৭৬৪ বছর ধরে মুসলমান শাসক
৭৬৪ বছর ধরে মুসলমান শাসক, এদেশ শাসন করার পরও ভারতবর্ষে হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ধর্মের মানুষেরা সুরক্ষিত ছিলো এবং আজও আছে । মুসলিম শাসকেরা কখনোই এই পূণ্যভুমির চরিত্র বদল করার প্রয়োজন অনুভব করেনি । বরং এদেশ এবং দেশের মানুষকে একান্ত আপন করে নিয়েছিল । নিজ মাতৃক্রোড় হতে জন্মানো ভাই-বোন এর মত লালন পালন করেছিল । ব্যাক্তি অথবা ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেননি । যুগ যুগ ধরে ইতিহাস সেই সাক্ষ্য বহন করে চলেছে … ১) ১১৯৩ মোহম্মদ ঘোরী ২) ১২০৬ কুতুবউদ্দিন আইবক ৩) ১২১০ আরাম শাহ ৪) ১২১১ ইলতুতমিস ৫) ১২৩৬ ফিরোজ শাহ ৬) ১২৩৬ রাজিয়া সুলতান ৭) ১২৪০ বৈরাম শাহ ৮) ১২৪২ আলাউদ্দিন মসুদ শাহ ৯) ১২৪৬ নাসিরুদ্দিন মহম্মদ ১০)১২৬৬ গিয়াসউদ্দিন বলবান ১১) ১২৮৬ কৈ খুশরো ১২) ১২৮৭ মইজুদ্দিন ১৩) ১২৯০ শমুউদ্দিন ১২৯০ পর্যন্ত গোলাম বংশ সমাপ্ত( শাসন কাল প্রায় ৯৭ বছর) . খিলজী বংশ ১) ১২৯০ জালালউদ্দিন ফিরোজ খিলজী ২) ১২৯৬ আলাউদ্দিন খিলজী ৩) ১৩১৬ সাহাবুদ্দিন ওমর শাহ ৪) ১৩১৬ কুতুবউদ্দিন মুবারক শাহ ৫) ১৩২০ নাসিরুদ্দিন খুশরো শাহ ৬) ১৩২০ খিলজী বংশ সমাপ্ত। (শাসনকাল প্রায় ৩০ বছর) . তুঘলক বংশ ১) ১৩২০ গিয়াসউদ্দিন তুঘলক (প্রথম) ২) ১৩২৫ মহম্মদ বিন তুঘলক(দ্বিতীয়) ৩) ১৩৫০ ফিরোজ সাহ তুঘলক ৪) ১৩৮৮ গিয়াসউদ্দিন তুঘলক (দ্বিতীয়) ৫) ১৩৮৯ আবু বকর শাহ ৬) ১৩৮৯ মহম্মদ তুঘলক (তৃতীয়) ৭) ১৩৯৪ সিকন্দর শাহ (প্রথম) ৮) ১৩৯৪ নাসিরুদ্দিন শাহ (দ্বিতীয়) ৯) ১৩৯৫ নসরত সাহ ১০) ১৩৯৯ নাসিরুদ্দিন মহম্মদ শাহ দ্বিতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় ১১) ১৪১৩ দৌলত শাহ ১৪১৪ তুঘলক বংশের সমাপ্তি (শাসন কাল প্রায় ৯৪ বছর) . সৈয়দ বংশ ১) ১৪১৪ খিজ্র খান ২) ১৪২১ মইজুদ্দিন মুবারক শাহ (দ্বিতীয়) ৩) ১৪৩৪ মহম্মদ শাহ (চতুর্থ) ৪)১৪৪৫ আলাউদ্দিন আলম ৫) ১৪৫১ সৈয়দ বংশ সমাপ্ত (শাসন কাল ৩৭ বছর প্রায়) . লোদী বংশ ১ ১৪৫১ বহলোল লোদী ২) ১৪৮৯ সিকন্দর লোদী (দ্বিতীয়) ৩) ১৫১৭ ইব্রাহিম লোদী ১৫২৬ ইব্রাহিম বংশ সমাপ্ত (শাসন কাল ৭৫ বছর প্রায়) মুঘল বংশ ১) ১৫২৬ জাহিরুদ্দিন বাবর ২) ১৫৩০ হুমায়ুন ৩) ১৫৩৯ মুঘল বংশের মধ্যান্তর। . সুরী বংশ ১) ১৫৩৯ শের শাহ সুরী ২) ১৫৪৫ ইসলাম শাহ সুরী ৩) ১৫৫২ মহম্মদ শাহ সুরী ৪) ১৫৫৩ ইব্রাহিম সুরী ৫) ১৫৫৪ ফিরোজ সাহ সুরী ৬) ১৫৫৪ মুবারক খান সুরী ৭) ১৫৫৫ সিকন্দর সুরী সুরী বংশ সমাপ্ত (শাসনকাল ১৬ বছর প্রায়) মুঘল বংশের পুনঃ আরম্ভ ১) ১৫৫৫ হুমায়ুন দ্বিতীয় বার সিংহাসনে