যেভাবে বের হয়ে গেছে জনতা ব্যাংকের তিন হাজার কোটি টাকা।।
জনতা ব্যাংকের এই বিশেষ অনুগ্রহ পেয়েছেন অ্যানন টেক্স গ্রুপের মো. ইউনুস বাদল। অনুসন্ধানে জানা গেছে, তার ২০টির বেশি প্রতিষ্ঠানকে ছয় বছরে দেওয়া এই তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধার মধ্যে অধিকাংশেরই অনুমোদন মিলেছে অধ্যাপক আবুল বারকাতের সময়ে। ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। আর ওই সময়ে দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয় অ্যানন টেক্স গ্রুপকে।
ঋণের ক্ষেত্রে আলোচিত এ অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, অ্যানন টেক্স গ্রুপের মো. ইউনুস বাদল জনতা ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যদের হাত করার পাশাপাশি ব্যাংকের শীর্ষপর্যায়ের প্রায় ডজনখানেক কর্মকর্তাকেও হাত করেন। এদের মধ্যে প্রধান কার্যালয়ের ও জনতা ভবন করপোরেট শাখার ৯ জন কর্মকর্তা মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডেকেটের অন্যতম সদস্য ছিলেন ব্যাংকটির তৎকালীন ডিএমডি (উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক) মো. গোলাম সারোয়ার। একসময় তিনিই ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন।
কেবল গোলাম সারোয়ারই নন, ঋণ ও ঋণসুবিধার ক্ষেত্রে উদারতা দেখিয়েছেন বর্তমান এমডি আবদুছ ছালাম আজাদ ও সাবেক এমডি এসএম আমিনুর রহমানও। এক্ষেত্রে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজন সদস্যেরও বিশেষ ভূমিকা ছিল ওই সময়। শুধু তা-ই নয়, ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ সুবিধা যাতে অব্যাহত থাকে সে জন্য মো. গোলাম সারোয়ারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে আরও দুই বছরের জন্য কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয় জনতা ব্যাংক।
এ প্রসঙ্গে জনতা ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মো. ইউনুস বাদলের ইচ্ছায় চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তৎকালীন ডিএমডি গোলাম সারোয়ারকে ব্যাংকে রাখা হয়। এর বাইরে বর্তমান এমডি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) আবদুছ ছালাম আজাদ এবং ব্যাংকের তৎকালীন এমডি এসএম আমিনুর রহমানও ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে অতি উৎসাহী ছিলেন। আবদুছ ছালাম আজাদ ঋণের প্রস্তাবপাঠাতেন আর এসএম আমিনুর রহমান ব্যাংকের বোর্ডে উপস্থাপন করতেন। আর ব্যাংকটির বোর্ডের সদস্যরাও কোনও বাছবিচার ছাড়াই সেই ফাইল পাস করে দিতেন।’
আইন অনুযায়ী, একক কোনও গ্রাহককে যেকোনও ব্যাংক মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। জনতা ব্যাংকের মোট মূলধন দুই হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা। সে অনুযায়ী কোনও একজন গ্রাহক জনতা ব্যাংক থেকে ৭৫০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারেন না। কিন্তু ব্যাংকটির বর্তমান এমডি আবদুছ ছালাম আজাদসহ ৯ জন কর্মকর্তার সরাসরি হস্তক্ষেপে মো. ইউনুস বাদলের ২০টির বেশি প্রতিষ্ঠানকে ছয় বছরে দেওয়া হয়েছে মূলধনের বেশি টাকা।
তবে অ্যানন টেক্স গ্রুপ ঋণখেলাপি গ্রুপ নয়। তাদের নেওয়া ঋণ এখন পর্য্ন্ত খেলাপি হয়নি। যদি নিয়মের ব্যত্যয় কিছু হয় সেক্ষেত্রে ব্যাংকের লোকজন করতে পারে বলে বলে অ্যানন টেক্স গ্রুপের দাবি।
অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে জনতা ব্যাংক থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা মো. ইউনুস বাদলের অ্যানন টেক্স গ্রুপের চারটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ ও ঋণসুবিধা দিয়েছে। এর বাইরে পৃথক ও ভিন্ন মালিকানার আরও ১৮টি প্রতিষ্ঠান ঋণ ও ঋণসুবিধা পেলেও ব্যাংক কোম্পানি আইনের কোনও লঙ্ঘন হয়নি।
জানতে চাইলে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুছ ছালাম আজাদ কাছে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে জনতা ব্যাংকের তৎকালীন এমডি এসএম আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমার সময়ে মো. ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঋণসুবিধা পেলেও আমার কোনও হাত ছিল না। কারণ, শাখার দায়িত্ব হলো সবকিছু খুটিনাটি দেখে প্রধান কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো। প্রধান কার্যালয় সেই প্রস্তাব বিচার-বিশ্লেষণ করে ক্রেডিট কমিটির কাছে পাঠায়। ক্রেডিট কমিটি সুপারিশ করলে আমার কাছে মেমো আসে, আমি তারপর মেমোতে সই করি।’ তিনি বলেন, ‘পর্ষদ বিবেচনা করে ঋণ দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে এমডির ঋণ দেওয়া না দেওয়ার কোনও ক্ষমতা নেই। কারণ, দলগতভাবেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গ্রাহককে ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়।’
