রেন্টালের অন্তরালে কী হচ্ছে?>>চুক্তির মেয়াদ বাড়লেও কমেনি বিদ্যুতের দাম
তথ্যমতে, ১৭টি কুইক রেন্টাল ও ১৮টি রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকার প্রতিদিন ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে। যদিও পুরোনো যন্ত্রপাতিতে বিকল থাকা ও জ্বালানি সরবরাহের অভাবে সব কেন্দ্র এক সাথে কখনোই বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। আর ব্যক্তি মালিকানাধীন এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে প্রথমে তিন, পাঁচ ও সাত বছরের চুক্তি করে সরকার। এ সময়ের মধ্যে কেন্দ্রস্থাপনসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সব ধরনের খরচসহ বড় অংকের লভ্যাংশ আদায় করে নিয়েছে রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। যদিও যেসব ক্ষেত্রে রেন্টাল বিদ্যুৎ কেনার ইতিহাস বিশ্বে আছে, বাংলাদেশে সেই প্রেক্ষাপট হয়নি, কখনো ছিল না। তারপরও জরুরি প্রয়োজনে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে দেশবাসী মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু ফের রেন্টাল বিদ্যুতের চুক্তি বাড়ানো হয়েছে। এমনকি সব ধরনের খরচ এরই মধ্যে তুলে নেয়ার পরও নতুন চুক্তিতেও বিদ্যুতের দাম কমেনি। এ অবস্থা ২০২০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকলে এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ কোটি টাকারও বেশি। অথচ রেন্টাল সিস্টেম থেকে গড়ে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রেন্টাল বিদ্যুতের উপর নির্ভর করা একটি রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের ব্যর্থতা। এটা রাষ্ট্রকে জিম্মি করার কৌশল। কারণ, স্বশস্ত্র বাহিনী, বন্দর ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি একটি রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তির অংশ। এর একটিও ভাড়া নিয়ে চলে না। কিন্তু রেন্টালের নামে দেশের বিদ্যুৎ খাত সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। অন্যদের ইচ্ছার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এর পেছনে ব্যবসায়ী নামের এক শ্রেণির মাফিয়া এবং দুর্নীতিবাজ আমলারা রয়েছেন। ফলে রেন্টাল কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন করে সরকারকে বলতে গেলে পূর্বের দরে বিদ্যুৎ কিনতে বাধ্য করা হয়েছে। এক্ষেত্রে অবশ্য দায়মুক্তি আইনের সুবিধাই নিচ্ছে এই দুর্নীতিবাজ মাফিয়াচক্র। ফাঁকে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ নয়, তালগাছ হচ্ছে একশ্রেণির আমলা। অথচ এর দায়ভার পড়ছে জনগণের কাঁধে। যার অংশ হিসেবে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৯ বছরে ৮ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। চলতি বছরে গ্যাসের পাশাপাশি ফের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কথা বলা হচ্ছে সরকারের উচ্চ মহল থেকে। অথচ এ পর্যন্ত সরকার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্থায়ীভাবে কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সফলতা দেখাতে পারেনি। এ জন্য রেন্টাল ব্যবসায়ী ও আমলাদের বড় একটি দুষ্টচক্র দায়ী বলে জ্বালানি বিশ্লেষকরা মনে করেন। তাদের মতে, নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় ওই চক্রটি সরকারকে ভুলভাল বুঝিয়ে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুতের মধ্যে জিম্মি করে ফেলেছে। অন্যদিকে বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে ক্ষমতাসীনদেরকেই ভবিষ্যতে মাশুল গুণতে হবে বলেও তাদের মত।