ক্ষমতায় আসলেন ২) ১৫৫৬ জালালউদ্দিন আকবর ৩) ১৬০৫ জাহাঙ্গীর সলীম ৪) ১৬২৮ শাহজাহান ৫) ১৬৫৯ ঔরঙ্গজেব ৬) ১৭০৭ শাহ আলম (প্রথম) ৭) ১৭১২ জহাদর শাহ ৮) ১৭১৩ ফারুকশিয়র ৯) ১৭১৯ রইফুদ রাজন ১০)১৭১৯ রইফুদ দৌল্লা ১১) ১৭১৯ নেকুশিয়ার ১২) ১৭১৯ মহমুদ শাহ ১৩) ১৩৪৮ আহমেদ শাহ ১৪) ১৭৫৪ আলমগীর ১৫) ১৭৫৯ শাহ আলম ১৬) ১৮০৬ আকবর শাহ ১৭) ১৮৩৭ বাহাদুর সাহ জাফর ১৮৫৭ মুঘল বংশ সমাপ্ত (শাসনকাল -৩১৫ বছর প্রায়) তারপর- পরাধীন ভারত, ব্রিটিশ রাজ । ১৮৫৮ লর্ড ক্যানিং – ১৯৪৭ লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন প্রায় ২০০ বছর । ইংরেজরাও ভারতীয়দের এই চরিত্র বদলানোর চেষ্টা করেনি । স্বাধীন ভারত : ১৯৪৭ থেকে ২০১৭ বিগত ও বর্তমান কয়েকটা বছর বাদ দিলে প্রায় ৬০ বছর কংগ্রেসি শাসন । জহরলাল নেহেরু থেকে মনমোহন কেউই কখনো চাইনি ভারতবর্ষের ঐক্যতান নষ্ট হোক । কংগ্রেস মুক্ত দেশ গঠনের স্লোগান দিয়ে দিল্লির মসনদ দখল করলো তিলকধারী গেরুয়া ব্রিগেড । মাত্র ৩ বছর অতিক্রান্ত তাতেই জনগণ ত্রাহি ত্রাহি রব ছাড়ছে । হিন্দু হৃদয় সম্রাট মোদিকে গদিতে বসিয়ে বদলে ফেলতে চায় ভারতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী চরিত্র । যুক্তির নামে কুযুক্তির আধিপত্যবাদ । গেরুয়া আগ্রাসনের হুংঙ্কার সর্বত্র । মাত্র ৩১% মানুষের সমর্থনে গড়ে ওঠা সরকার বিশ্বের সর্ববৃহৎ গনতন্ত্রকে মজাকে পরিনত করে চলেছে । ‘জোর যার মূলক তার’ নীতিমালায় বিশ্বাসী । নেই কারোও পরওয়া । বিপক্ষ বা বিরোধী শক্তির সমস্ত প্রতিবাদকে নস্যাৎ করতে বদ্ধ পরিকর । সংসদীয় গনতন্ত্র আজ মূল্যহীন । যেই প্রতিবাদ করবে তার কন্ঠ রোধ করার জন্য চলে চক্রান্ত । তোমরা যে যায় বল ভাই আমরা হিন্দু রাষ্ট্র চাই .. ধর্মের নামে জিগির তুলে – মুসলমান কর্তৃক হিন্দু রা অসুরক্ষিত । হিন্দুরা নাকি ভারতবর্ষ তথা বাংলায় নাকি সংখ্যালঘু । সংখ্যালঘু তো অবশ্যই! তবে হিন্দুরা নয় তোরা । তোরা যারা হিন্দুত্বের নামে গৈরিক উন্মাদনা সৃষ্টি করছিস । ভারতবর্ষের প্রকৃত ঐতিহ্যকে যারা নষ্ট করে । দাঙ্গার দাবানলে যারা ভারত ভুমিকে দগ্ধ করতে চায় । শুনে রাখ দাঙ্গাকারির দল ভারতবর্ষের মাটি তোদের কখনো ক্ষমা করেনি আগামীতেও করবে না । ভারতবর্ষের সংবিধান বদলে ফেলার এই ঘৃনাত্মক প্রয়াস কখনোই সফল হবে না ।।।। “চিনতে নেরে আঁধার রাতে করি মোরা হানাহানি, সকাল হলে হবে রে ভাই ভায়ে ভায়ে জানাজানি | কাঁদব তখন গলা ধ’রে, / চাইব ক্ষমা পরস্পরে, হাস্ বে সে দিন গরব ভরে এই হিন্দুস্থান” || (((কবি বিদ্রোহী কাজী নজরুল))) ((সংগৃহীত ))