সুখী মানুষ বনাম অসুখী মানুষ।
নিউইয়র্ক থেকে ড ওমর ফারুক। তারিখঃ ৮ অক্টোবর ২০১৮।।
০১. সুখী মানুষ প্রতিদিন বই পড়েন। অসুখী মানুষ প্রতিদিন টেলিভিশনে কিরণমালা জাতীয় অনুষ্ঠান দেখেন।
০২. সুখী মানুষ বরাবরই অন্য মানুষ সম্পর্কে ইতিবাচক চিন্তা করেন এবং অন্যদের ভাল কাজের প্রশংসা করেন। মন্দ কাজ দেখলে গঠনমূলক সমালোচনা ও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিয়ে সংশোধনের সুযোগ থাকলে, সে পদক্ষেপ নেন। অসুখী মানুষ বরাবরই অন্য মানুষের গঠনমূলক ও সংশোধনের উদ্দেশ্যে সামালোচনা না করে নেতিবাচক সামলোচনা করেন।
০৩. সমাজ পরিবর্তনশীল। সুখী মানুষ পরিবর্তন ও সামজের গতিশীলতাকে সহজে বরণ করতে পারেন। অন্যদিকে অসুখী মানুষ পরিবর্তনকে ভয় পান। নিজে সেটির সাথে সামঞ্জস্য বিধান তো করতে পারেন না, বরং তখন উল্টো সে পরিবর্তনশীলতাকে সমালোচনা করে নিজের দায় ভার এড়াতে প্রয়াসী হন।
০৪. সুখী মানুষ অন্যদের মার্জনা করে দেন। অসুখী মানুষ অন্যদের কেবল দোষারোপই করেন। নিজেকে বরাবরই নির্দোষ হিসেবে উপস্থাপনে প্রয়াসী হন।
০৫. সুখী মানুষ নতুন নতুন জ্ঞান, প্রযুক্তি, চিন্তা ও বিশ্লেষণমূলক ধারণা নিয়ে কথা বলেন। নতুন নতুন আইডিয়া তিনি ধারণ করেন ও অন্যদের তা অনুশীলনে প্রয়াসী করে েতুলতে চেষ্টা করেন। অসুখী মানুষ কেবল অন্য মানুষ নিয়ে ভাবেন ও কথা বলেন। প্রতিনিয়ত দায় ভার অন্যের ওপর চাপিয়ে দিয়ে জীবন থেকে পলায়ন বৃত্তি মনোভাব েপোষণে প্রবৃত্ত হন।
০৬. সুখী মানুষ নিয়মিত শেখেন। অসুখী মানুষ তা করার কোন মনোবৃত্তি নেই। তিনি নিজেকে সব জান্তা মনে করেন। অন্যের মতামতের প্রতি তার খুব একটি শ্রদ্ধা থাকে না।
০৭. সুখী মানুষের আরেকটি বড় বৈশিষ্ট্য হল, তিনি নিজের ব্যর্থতার দায় নিতে জানেন। শুধু তাই নয়, সে ব্যর্থতার কারণ উদ্ভাবনে প্রয়াসী হন এবং পরবর্তীতে ব্যর্থতার কারণগুলো সমাধানে প্রয়াসী হন। অসুখী মানুষ নিজের ব্যর্থতার দায় ভার অন্যের ওপর চাপিয়ে নিজেকে দায়মুক্ত করে খালাস হতে চান।
০৮. সুখী মানুষ লক্ষ্য স্থির করে জীবনের পরিকল্পনা ঠিক করেন। অসুখী মানুষ বরাবরই হতাশা ও কখনও কখনও হীনমন্যতায় ভোগেন।
০৯. সুখী মানুষ নৈতিক মূল্যবোধ বিবর্জিত জীবনকে ঘৃণা করেন। অসুখী মানুষ মূল্যবোধের অবক্ষয় ধারণ করতেই বেশি প্রয়াসী হন।
১০. সুখী মানুষ স্রষ্টায় বিশ্বাসী হন এবং তিনি মনে করেন স্রষ্টা তাকে এমনেতেই সৃষ্টি করে এ জগতে পাঠান নি। তিনি কিছু দায় াদয়িত্বও তার ওপর অর্পণ করেছেন। বিশেষ করে খেদমতে খালক্ক ও খেদমতে মাখলুকাত – এ দু’ বিষয়ে সুখী মানুষ সচেতন থাকেন। অসুখী মানুষ স্রষ্টার প্রতি দায়িত্ব বা খেদমতে খালক্ক সম্পর্কে যেমন উদাসীন থাকেন, তেমনি সৃষ্টির প্রতি দায়িত্ব বা খেদমতে মাখলুকাত সম্পর্কেও কোন চিন্তা তার মাথায় কাজ করে না। আমার বাবা আব্দুর রহিম চৌধুরী সাহেব তাঁর জীবদ্দশায় প্রায়ই বলতেন, যে তার স্রষ্টাকে চেনে ও স্রষ্টার প্রতি দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন, সে মানুষ অন্য সকলের দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন হয়ে থাকে।
প্রতিদিন সেটিই করুন, যা আপনাকে আনন্দ দেয়। লক্ষ্য ও আনন্দহীন জীবনের বোঝা বহন করে কোন লাভ নেই। আমার এ লেখাটি ভাল লাগলে অন্যদের কাছে শেয়ার করুন। আমার জন্য দোয়া করুন। মহান আল্লাহ আমাদের জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে সহায় হউন ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আমাদের কবুল করুন। আমিন।