বেড়েছে রেন্টাল চুক্তির মেয়াদ, কমেনি দাম
২০০৯-১০ অর্থবছরে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি কার্যক্রম শুরু। পর্যায়ক্রমে যার মাধ্যমে ১৭টি কুইক রেন্টাল ও ১৮টি রেন্টাল কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে সরকার। পরে সরকার কয়েকটি রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক) ও কুইক রেন্টাল (দ্রুত ভাড়াভিত্তিক) বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে ২০১৮ সাল পর্যন্ত করে। কয়েকটি কেন্দ্রের তিন বছরের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। যা ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুতের দাম, কেন্দ্রগুলোকে দেয়া ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ কিছুই তেমন কমেনি। তেলভিত্তিক এবং ভেঙে ভেঙে তিন, পাঁচ ও সাত বছর মেয়াদি হওয়ায় এসব কেন্দ্রের বিদ্যুতের দাম অনেক বেশি নির্ধারিত হয়।
প্রথম বা মূল চুক্তি এবং পরবর্তী সময়ে সম্পাদিত চুক্তি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এনার্জিস করপোরেশনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতি ইউনিট (এক কিলোওয়াট ঘণ্টা) বিদ্যুতের দাম মূল চুক্তিতে (প্রথমবার) ছিল ১৫ টাকা ৮৩ পয়সা। তিন বছর পর এটির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু বর্ধিত চুক্তিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম কমার পরিবর্তে ১৪ পয়সা বাড়িয়ে ১৫ টাকা ৯৭ পয়সা করা হয়েছে। তিন বছরের চুক্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জে স্থাপিত দেশ এনার্জির ১০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম মূল চুক্তিতে ছিল ১৯ টাকা ৫৭ পয়সা। পাঁচ বছরের বর্ধিত চুক্তিতে তা ধরা হয়েছে ১৯ টাকা ৫৪ পয়সা। দাম কমেছে মাত্র ৩ পয়সা। নারায়ণগঞ্জের পাগলায় তিন বছরের চুক্তিতে স্থাপিত ৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রের প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম মূল চুক্তিতে ছিল প্রায় ২০ টাকা ৪০ পয়সা। বর্ধিত চুক্তিতে তা হয়েছে ১৯ টাকা ৯৯ পয়সা। এগ্রেকো ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্ট লিমিটেডের খুলনা ৫৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রটিও তিন বছরের চুক্তিতে স্থাপন করা হয়েছিল। এটির প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম মূল চুক্তিতে ছিল প্রায় ২১ টাকা ২৬ পয়সা। বর্ধিত চুক্তিতে দাম রাখা হয়েছে ১৯ টাকা ৫৫ পয়সা। চট্টগ্রাম ও ঠাকুরগাঁওয়ে স্থাপিত আরও একাধিক বিদ্যুৎকেন্দ্রেও একই অবস্থা।
পিডিবি সূত্র জানায়, এই কেন্দ্রগুলোর মূল চুক্তি ও বর্ধিত চুক্তি অনুযায়ী বিদ্যুতের যে দাম উল্লেখ করা হয়েছে, তার সঙ্গে ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ (বিনিয়োগের জন্য প্রতি মাসে দেওয়া অর্থ) যুক্ত করা হয়েছে। আলাদাভাবে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসাব করলে দেখা যায়, মূল চুক্তির তুলনায় বর্ধিত চুক্তিতে ক্যাপাসিটি চার্জ উল্লেখযোগ্য হারে কমেনি। যদিও বর্ধিত চুক্তিতে ক্যাপাসিটি চার্জ থাকারই কথা নয়। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে, বর্ধিত চুক্তিতেও কেন্দ্রভেদে প্রতি মাসে এই চার্জ ১৪ থেকে ২০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ সরকার নতুন করে মোট ৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার যে তিনটি কেন্দ্র স্থাপন করেছে, তাতে ক্যাপাসিটি চার্জ ১৩ ডলারের বেশি ধরা হয়নি। অর্থাৎ অধিকাংশ রেন্টাল কেন্দ্রকে বর্ধিত চুক্তির মেয়াদেও যে আর্থিক সুবিধা দেয়া হয়েছে, তার চেয়ে কমে নতুন তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা যেত। পিডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, শুরুতে সরকারের পরিকল্পনা ছিল, এই কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হতে না হতে তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বড় (বেইজ লোড) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সম্পন্ন হবে। তখন এই কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে চুক্তি বাতিল করা হবে। রেন্টাল বা কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও আর থাকবে না। সেজন্য ব্যবসায়ী নামের মাফিয়াচক্রটি শুরুতেই এসব কেন্দ্রের বিদ্যুতের দাম, ক্যাপাসিটি চার্জসহ অন্যান্য বিষয় নির্ধারণ করে নিজেদের লাভ আদায় করে নিয়েছে। যাতে চুক্তির মেয়াদ শেষে কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিলেও তাদের লোকসান না হয়। কিন্তু পরিকল্পনার বাস্তবায়নে পিছিয়ে পড়ায় সরকার এসব কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করে নেয়। কিন্তু মূল চুক্তির মেয়াদেই এসব কেন্দ্রের বিনিয়োগ মুনাফাসহ উঠে যাওয়ায় বর্ধিত মেয়াদে বিদ্যুতের দাম অনেক কম হওয়ার কথা। ক্যাপাসিটি চার্জ থাকারই কথা নয়। কিন্তু ঘটেছে উল্টোটা।
এখানে উল্লেখ্য, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২৪০০ মেগাওয়াট নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। এর মধ্যে রামপালে ১৬ হাজার কোটি টাকা, মাতারবাড়িতে ৩৬ হাজার কোটি এবং অন্যান্য কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের জন্য আরো ৮০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন সরকারের। এর বাইরে সঞ্চালন ও বিতরণ অবকাঠামো তৈরির খরচ তো আছেই। কম করে ধরলেও এর জন্য প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অনেকগুলো প্রকল্প থেকে এভাবে একসঙ্গে হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলে তা সিস্টেমের ওপর ভয়াবহ চাপ তৈরি করবে। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তৈরির ধারণাটি পৃথিবীতে নতুন না হলেও বাংলাদেশের মতো সীমিত সম্পদের দেশে তা বাড়তি চাপ তৈরি করবে। এটা যেমন নতুন সমস্যা তৈরি করতে পারে, অন্যদিকে এসব পরিকল্পনার কোনোটাই বাস্তবায়ন না হওয়ায় রেন্টালের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে দেশবাসী।
কুইক রেন্টালের শর্ত রক্ষা হয়নি
বিশ্লেষকদের মতে, ফিলিপাইনস ১৯৯০ সালে ভয়াবহ নিয়ন্ত্রণহীন বিদ্যুৎ সংকটের সময় এবং যুদ্ধকালীন সময়ে ভিয়েতনাম, ইরাক ও আফগানিস্তানে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র যে বিশেষ অবস্থায় বসানো হয়েছিল প্রতিটি ক্ষেত্রেই কার্যাদেশ দেবার সর্বাধিক ৩/৪ মাসের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কার্যাদেশ দেবার ন্যূনতম ১৮ মাসের আগে কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করতে পারেনি। যেহেতু এ ধরনের কার্যাদেশ দেশে বিদ্যুৎ না থাকার ক্ষতি থেকে অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য। সুতরাং কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্রকে রেন্টাল অভিহিত করার সাথে উচ্চদর দেবার বিষয়টি তখনই ন্যায্যতা পেতে পারে যখন সেই উৎপাদনকারী কার্যাদেশ পাবার সাথে সাথেই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে এক অসম্ভব রকমের ব্যত্যয় ঘটেছে। কার্যাদেশ দেবার ন্যূনতম ১৮ মাস এবং সর্বাধিক ৩০ মাসেও বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়নি, এমন কেন্দ্রও আছে।