থেকে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বের হয়ে পড়েছিলাম———-। মানিক ভাই অনেক ভালো কাজ করেছেন সন্দেহ ন্ইে, তবে আওয়ামীলীগের তিনি একজন অন্ধ ভক্ত এটা অনেকেই স্বীকার করেননা। বছর দুয়েক আগের কথা আমি ঢাকায় মানিক ভাইর বাসায় গিয়েছিলাম, তিনি আমাকে অনেক কথাই বলেছিলেন তবে কথার প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন আওয়ামলীগ সরকার, প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে বিপদে পড়বে এটা তোমাকে বলে দিলাম। আমি বলেছিলাম আপনি হচ্ছেন না কেন? তিনি মুচকি হেসে বলেছিলেন আমাকে দিবেনা সরকার।
সে যাক, বিচারপতি সিনহা সাহেবকে নিয়ে বেশ কিছুদিন আগে বাংলা ষ্টেইটমেন্টে কলাম লিখেছিলাম “মাননীয় বিচারপতি, মন্ত্রী শার্ট আপ প্লিজ“ সে সময় আমার কেন জানি মনে হয়েছিল বিচারপতি বেশী কথা বলছেন। পরবর্তীতে দেখলাম শুধু বিচারপতি নন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের সবাই বেশী কথা বলছেন। বিচারপতিকে দেশ ছাড়া করার জন্য সবাই উঠে পড়ে লাগলেন। আইনমন্ত্রী বললেন, বিচারপতির নাকি ক্যন্সার হয়েছে। বিচারপতি যে দিন দেশ ছাড়লেন সেদিন বাসা থেকে বের হয়ে তিনি বললেন আমি সম্পূর্ণ সুস্থ, আমি আবার ফিরে আসবো। এখন কথা হলো কার কথা সত্য? বিচারপতির না আইনমন্ত্রীর? আইনমন্ত্রী আবার ডিফেন্ড করেছেন তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন এ জীবনে তিনি মিথ্যা কথা বলেননি। এ ও দাবী করেছেন তিনি কার পুত্র। আমি সে সবে যেতে চাইনা। বিচারপতি মিথ্যা বলছেন ধরে নিয়েই যদি বলি মাননীয় আইনমন্ত্রী সদা সর্বদা সত্য কথা বলেন, তাহলে কি তাকে আমরা এ জীবনের আল আমীন উপাধি দিতে পারি?
মাননীয় বিচারপতিকে নিয়ে যে ভানুমতির খেলা খেললো সরকার, তাতেই আমার কেন জানি মনে হয়েছিল বিচার বিভাগের বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে সরকার। কি দরকার ছিল এ সবের?
বিঃদ্রঃ শীঘ্রই দেশে ফিরছেন বিচারপতি? কখন কিভাবে ফিরবেন হয়তো অনেকেই জেনে ফেলেছেন ইতিমধ্যে যে কারনে সুর পাল্টে গেছে অনেকের। সিইসি যে বক্তব্য রেখেছেন তাতেই প্রমানিত হয় এ বক্তব্য সিইসির নিজের নয়। কেউ হয়তো তাকে দিয়ে বলাচ্ছে? সে কে? সে কি সব সময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবে? সে সবের খবর জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জানেন আওয়ামীলীগের হাইকমান্ড। কিছুটা জানেন হয়তো ম্যডাম জিয়া???
লন্ডন তারিখ ১৭/১০/১৭
লেখক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব, সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা ষ্টেইটমেন্ট ডট কম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
উৎসঃ বাংলাস্টেটমেন্ট, লন্ডন।