সেতু ভবনে সাংবাদিক নাজেহাল, প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা!
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সেতু ভবনে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নাজেহালের ঘটনাও ঘটছে।
জানা গেছে, সেদিন সকালে সেতু ভবনে যান আমাদের সময়ের তাওহীদুল। পেশাগত কাজ শেষে বের হওয়ার পথে তার পথ আটকান সেতু কর্তৃপক্ষের রিসিপশনিস্ট শহীদুল।
শহীদুল পদ্মা সেতু প্রকল্পে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত। তার বক্তব্য, ‘আপনাকে ঢুকতে দেয়ার কারণে আমার চাকরি চলে যাচ্ছে।’
এরপর এ সাংবাদিককে গেট থেকে নিয়ে যান তিন তলায় সেতু কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুল আলমের কক্ষে। মনিরুল আলম তখন এই সাংবাদিক কিভাবে ঢুকেছেন, কোন কোন অফিসারের কাছে এবং কী কাজে গেছেন তার ব্যাখ্যা চান।
এর জবাবে পেশাগত কাজে অফিসারদের কাছে যাওয়া হয় এমনটি বললে ক্ষেপে যান এই কর্মকর্তা। তিনি তখন রিসিপশনিস্টকে বলেন, এরপর থেকে উনিসহ কোন সাংবাদিক যেন ভেতরে ঢুকতে না পারে।
একথার পর আমাদের সময়ের পক্ষ থেকে উপ-সচিব মনিরুল আলমকে বিনয়ের সঙ্গে বলা হয়, সাংবাদিকরা সাধারণত সচিবালয়সহ যে কোন স্থানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন। এক্রিডিটেশন কার্ড থাকলে পাশ নেওয়ার প্রয়োজন হয় না।
একথার পর আরও উত্তেজিত হয়ে যান এই কর্মকর্তা। কারও অনুমতি ছাড়া ভেতরে প্রবেশ নিষেধ বিষয়টি মনে করিয়ে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকের সেতু ভবনে কোনো কাজ নেই। দরকার মনে করলে দাওয়াত দেয়া হবে।’
মনিরুল আলম বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত আমার ভাই; তিনি যুগ্ম সচিব। ফলে সাংবাদিকতা সম্পর্কে বেশ জানি। কারও কাছে যেতে হলে সেতু ভবনের গেটে নিচে বসে থাকবে। ভেতর থেকে অনুমতি দিলেই কেবল প্রবেশের সুযোগ।’
এরপর সচিবের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি বাধা দেন। তার রুমে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখেন। পরে গেট থেকে বের হওয়ার পথে আবারও পথ আটকে দেন রিসিপশিনিস্ট শহীদুল। তিনি এই সাংবাদিককে বলেন, বাইরে যেতে পারবেন না।
এবার পরিচালক (প্রশাসন) এম কায়সারুল ইসলামের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনিও উপ-পরিচালকের সুরে বলতে থাকেন- ‘সাংবাদিকের ভেতরে কাজ নেই। সুনির্দিষ্ট কারণ ব্যাখ্যা দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার অনুমতি সাপেক্ষে যেতে হয়।’
কিন্তু জোর করে কেউ ভেতরে ঢুকেছে কিনা অথবা প্রতিবেদকের অপরাধ কী এমনটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভেতরে ঢোকা অপরাধ।
ভেতরে আটকে রাখাসহ ঘটনার বিস্তারিত ফোনে জানানো হয় মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা শেখ ওয়ালিদ ফয়েজকে। তার হস্তক্ষেপে পরবর্তীতে সেতু ভবন থেকে বের হন এই সাংবাদিক।
সাংবাদিক প্রবেশ নিয়ে এই অবস্থানের কারণ জানতে ফোন করা হয় সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে। তিনি উল্টো জিজ্ঞেস করেন, ‘সাংবাদিকের কাজ কী সেতু ভবনে?’
তথ্য সংগ্রহের কথা তুলে ধরলে তিনি বলেন, ব্রিফিং ছাড়া সাংবাদিকের কোনো কাজ থাকতে পারে না।
সূত্রঃ পরিবর্তন