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ নিয়মে টেন্ডার করে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণ করতে সর্বাধিক ২০/২৪ মাস সময় লাগে। তাহলে এ ধরনের উৎপাদন কেন্দ্রগুলোকে কুইক রেন্টাল অভিহিত করার একটি যুক্তিই থাকে, তাহলো অবৈধভাবে দর ৩/৪গুণ বাড়িয়ে দিয়ে জনগণের রক্ত চুষে অবৈধ ব্যবসার সুযোগ করে দেয়া। আরো একটি লক্ষ্য করার বিষয় হলো, দেশে অধিকাংশ রেন্টাল ক্ষমতাসীন দলের লোকদের দেয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা কুইক রেন্টালের নামে দলীয় ‘টাউট’ ব্যবসায়ীদের জন্য যথেচ্ছভাবে মুনাফা লুণ্ঠনের ব্যবস্থা করেছে। এ কারণেই ভর্তুকির নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠনের কর্মকা- চলছে। ভর্তুকির হিসাবেও এদিক সেদিক করেছেন ক্ষমতাসীনরা। যাদের কারোরই আইন অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত প্যাকেজ নির্মিত রেডি-মেইড কোনো রেন্টাল ছিল না।
২০২০ সাল পর্যন্ত ক্ষতি দাঁড়াবে ২ লাখ কোটি টাকা
পুরোনো উৎপাদন কেন্দ্রে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় সমপরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে বেশি জ্বালানি ব্যবহৃত হয়। তাতে জ্বালানি বাবদ সরকারের তথা জনগণের বিপুল অর্থের অপচয় হয়। বিদ্যুতের অহেতুক দর বাড়ে। দূষণ বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি সরকার কর্তৃক সাবসিডি রেটে সরবরাহ করা হয় বলে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা প্রচুর অপচয় করছে এবং জ্বালানির হিসাব গরমিল করে কালো বাজারে বিক্রি করার সুযোগ নিচ্ছে। এছাড়া রেন্টালগুলো পুরনো হওয়ায় উৎপাদন কেন্দ্রের নির্ভরশীলতা অত্যন্ত কম। যার ফলে সরকারের ঘোষিত রেন্টালের মাধ্যমে ৩০০০ মেগাওয়াটের মধ্যে বর্তমানে ৯০০ থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে।
সরকারের সাথে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর করা চুক্তির শর্তে বলা আছে, এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় করে গ্রাহকের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তাদের ভর্তুকি দিয়ে জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে হবে। রেন্টালের ক্ষেত্রে চুক্তি অনুযায়ী অনেক কিছুই কোম্পানিগুলোকে দিতে হচ্ছে না। যথা ভূমি ক্রয় ও উন্নয়ন বাবদ প্রদত্তমূল্য, জ্বালানি সরবরাহের জন্য ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ বাবদ প্রদত্ত ব্যয় ইত্যাদি। এগুলো সরকার বহন করে। যেহেতু এটি ৩, ৫ ও ৭ বছরের চুক্তি, এজন্য অল্প সময়ে টাকা উঠানোর জন্য ট্যারিফ বৃদ্ধি করে নিয়েছে এ খাতে বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরা। কারণ অল্প সময়ে লাভ উঠাতে দর বৃদ্ধি জরুরি।
সূত্র মতে, রেন্টাল বিদ্যুতের নামে চার পদ্ধতিতে সরকার তথা জনগণের অর্থ হরিলুট হচ্ছে। এগুলো হলো- ১. কোনো ধরনের টেন্ডার/দর যাচাই ছাড়া বেশি দরে ঠিকাদার নিয়োগ ২. উচ্চদরে বিদ্যুৎ ক্রয় ৩. জ্বালানিতে ভর্তুকি ও ৪. জ্বালানি সরবরাহের ব্যর্থতার দায়ে জরিমানা। ২০২০ সাল পর্যন্ত রেন্টাল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু থাকলে এই চার পদ্ধতিতে জাতির ২ লাখ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত ক্ষতি হবে।
১. টেন্ডার/দর যাচাই ছাড়া বেশি দরে ঠিকাদার নিয়োগ : ডিজেল এবং ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক ১টি ১০০ মেগাওয়াট শক্তির নতুন রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের (জ্বালানি ভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র মূলত এক ধরনের জেনারেটর) সর্বমোট ক্রয়মূল্য ৫০০ কোটি টাকা। আর পুরনো ১০০ মেগাওয়াট রেন্টাল পাওয়ার স্টেশনের ক্রয়মূল্য কিছুতেই ১০০ কোটির বেশি নয়। এর সাথে পরিচালন ব্যয় অর্থাৎ জ্বালানি ব্যয় ও বেতন ভাতাদি যুক্ত হয়ে মোট ট্যারিফ (বিদ্যুতের ইউনিট ক্রয়ের হার) নির্ধারণ করা হয়। দেশে যেসব রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল সরকারের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করছে এর প্রায় ৮০ শতাংশ স্টেশনই পুরোনো। এতে ২০ শতাংশ জ্বালানি বেশি খরচ হচ্ছে। কিন্তু সরকারের কাছ থেকে জ্বালানি বেশি নেয়া হলেও নতুনের দামেই পুরোনো কেন্দ্র ভাড়া দেয়া হয়েছে। টেন্ডার না করে ইচ্ছেমতো অবৈধ অর্থ আয়ের লোভে পুরোনো কেন্দ্র বসানোর ফলে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৮ হাজার কোটি টাকা।
২. উচ্চদরে বিদ্যুৎ ক্রয় : ডিজেল ভিত্তিক রেন্টাল কেন্দ্রের পুরোনো বিবেচনায় সঠিকভাবে দর যাচাই করে কার্যাদেশ দিলে ট্যারিফ (বিদ্যুতের দর) দাঁড়াতো প্রতি মেগাওয়াট ৮.০০ টাকা। কিন্তু কোম্পানিগুলোকে সরকার দিচ্ছে গড়ে ১৪.৮০ টাকা। ফার্নেস ভিত্তিক রেন্টাল কেন্দ্রের ক্ষেত্রে পুরোনো বিবেচনায় ট্যারিফ দাঁড়াতো ০৬.৬০ টাকা। সেখানে ট্যারিফ ধরা হয়েছে ৮.৮০ টাকা। অর্থাৎ ডিজেলের ক্ষেত্রে সরাসরি প্রতারণা করা হচ্ছে (১৪.৮০-৮.০০)= ৬.৮০ টাকা। আর ফার্নেসের ক্ষেত্রে প্রতারণা করা হচ্ছে (৮.৮০-৬.৬০)= ২.২০ টাকা। হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ওয়াট/ইউনিট বিদ্যুৎ প্রতারণার মাধ্যমে গড়ে ৭.০০ টাকা বেশি দর দেয়া হয়েছে। ন্যূনতম ২০০০ মেগাওয়াট এবং ৬০% প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর ধরে নিজেদের অবৈধ অর্থ লুন্ঠনের জন্য শুধু ঠিকাদারকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত টাকা দেয়া হচ্ছে বছরে ৮ হাজার কোটি টাকা। যদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রেন্টাল থেকে আসে তাহলে বছরে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ হাজার কোটি টাকা। অথচ সরকার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পানি, গ্যাস অথবা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে এক্ষেত্রে উল্টো লাভ করতে পারতো সমপরিমাণ অর্থ।
৩. জ্বালানিতে ভর্তুকি : জ্বালানি তেলের ক্ষেত্রে যে ভর্তুকির কথা হয়, তা হলো বিদ্যুতের ভর্তুকি। সরকার ডিজেল লিটার প্রতি ৭৩.০০ টাকা দরে এবং ফার্নেস অয়েল ৬৯.০০ দরে (আন্তর্জাতিক বাজারে উঠা-নামার ভিত্তিতে) ক্রয় করে রেন্টাল ও তথাকথিত কুইক রেন্টালকে যথাক্রমে লিটার প্রতি ৬১.০০ ও ৬০.০০ টাকা দরে দিচ্ছে। ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলে প্রতি লিটারে ভর্তুকি যথাক্রমে ১২.০০ ও ৯.০০ টাকা হলে ভর্তুকির গড় দাঁড়ায় ১১ টাকা। তখন মোট ভর্তুকি হয় (২০০০ মেগাওয়াট হলে) ১২ হাজার কোটি টাকা। আর সরকার ঘোষিত ৩০০০ মেগাওয়াট হলে বার্ষিক ভর্তুকির পরিমাণ ১৮ হাজার কোটি টাকা। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ডিজেলে ২৫ টাকা ও ফার্নেস অয়েলে লিটার প্রতি ১২ টাকা করে ভর্তুকি দিয়েছে সরকার।
বর্তমানে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল যদি ১০০০ মেগাওয়াট চালু থাকে তাহলে বছরে সর্বমোট ভর্তুকি দিতে হচ্ছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২০ সাল পর্যন্ত ৭ বছরে মোট ভর্তুকি তথা ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। পিডিবির তথ্যেও এর সত্যতা মিলে। কিন্তু ন্যায্য মতো টেন্ডার করে যথাযথ দর ও পুরোনোর পরিবর্তে নতুন কেন্দ্র বসালে কম জ্বালানি ব্যবহার হতো বিধায় ভর্তুকির সর্বাধিক পরিমাণ কিছুতেই ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি হতো না বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
৪. জ্বালানি সরবরাহের ব্যর্থতায় জরিমানা : এদিকে নিম্ন মানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারে অচল ও জ্বালানি সংকটের কারণে এক সাথে কখনোই সব রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল কেন্দ্র চালু রাখা যায়নি। সেই কারণে ওইসব কেন্দ্রকে প্রতিদিনের জন্য পিডিবিকে জরিমানা দিতে হয়েছে, হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। এছাড়া সরকার এসব কেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ ক্রয় না করায় বেশির ভাগ সময় উৎপাদন বন্ধ থাকছে। এই বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন প্রতিষ্ঠাতা জানান, সরকার তাদের চাহিদা মোতাবেক জ্বালানি তেল সরবরাহ করতে না পারার কারণেই উৎপাদন কম হচ্ছে। এ ব্যাপারে পিডিবি থেকে জানা গেছে, জ্বালানি তেল সরবরাহ না করতে পারার কারণে কোনো কেন্দ্র উৎপাদনে যেতে না পারলে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রতিদিনের জন্য সংশ্লিষ্ট ওই বিদ্যুৎ কোম্পানিকে পিডিবি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জরিমানা দিয়ে থাকে।
সূত্রমতে, ২০০৯ সালে চালু হওয়া বিদ্যুতের রেন্টাল ব্যবস্থায় সরকারকে ২০১৩ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। ২০১৪ থেকে ফের চুক্তি নবায়ন করে পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ পর্যন্ত কোনো কোনো রেন্টাল কেন্দ্রের মেয়াদ বেড়েছে।
রেন্টালের ভর্তুকির দায়ভার চাপছে জনগণের ওপর
রেন্টাল, কুইক রেন্টালের ভর্তুকির দায়ভার চাপছে জনগণের ওপর। এ ভর্তুকি আদায়ে বর্তমান সরকারের ৯ বছরে ৮ দফায় বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। সরকারের মেয়াদের শেষ বছরে এসে আরও একবার বাড়ানোর তৎপরতা চলছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পিডিবি বলছে, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ও আইপিপি খাতে চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে পিডিবি যে লোকসানের মুখে পড়েছে- এটা কাটিয়ে উঠতেই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের এই মূল্য বৃদ্ধি। পিডিবি’র এক চিঠিতে বলা হয়, অধিক দামে বিদ্যুৎ ক্রয় এবং বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে জ্বালানি তেল সরবরাহ করার কারণে শুধুমাত্র রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল খাতেই বছরে তাদের লোকসান গুণতে হয় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। এমনকি ২০১৪ সালের জানুয়ারিতেই পিডিবিকে ৫শ কোটি টাকা লোকসান দিতে হয়েছে।
পিডিবির হিসাবে, আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বেসরকারি খাতে কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভর্তুকি হিসেবে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পিডিবিকে লোকসান দিতে হয়েছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান হয় প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা। সরকারি দুই দফতর মিলে চার বছরে ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এই ক্ষতি মূলত জাতির ঘাড়েই পড়ছে।
ঋণ করে কুইক রেন্টালে ভর্তুকি
সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য সরকার শুরুতে তিন বছরে (২০০৯-১০ থেকে ২০১১-১২ অর্থবছর) ৩৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ করে। এর থেকে ভর্তুকির নামে ব্যয় করেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। অথচ মাত্র দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেই ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব ছিল। অন্যদিকে কুইক রেন্টালওয়ালারা উৎপাদন করেছে মাত্র ৯০০ মেগাওয়াট।
সূত্রমতে, খুলনা ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে এক ইউনিটও বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি। তবু ওই মাসে তাদেরকে শোধ করা হয়েছে ১০ লাখ ৭১ হাজার ৯০২ ডলার বা আট কোটি ৭৫ লাখ ৭৪ হাজার ৪৫১ টাকা। এভাবে প্রতিটি ভাড়ায় আনা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদনের সাথে কোনো সামঞ্জস্য না রেখেই শত শত কোটি টাকা শোধ করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন হোক না হোক, ভাড়ায় আনা কেন্দ্রগুলোর জন্য মাসে নির্ধারিত খরচ হচ্ছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ২০১২ সালের মার্চ মাসে নয়টি দ্রুত ভাড়ায় আনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য মোট খরচ হয়েছে ১২৬ কোটি ৯২ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪৭ টাকা। এর মধ্যে নির্ধারিত খরচ ছিল ১১২ কোটি ১৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩০৯ টাকা। শুধু বিদ্যুতের জন্য দেয়া হয়েছে মাত্র ৮ কোটি ৪৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৫ টাকা।
২০১২ সালে ১৭টি কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সচল ছিল। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৪টি গ্যাসের। বাকি সব ডিজেলচালিত। আর এদের তিনটির মেয়াদকাল ছিল তিন বছরের, বাকিগুলো ৫ বছরের। এছাড়া আরো ১৮টি রেন্টাল কেন্দ্র রয়েছে। যার উৎপাদন ক্ষমতা ৮৪০ দশমিক ৪৫ মেগাওয়াট। পরে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়।
লুটপাটের পেছনে কারা?
পিডিবি সূত্র বলছে, বন্ধ থাকা দেশের সব সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু এবং কিছু কেন্দ্র সংস্কার করলে সব মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের মতো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সংশ্লিষ্টরা লুটপাট এবং কমিশনের লোভে সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর দিকে গুরুত্ব না দিয়ে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে উৎসাহী হয়ে পড়ে। সূত্র বলছে, ব্যবসায়ী নামের সরকারি দলের কিছু লোকজন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়, পিডিবি এবং বিপিসিসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের কতিপয় আমলা কমিশনের লোভে জাতীয় স্বার্থ বিরোধী রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বোঝা জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ, প্রকৌশলী ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের জন্য যে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি গুণতে হচ্ছে সেই অর্থ দিয়ে প্রচলিত পদ্ধতিতে উৎপাদনে গেলে বিদ্যুতের কোনো সংকটই থাকতো না। কিন্তু সরকার রেন্টাল ওয়ালাদের স্বার্থ দেখছে বলে ভর্তুকি দিয়েও চাহিদা পূরণের মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বলছেন, ভর্তুকির টাকা কারা লুটপাট করে খাচ্ছে, এসব বিষয়ে তদন্ত করে দেখার সময় এসেছে। সময় এসেছে এসবের সাথে কারা জড়িত তাদের নাম প্রকাশ করার।
(সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজে ০৯ জুলাই ২০১৮ প্রকাশিত)