সৌদি রাজপরিবারের নির্দেশে খাশোগিকে টুকরো টুকরো করে হত্যা

October 11, 2018 8:22 pm0 commentsViews: 13

১৫ জনের একটি হত্যাকারী টিম সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যা করেছে বলে বিস্ফোরণ প্রতিবেদন ছাপায় নিউইয়র্ক টাইমস।

পত্রিকাটিতে বলা হয়েছে সৌদি আরবের রাজ পরিবারবিরোধী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে দেশটির শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে হত্যা করা হয়েছে। এতে বলা হয়, সৌদি আরব থেকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গিয়ে ১৫ জনের একটি ঘাতক টিম ওই হত্যা মিশনে অংশ নেয়।

তারা সৌদি আরব থেকে ইস্তাম্বুলে পৌঁছেই দুটি ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে ওঠে। সেখান থেকে সরাসরি ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে চলে যায়।

সাংবাদিক খাশোগি কনস্যুলেটে পৌঁছার আগেই তারা হত্যার জন্য সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। খাশোগি সেখানে প্রবেশের পর তারা তাকে হত্যা করে। হত্যার পর তার মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়।

পত্রিকাটি লিখেছে, ঘাতক দলে একজন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি সঙ্গে করে একটি করাত নিয়ে এসেছিলেন। ওই করাত দিয়েই তাকে টুকরো টুকরো করা হয়। হত্যা মিশন শেষ হতে দুই ঘণ্টা সময় লেগেছে। মিশন শেষে ঘাতকরা দ্রুত তুরস্ক ত্যাগ করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলে যায়।

দুটি প্রাইভেট বিমানে করে ঘাতকরা তুরস্কে গিয়েছিল।

আমেরিকায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনে থাকা জামাল খাশোগি তার তুরস্কে থাকা বান্ধবীকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে যান। কিন্তু সেখান থেকে তিনি আর ফিরে আসেননি।

সৌদি রাজার প্রতি ট্রাম্পের উপহাস ও যুবরাজের মোসাহেবির রহস্য

সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান বলেছেন, জ্বালানি তেলের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবিগুলো সৌদি সরকার পূরণ করেছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্টকে সহযোগিতা দিতে তিনি ব্যাকুল হয়ে আছেন।

ট্রাম্প সৌদি সরকারকে জ্বালানি তেলের উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য চাপ দিয়ে আসছেন যাতে তেলের অন্যতম প্রধান উৎস ইরান তেল রপ্তানি কমিয়ে দিলেও বিশ্ব-বাজারে তেলের যোগান কমে না যায় এবং সস্তায় তেল কেনা যায়! ট্রাম্পের সেই দাবি পূরণ করা হয়েছে বলে বিন সালমান এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করলেন।

বিন সালমানের সাক্ষাৎকারের একদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আমেরিকার সেনা-সমর্থন ছাড়া রাজা সালমান দুই সপ্তা’ও ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তিনি বলেন, মার্কিন সরকারই সৌদি আরবকে রক্ষা করছে। তাই মার্কিন বাহিনীর জন্য সৌদিকে অর্থ দিতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও কয়েকবার এ জাতীয় কথা বলেছেন। তিনি একবার সৌদি সরকারকে দুধের গাভীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, এই গাভী যতদিন দুধ দেবে ততদিন তাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
ট্রাম্পকে সোনার চেইন উপহার দেন রাজা সালমান

জনগণের শক্তির পরিবর্তে মধ্যপ্রাচ্যের রাজতান্ত্রিক সরকারগুলোর মত সৌদি সরকারও নিরাপত্তাসহ নানা ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের ওপর প্রায় শতভাগ নির্ভরশীল হওয়ায় এইসব সরকার হোয়াইট হাউজের কাছে সম্মানজনক মিত্রের মর্যাদা পায় না, বরং সেবাদাস হিসেবেই স্বীকৃত।

আর এইসব সরকারের পরাধীনতার শেকল এতই মজবুত যে তারা মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবমাননা নিরবে হজম করতে বাধ্য। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবমাননাকর বক্তব্য প্রসঙ্গে সৌদি যুবরাজ বিন সালমান বলেছেন, যে কোনো বন্ধু আপনার সম্পর্কে ভালো ও মন্দ কথা বলতেই পারে। আমি তো ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতার প্রবল অনুরাগী!
মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে সৌদি আরবের প্রতি অবমাননাকর বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ বলেছেন, এই অবমাননা নিজ দেশের নিরাপত্তার দায়িত্ব বিদেশিদের হাতে অর্পণ করার পুরস্কার। তিনি এ ধরনের অবমাননার হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি শক্তিশালী মধ্যপ্রাচ্য গঠনের জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সৌদি সরকার মাঝে মধ্যেই এটা দেখাতে চায় যে তার সব শত্রুতা বা প্রতিযোগিতা কেবল ইসলামী ইরানের সঙ্গেই। তাই মার্কিন সরকারসহ অন্য কোনো মিত্র সরকারের অপমানজনক কথা সহ্য করা বা তাদেরকে চাঁদা দিয়ে চলাটা সৌদি সরকারের জন্য স্বাভাবিক বিষয়!

আসলে জনগণের শক্তি ও নৈতিক শক্তি না থাকার কারণেই দুর্বল সরকারগুলো পরাশক্তিগুলোর আচল ধরে বা তাদের লেজুড়বৃত্তি করে টিকে থাকতে চায়। অন্যদিকে পরাশক্তিগুলোও তা বুঝতে পেরে এসব লেজুড় সরকারের কাছ থেকে সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক ফায়দা তুলতে থাকে।

সৌদি সরকারের যদি বিন্দুমাত্র আত্মসম্মানবোধ ও জনগণের শক্তির নিয়ে মাথা উঁচু করার ইচ্ছা থেকে থাকে তাহলে তার উচিত ইরানসহ গণতান্ত্রিক প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদার করা এবং পরাশক্তিগুলোর হস্তক্ষেপের সুযোগ বন্ধ করতে সন্ত্রাসী ও বিভেদকামী নীতি পরিত্যাগ করা।

ভঙ্গুর হয়ে উঠেছে সৌদি আরব : ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে, দেখুন

সৌদি আরবের স্থিতিশীলতা দিন দিন ভঙ্গুর হয়ে উঠেছে। দেশটির সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তরুণ যুবরাজের উপযুক্ততা নিয়ে এ অবস্থার তৈরি হয়েছে। আরবি ভাষার পত্রিকা আল-মনিটর এ মন্তব্য করেছে।

পত্রিকাটি বলছে, যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান সিংহাসনের উত্তরাধিকারি হওয়ায় তিনি দেশের ভেতরে ও বাইরের যেকোনো বিষয়ে খেয়ালখুশি মতো সিদ্ধান্ত নেন যা সৌদি আরবকে বহু প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে এমনকি দেশটির ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আল-মনিটর বলছে, গত ৫০ বছরে সৌদি আরবের স্থিতিশীলতা কখনো এত বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েনি।

১৯৬৪ সালে রাজা ফয়সাল তার দুর্নীতিগ্রস্ত ভাইকে বাদ দিয়ে যে উত্তরাধিকার নির্বাচন করেছিলেন তা ছিল সব রকমের প্রশ্বের ঊর্ধ্বে এবং স্বচ্ছ।

রাজা ফয়সালের শাসনামলে বিশেষ করে ১৯৭৩ সালের তেল নিষেধাজ্ঞার সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ব্যাপক। তার হত্যাকাণ্ড কিংবা সন্ত্রাসীদের হাতে মসজিদুল হারামের দখলের ঘটনা বাদ দিলে দেশের স্থিতিশীলতা ছিল অনেক উঁচুতে।

কিন্তু যুবরাজ বিন সালমানের কারণে এখন সেই স্থিতিশীলতা নেই।

প্রতিবেশী ইয়েমেনে যে সামরিক আগ্রাসন চলছে তা যুবরাজের ব্যক্তিগত ইচ্ছাতেই হয়েছে কিন্তু তাতে সৌদি আরবের জন্য কোনো সফলতা নেই। হুথি যোদ্ধারা এ পর্যন্ত সৌদি আরবের ভেতরে ৬০ হাজার রকেট এবং অন্তত ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়েছে।

অন্যদিকে, মার্কিন সমর্থন ছাড়া ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধ করাও সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের এ পর্যন্ত ৫০০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে যা সৌদি আরবকে আরো বেশি অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আঞ্চলিক অনেকগুলো সংকট যাতে যুবরাজের সংশ্লিষ্টতাই বেশি।

এবার ট্র্যাম্পকে সৌদি যুবরাজের কড়া জবাব

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়াই নিজ শক্তিতে দুই হাজার বছর টিকে থাকতে পারবে সৌদি আরব, কিন্তু মার্কিনিদের মতো কোনো গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি হতে হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি সিংহাসনের উত্তরসূরি মোহাম্মদ বিন সালমান।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সহায়তা ছাড়া দুই সপ্তাহও ক্ষমতায় টিকে থাকার মুরোদ নেই সৌদি বাদশাহর। কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ তাকে শোধ করতে হবে।

ট্রাম্পের এ মন্তব্যের জবাবে যুবরাজ মোহাম্মদ বলেন, আমি তার সঙ্গে কাজ করতে ভালোবাসি। আপনারা জানেন, আপনাকে এটা মানতেই হবে, যে কোনো বন্ধু খারাপ ও ভালো বিষয়গুলোই বলতে পারেন।

‘কাজেই যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আমরা যত অস্ত্র পেয়েছি, তার দাম শোধ করেছি। কোনো কিছুই বিনামূল্যে দেয়া হয়নি। সৌদি ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক শুরু হওয়ার পর থেকে সবকিছুই আমরা অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করেছি।’

গত মঙ্গলবার মিসিসিপিতে এক সমাবেশে মিত্রদেশ সৌদি আরব নিয়ে সবচেয়ে তিক্ত কথাটি বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এমন কঠিন বাক্যবিনিময়ের পরেও দেশদুটির মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট রয়েছে। মধ্যেপ্রাচ্যে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানের আধিপত্য রুখতে যেটাকে সুরক্ষাপ্রাচীর হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

শুক্রবার ব্লুমবার্গকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমবিএস নামে খ্যাত মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন, তারা বিনামূল্যে দাস পেতে চেয়েছে। কিন্তু গৃহযুদ্ধ দিয়ে তার মূল্য শোধ করতে হয়েছে। এতে কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিভক্ত ছিল।

এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে হাজার হাজার মানুষকে জীবন বিলিয়ে দিতে হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন এমবিএস।

‘কিন্তু আমরা কোনো গৃহযুদ্ধ ছাড়াই উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমাদের দেখতে হচ্ছে, যাতে দেশের উৎপাদন ব্যাহত না হয় এবং সবকিছুতে উন্নয়ন অব্যাহত থাকে,’ বলেন এমবিএস।

সৌদি সরকার দুই সপ্তাহও টিকবে না’ বলে ট্র্যাম্পের হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া সৌদি সরকার দুই সপ্তাহও টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২ অক্টোবর ২০১৮ মঙ্গলবার মিসিসিপি’তে এক সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন। ট্রাম্প বলেন, সৌদি রাজাকে আমি বলে দিয়েছি যে, মার্কিন সামরিক সমর্থন ছাড়া আপনি ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না।

সমাবেশে উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবকে সুরক্ষা দিচ্ছি। আপনারা বলতে পারেন তারা ধনী। আমিও রাজা সালমানকে ভালোবাসি। কিন্তু আমি রাজাকে বলে দিয়েছি যে, আপনাকে আমরা সুরক্ষা দিচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া আপনি দুই সপ্তাহও টিকতে পারবেন না।’

সৌদি রাজাকে ঠিক কবে এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন তা অবশ্য পরিষ্কার করেননি ট্রাম্প।

মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব খর্ব করার বিষয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে ইসরায়েল ঘেঁষা একটি কথিত শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নেও সৌদি আরবকে পাশে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলেও খবর বেরিয়েছে।

এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনি প্রচারণাতেও সৌদি আরব ইস্যুতে সরব ছিলেন ট্রাম্প। ২০১৬ সালে উইকনসিস রাজ্যে এক নির্বাচনি প্রচারণায় তিনি বলেন, আমরা সৌদি আরবকে সুরক্ষা দিচ্ছি্। কেউ তাদের সঙ্গে বিবাদে জড়াতে আসে না। কারণ আমরা তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছি। রিয়াদ এর বিনিময়ে উপযুক্ত মূল্য পরিশোধ করছে না। ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।

২০১৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি মন্তব্য করেন, প্রাথমিকভাবে তেলের কারণেই আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছি। এখন আমাদের তেলের এতো প্রয়োজন নেই।

২০১৮ সালের এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে একাধিক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি ইস্যুতে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সৌদি আরব যদি সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত দেখতে চায় তাহলে তাদের ওয়াশিংটনকে অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া মার্কিন সেনাদের পাশাপাশি সিরিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোরও নিজস্ব বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা আইএস’কে পরাজিত করার কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছি। শিগগিরই আমরা অন্যদের সঙ্গে সমন্বয়ের ব্যাপারে একটি নতুন সংকল্পে আসবো। আমাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সৌদি আরব খুবই আগ্রহী। আমি তাদের বলে দিয়েছি যে, আপনারা চাইছেন যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় অবস্থান করুক। তাহলে আপনারাই হয়তো এর জন্য অর্থ পরিশোধ করতে যাচ্ছেন।

ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পর এক বিবৃতিতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেছেন, সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতির জন্য কাতারকে অবশ্যই অর্থ দিতে হবে। সিরিয়ায় তাদের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট কাতারের সুরক্ষা বাতিলের আগেই তাদের এটা করতে হবে।

কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি নিয়েও কথা বলেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সেনা সরিয়ে নিলে এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে কাতার সরকারের পতন ঘটবে।’

গত মার্চে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সৌদি আরবের অঢেল সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে যুবরাজের প্রতি আহ্বান জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, সৌদি আরব খুব ধনী দেশ। নিজেদের সম্পদের কিছু অংশ তারা যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে যাচ্ছে। দুনিয়ার সেরা সামরিক সরঞ্জামাদি কেনার জন্য, মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থানের জন্য তারা এই অর্থ দেবে। তাদের মার্কিন অস্ত্র ক্রয়ের কারণে শত শত কোটি ডলার ঘরে তুলতে সক্ষম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অস্ত্র ব্যবসায় ৪০ হাজার মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা

পল্টি নিলো সৌদি আরব, বিস্তারিত দেখুন ভিডিওটিতে

তেলের দাম কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানের জবাবে সৌদি আরবের জ্বালানিমন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ বলেছেন, তেলের দাম নির্ধারণে তিনি কোনও হস্তক্ষেপ করেন না। ওপেক ও রাশিয়ার মতো সহযোগীদের সঙ্গে সম্মেলনের আগ মুহূর্তে আলজিয়ার্সের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খালিদ আল ফালিহ। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়ে এ মাসে ৮০ ডলার প্রতি ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষ্য, ‘আমরা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোকে নিরাপত্তা দেই। আমরা না থাকলে তারা খুব বেশিদিন নিরাপদে থাকতে পারবে না। তারপরও দিন দিন তারা তেলের দাম বাড়িয়ে চলেছে। আমরা কিন্তু মনে রাখব। ওপেককে তেলের দাম কমাতে হবে।’

সৌদি আরব জানিয়েছে তাদের তেল উৎপাদন বাড়ানোর সক্ষমতা আছে। কিন্তু এখন এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দরকার নেই। রাশিয়ারও একই মত। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি লিখেছে, মূলত ইরানি তেল রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিণতিতেই তেলের সরবরাহ কমে গেছে এবং সেই সূত্রে দাম বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে।

ফালিহর ভাষ্য, ‘আমার কাছে যে তথ্য আছে তা হলো: বাজারে যথেষ্ঠ পরিমাণ তেলের যোগান রয়েছে এবং এমন কোনও তেল পরিশোধনাগার নেই যারা তেলের অভাবে কাজ করতে পারছে না।’

রাশিয়ার জ্বালানিমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক মনে করেন, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক তেলের যোগান কমে যাওয়া ও মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। তিনিও মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎপাদন বৃদ্ধির কোনও প্রয়োজন নেই।

..

 

 

 

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com