যেসব ক্ষেত্রে ভারতকেও টপকে গেছে বাংলাদেশ
আয়তনে ছোট এবং বড় দেশগুলো দ্বারা নানানভাবে হ্যাস্ত ন্যাস্ত হয়েও একটি দেশ এগিয়ে থাকতে পারে, তার প্রমাণ বাংলাদেশ। দেশের জাতীয় পলিসি প্রণয়ণে যে দেশে অনেক ক্ষেত্রেই জনকল্যাণকে গুরুত্ব না দিয়ে বরং ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়াার অভিযোগ রয়েছে। সরকার পরিবর্তনে নেই প্রকৃতই কোন গণতান্ত্রিক পদ্ধতির অনুসরণ ও কোন মূল্যবোধের লালন হচ্ছে কিনা তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। এরপরও কয়েকটি দিক থেকে প্রতিবেশি দেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি ভারতের গবেষণাভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘দি প্রিন্ট’ এর একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আমাদের আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতির তথ্য। সেদেশের চেয়ে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ যেএগিয়ে রয়েছে, তা স্বীকার করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। এবার দেখা যাক, কোন কোন খাতে এগিয়ে আছি আমরা।
জিডিপি বৃদ্ধির হারঃ এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৭.৫ শতাংশ যেখানে ভারতের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৩ শতাংশ। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র মতে গত বছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.২৮ শতাংশ। আর গত বছর ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.১ শতাংশ।
ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩৯ শতাংশ আর ভারতের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৩.৮ শতাংশ। বাংলাদেশ যদি এর গ্রস ন্যাশনাল ইনকাম (জিএনআই) এবং গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্টস (জিডিপি) বৃদ্ধিতে এই ধারা অব্যাহত রাখতে পারে, তাহলে আগামী দুই বছরে ভারতের মাথাপিছু আয়কে টপকে যাবে বাংলাদেশ।
শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনাঃ বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশের শিশুমৃত্যুর হার ছিল হাজারে ২৭ জন আর ভারতের শিশুমৃত্যুর হার ছিল প্রতি এক হাজারে ৩২ জন, যারা জন্মের সময় বা পরপরই মারা যায়।
গড় আয়ু বৃদ্ধিঃ জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনাইটেড ন্যাশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনডিপি) তথ্যমতে, বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২.৫৮ বছর আর ভারতের জনসংখ্যার গড় আয়ু ৬৮.৮ বছর।
নারীর ক্ষমতায়নঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে ১৪ শতাংশ নারী এবং ভারতের সংসদে ১১ শতাংশ নারীর রয়েছে।
অগ্রগতির মূল কারণঃ ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের এসব ক্ষেত্রে এগিয়ে মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংকের মত এনজিও এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবদান। প্রতিবেদনে বিশেষভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পকে।
এর পাশাপাশি বর্তমান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার কথাও উঠে আসে প্রতিবেদনটিতে। আর আর্থিক লেনদেনে ডিজিটাইলেজেশন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বড় কারণ বলেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে।