শিশুদের মসজিদে যাওয়া প্রসঙ্গে।

July 2, 2018 8:21 pm0 commentsViews: 58

কে কি বলল, কে অনুমতি দিল আর কে দিল না, কার বাপ দাদা তাকে কি শিখিয়ে গেল, কার পীর ছাব তাকে কি তালিম দিয়ে গেল, এর উপর ইসলামি বিধান নির্ভর করে না। বরং ইসলামের বিধান নির্ভর করে কুরআন এবং সুন্নাহর ভিত্তিতে। ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের মত পাদ্রী বা ঠাকুর নির্ভর নয়। শরিয়তের জ্ঞান আহরণ সকল মুমিন নারী ও পুরুষের জন্য ‍ অবশ্য করণীয় করা হয়েছে। এখন সে মাদ্রাসায় গিয়ে শিখল, না কি বাড়িতে বসে শিখতে পারল, তা বড় কোন ব্যাপার নয়। যেটুকু জ্ঞান না হলে একজন মুসলিম ন্যূনতম জিন্দেগি যাপন করতে পারবে না, সেটুকু তাকে আহরণ করতেই হবে। এরপর তিনি যদি আরও বেশি কোন ভূমিকা রাখেন, সে জন্য জ্ঞানের আরও বেশি গভীরে প্রবেশ করেন, সে তো অনেক ভাল। তাছাড়া একজন লোক চাইলেই অনেক জ্ঞান আহরণ করে বড় স্কলার হতে পারেন না। তার জ্ঞান ও অধ্যবসায়ের জন্য অবশ্যই আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।  কিছু অসাধারণ ব্যুৎপত্তি লাভের অধিকারী জ্ঞানীদের সম্পর্কে অনেক মাদ্রাসা পড়ুয়া মানুষ খামোখাই কুটতর্ক সৃষ্টি করে। 

হাদীসের আলোকে বলা যায়, নামাযের কাতারে প্রথমে প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষরা থাকবেন। যিনি ভাল কোরআন জানেন, তাঁরা ঈমামের পিছনে থাকবেন । আর পিছনে থাকবে শিশুরা। কিন্তু তারা এক সাথে থেকে দুষ্টুমি করার সম্ভাবনা থাকার কারণে তাদেরকে বড়দের কাতারের মাঝখানে মাঝখানে দাঁড় করাবে। আলাদা আলাদা ভাবে যাতে এক শিশু অন্য শিশুর নাগাল না পায়।
অভিভাবক থাকলে শিশুকে নিজের পাশে লাইনের একেবারে বাম বা ডান পাশে রাখবেন । একেবারে শিশু মসজিদে আনবেন না, যারা অবুঝ এবং প্রসাব করতে পারে কিংবা কান্না করতে পারে। নামাজে অন্যের বিঘ্ন যাতে না ঘটে, তা ছেলেকে শিক্ষা দেয়া অভিভাবকের দায়িত্ব।
নামাজে উৎসাহ প্রদানের প্র‍্যাক্টিস প্রশিক্ষণ করাতে নিয়মিত মসজিদে নিয়ে আসবেন নিজ ছেলেকে তাহলে ছেলে ইন শাহ আল্লাহ নেশা খোর হবেনা, পিতা মাতার অবাধ্য হবে না।।
মেয়েদের কে নামাজের প্রশিক্ষণ দিতে ঘরে বেশি নফল নামাজ পড়বেন তাহলে মেয়েও পতিতা হবেনা ইন শাহ আল্লাহ।
সুরা আহযাব ৩৩:৩৪
সুরা ত্বাহারিম ৬৬:৬
★মসজিদ থেকে শিশুদের এমন ভাবে বের করে দেয় যেন শিশুরা কাফের মুশরিক থেকেও খারাফ।
এই অভ্যাস মুরব্বিরা ছাড়তে হবে।
কিয়ামতের দিন আপনি জবাব দিতে হবে কারণ যেই শিশুকে কঠোর ভাবে মসজিদে বকা দিয়ে বের করে দিচ্ছেন সেই যদি মসজিদকে ভয়ের জায়গা মনে করে কিংবা মসজিদে আসার অভ্যাস বাতিল হওয়াতে খারাফ আড্ডায় যায় এই দায় মুরব্বি আপনার জন্য জাহান্নাম।আপনি মানুষ শয়তান ব্যাতিত আর কিছুই নহেন।

বুখারী শরীফে এসেছে- রাসুল (সাঃ) তার নাতনী হযরত উমামা বিনতে যায়নাব (রাঃ) কে বহন করে (কোলে কিংবা কাঁধে) নামাজ আদায় করতেন। যখন তিনি দন্ডায়মান হতেন তখন তাকে উঠিয়ে নিতেন আর সিজদাহ করার সময় নামিয়ে রাখতেন ।
আমরা একদা যুহর কিংবা আসর নামাজের জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম। বেলাল (রাঃ) রাসুল (সাঃ) কে নামাজের জন্য ডাকলেন। রাসুল (সাঃ) তার নাতনী হযরত উমামাহ (রাঃ) কে কাঁধে করে নিয়ে আমাদের কাছে আসলেন। রাসুল (সাঃ) ইমামতির জন্য নামাজের স্থানে দাড়ালেন আমরা তার পিছনে দাঁড়িয়ে গেলাম অথচ, সে (উমামাহ রা.) তার স্থানে তথা রাসুল (সাঃ) এর কাধেই আছে। রাসুল (সাঃ) নামাজের তাকবির দিলেন আমরাও তাকবীর দিলাম। রাসুল (সাঃ) রুকু করার সময় তাকে পাশে নামিয়ে রেখে রুকু ও সিজদাহ করলেন। সিজদাহ শেষে আবার দাড়ানোর সময় তাকে আগের স্থানে উঠিয়ে নিতেন। এভাবে নামাজের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাকাতেই তিনি এমনটি করে যেতেন।
(সুনান আবু দাউদ ৯২০)

এ ছাড়াও রাসুল (সাঃ) এর খুতবা দেয়ার সময় তার নাতি হাসান ও হুসাইন (রাঃ) আসলে তিনি খুতবা দেয়া বন্ধ রেখে তাদেরকে জড়িয়ে ধরে আদর করতেন, কোলে তুলে নিতেন চুম্বন করতেন আর বলতেন খুতবা শেষ করা পর্যন্ত আমি ধৈর্য ধারণ করতে পারব না। তাই, আমি খুতবা দেয়া বন্ধ করেই এদের কাছে চলে এসেছি।
(নাসায়ী শরীফ)

মুহাম্মাদ সঃ নিজে বাচ্চাদেরকে কোলে রেখে নামায পড়িয়েছেন।
 আমাদের কিছু বুজুর্গ-মুসল্লিরা মসজিদেই তাদের উপস্থিতি সহ্য করতে পারেন না। কিছু মুরব্বী ছোট ছেলেদের মসজিদ থেকে বের করে দেয়ার দায়িত্ব কে ফরজ মনে করে। আল্লাহ তাদের হিদায়েত দিন।
এরা মূলত মুর্খ ধার্মিক অহংকারী ধার্মিক জাহেল ধার্মিক।

রাসুলুল্লাহ সঃ বলেছেন
যে আমাদের ছোটদেরকে স্নেহ করে না এবং বড়দেরকে সম্মান করতে জানে না সে আমার দলভুক্ত নয়।
(আবু দাউদ, তিরমীজি, মুসনাদে আহমদ)

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com