এসএম আমিনুর রহমান বলেন, ‘আমি চলে আসার পরও মো. ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঋণসুবিধা পেয়েছে।’
সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে জনতা ব্যাংকের শান্তিনগর শাখা থেকে প্রথম ঋণ নেয় এননটেক্স গ্রুপের জুভেনিল সোয়েটার। তখন প্রতিষ্ঠানটির ঋণ ছিল এক কোটি টাকার সামান্য বেশি। পরে তৎকালীন ডিএমডি মো. গোলাম সারোয়ারের পরামর্শে ২০০৮ সালে জনতা ভবন করপোরেট শাখায় ঋণটি স্থানান্তর করা হয়। ২০১০ সাল থেকে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণসুবিধা নেওয়া শুরু হয়।
জনতা ভবন করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হিসেবে ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন আবদুছ ছালাম আজাদ। ঋণের বড় অংশই তার সময়ে সৃষ্ট।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. ইউনুস বাদলের বিভিন্ন কোম্পানির নামে বিভিন্ন সময়ে কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি—লেটার অব ক্রেডিট) খুলতো জনতা ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে ব্যাংক নিজেই বিদেশি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধ করে দিত। পরেও গ্রাহক তা পরিশোধ করেনি। এভাবে নেওয়া ঋণসুবিধার (নন-ফান্ডেড) সব অর্থই সরাসরি ঋণে (ফান্ডেড) পরিণত হয়েছে। আবার দৈনন্দিন ব্যবসা পরিচালনার জন্য নেওয়া চলতি মূলধন ঋণও ফেরত দেয়নি। এ অবস্থায় ২০১৫ সালে অ্যাননটেক্স গ্রুপের এক হাজার ৯৭ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠনের অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই পুনর্গঠিত ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় এখন সেই ঋণকে পুনঃতফসিল করে দিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘এক ব্যক্তিকে এত টাকা দেওয়া ঠিক হয়নি। তবে, যেহেতু এই পরিমাণ অর্থ ব্যাংকের বাইরে চলে গেছে, সেহেতু এর দায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদকে, এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংককেও নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোনও গ্রাহককে নির্ধারিত সীমার বেশি ঋণ দিতে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি লাগে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হলে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমতি লাগে। আবার পর্ষদের অনুমতি নিতে হলে ব্যাংকের ক্রেডিট কমিটির অনুমতি লাগে। ক্রেডিট কমিটির আগে শাখার প্রস্তাব লাগে। আইন অমান্য করে শাখার কর্মকর্তারা তখনই প্রস্তাব করেন, যখন উপর মহলের চাপ থাকে অথবা নিজেরা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন।’
ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঋণ ও ঋণসুবিধার নথিপত্র ঘেঁটে জানা গেছে, ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঋণসুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা কর্মকর্তাদের মধ্যে ‘অসাধারণ’ ভূমিকা রেখেছেন জনতা ব্যাংকের তৎকালীন ডিএমডি ওমর ফারুক ও গোলাম ফারুক। তখন ব্যাংকটির জনতা ভবন করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আব্দুছ ছালাম আজাদ। এছাড়াও ঋণ পাইয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন ওই শাখার তৎকালীন এজিএম মো. আজমুল হক। বর্তমানে তিনি সাময়িক বরখাস্ত হয়ে আছেন। ওই সময় ইউনুস বাদলের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ভূমিকা রাখা আরেকজন এজিএম অজয় কুমার ঘোষ, যিনি পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে ডিজিএম হয়ে অবসরে যান। আরও যাদের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন তৎকালীন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) গোলাম আজম, এখনও তিনি ওই শাখায় আছেন, এজিএম হিসেবে। ওই সময় ঋণসুবিধা দিতে তৎপর ছিলেন তখনকার সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) আমির খসরু। অবশ্য এখন তিনি অন্য শাখায় বদলি হয়ে গেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধার মধ্যে অধিকাংশই দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক আবুল বারকাতের সময়ে। ২০০৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ বছর জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এ সময় ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বলরাম পোদ্দার, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক নাগিবুল ইসলাম ওরফে দীপু, যুবলীগ নেতা আবু নাসের। এর বাইরে আরও পরিচালক ছিলেন ড. আর এম দেবনাথ, মাহবুবুর রহমান হিরন, সৈয়দ বজলুল করিম। উদার হস্তে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে জনতা ব্যাংকের এই পর্ষদের উৎসাহ ছিল বেশি। পর্ষদের সিদ্ধান্তে বারবার ঋণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে খেয়ালখুশি মতো।
জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাতের সময় পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পেয়েছে দুই হাজার ১০০ কোটি টাকা। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান কখনও ঋণ দেন না। ১৬টি স্তর পার হয়ে ঋণের প্রস্তাব আসে পরিচালনা পর্ষদে। এককভাবে চেয়ারম্যান সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। যা হয় সবার মতামতের ভিত্তিতে হয়। তিনি বলেন, প্রথম বোর্ডে অনুমোদন হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়। পরের বোর্ড সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
আবুল বারকাত বলেন, ‘ব্যাংকের এমডি প্রস্তাব দেন। গ্রাহক সম্পর্কে বলেন। আমরা যেটা দেখি, তা হলো— শাখা থেকে যতগুলো জায়গায় এই ফাইল গেছে সব জায়গাতেই অনুমোদনের কপি এবং সর্বশেষ ব্যাংকের এমডি ও ক্রেডিট কমিটির সুপারিশ। এর বাইরে বাংলাদেশে ব্যাংকের বিধি ও সমঝোতা স্মারকের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কিনা, সেসব দেখা হয়।’
বোর্ডের চেয়ারম্যান এককভাবে কাউকে দিতে পারেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি কখনও কোনও ব্যাংক একক গ্রাহককে নির্ধারিত সীমার বেশি ঋণ দিতে চায়, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তি দেখা হয়।’
তিনি জানান, তার বোর্ডে পাঁচ বছরে ১৯ জন পরিচালক ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির, বিমানমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, প্রবীণ ব্যাংকার এনামুল হক চৌধুরী, যিনি চারটি ব্যাংকের এমডি ছিলেন, আরেক প্রবীণ ব্যাংকার কাইয়ুম চৌধুরী। ‘তারা বোর্ডে থাকা অবস্থায় আমি এককভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। যেকোন সিদ্ধান্ত হয়েছে সবার সঙ্গে আলোচনা করে। আর আমার একক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ারও সুযোগ ছিল না’ যোগ করেন তিনি।
জনতা ভবন করপোরেট শাখার ব্যবস্থাপক আহমেদ শাহনুর রহমান অ্যানন টেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি না হলেও বলেছেন, ‘জনতা ভবন করপোরেট শাখার ঋণ দেওয়ার সব সীমা শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এখন ঋণের টাকা আদায় করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
এদিকে নিয়মনীতি না মেনে এত বিপুল পরিমাণ ঋণ দেওয়ায় এখন বিপদে পড়েছে ব্যাংকটি। এমন অবস্থায় বর্তমান পর্ষদ থেকে অ্যানন টেক্সের গ্রাহককের ঋণের টাকা ফেরত আনার জন্য বর্তমান এমডির উপর দায়িত্ব দিয়েছেন। এরই মধ্যে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি কিছু টাকা জনতা ব্যাংককে ফেরত দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহা বলেন, অ্যানন টেক্সের বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন ব্যাংকের এমডি। তিনি আবদুছ ছালাম আজাদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ব্যাংক চালান (অপারেশন) তারা। কত টাকা বা টাকার হিসাব তারাই ভালো বলতে পারবেন।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আইনে আছে মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি এক গ্রাহককে দেওয়া যাবে না। অথচ জনতা ব্যাংক দিয়েছে। এটা ব্যাংক খাতের জন্য অনেক বড় ভুল। এই ভুলের পিছনে যারা ছিলেন, তাদের শাস্তি না হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘ব্যাংকের এমডির কারণে হোক অথবা চেয়ারম্যানের কারণে হোক, বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব হলো— এই ভুল যারা করেছেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনা। তা না হলে এই ধরনের ঘটনা বেসরকারি ব্যাংকগুলোতেও ঘটতে থাকবে।’
অ্যানন টেক্স গ্রুপের মো. ইউনুস বাদলের সঙ্গে একাধিকার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি একবারও ফোন ধরেননি।
অ্যানন টেক্স গ্রুপের পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা কোনও ঋণখেলাপি গ্রুপ নই। আমাদের নেওয়া ঋণ এখন পর্য্ন্তও খেলাপি হয়নি।’ যদি নিয়মের কিছু ব্যত্যয় হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাংকের লোকজন করতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসায়ী হিসেবে আমাদের দুর্বলতা নেই। অ্যানন টেক্স গ্রুপ শুধু ইউনুস বাদল সাহেবের নয়, এই গ্রুপে আরও অনেকে আছেন। আমরা জনতা ব্যাংক থেকে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ সুবিধা নিলেও ব্যাংকের কাছে আমাদের ৫ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জামানত রাখা আছে।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন