মোবাশ্বের হাসানের গুম হওয়ায় শাহবাগি জনপদ অবগত হল যে দেশে গুম হয়।
10 Nov, 2017
দিদারুল ইসলাম মানিক
‘নিখোঁজ’ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোবাশ্বের হাসানকে নিয়ে মূলধারার গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে কোন বিশেষত্ব নেই। কেউ ঘটনার গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করছে না। মূলধারার গণমাধ্যমের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বিবিসি’র করা একটি সংবাদ হুবহু ছাপছে, সংবাদ সূত্রের বরাত দিয়ে।
বিবিসি’র সংবাদে একটা সরল ন্যারেটিভ টানা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তিনি কোথা থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েছেন, তিনি কী করেন এবং তার গবেষণার বিষয় (পলিটিক্যাল ইসলাম) ইত্যাদি। এর আগের একটি পোষ্টে আমি উল্লেখ করেছি, ড. হাসান ঢাকার ইংরেজি দৈনিকগুলোতে বাংলাদেশের পলিটিক্যাল (রাজনৈতিক) ইসলাম নিয়ে নিয়মিত লিখতেন। ‘নিখোঁজ’ হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে তার লেখা কলামগুলোতে যাচাই বাছাই করা যেতে পারে। সেখানে সরকার নাখোস হয় সে রকম কোন উপাদান আছে কি না দেখা যেতে পারে। ড. হাসানের সাম্প্রতিক কোন লেখা আমার চোখে পড়েনি। কয়েক বছর আগে তার কয়েকটি লেখার চুম্বক অংশ তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
২০১৫ সালের ৮ মার্চ ডেইলি স্টারে প্রকাশিত “Tarique Rahman and liberal politics in Bangladesh” শীর্ষক এক মতামত কলামে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলামের বিকাশে শুধু বিএনপি না, আওয়ামলীগেরও অনেক অবদান আছে। ধর্মীয়খাতে আওয়ামীলাগের ব্যয় বিএনপি’র চেয়ে কোন অংশে কম না।
“ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বাংলাদেশের জন্য কোন কার্যকরী ম্যাকানিজম না”, তারেক রহমানের এ বক্তব্যের প্রেক্ষিত্রে ড. হাসান তার কলামের এক জায়গায় বলেছেন, “.. his (Tareq Rahman) public statement is a step forward towards a tolerant future of Bangladesh”.
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে, দ্যা ইন্ডেপেন্ডেন্ট পত্রিকাতে The advance of political Islam in Bangladesh শীর্ষক প্রতিবেদনে ড. হাসান, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা বলে উল্লেখ করেন। ৭১ পরবর্তী ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা র্যাডিক্যাল বামপন্থীদের ঠেকাতে কিভাবে ‘মুজিববাদ’ এর বিস্তার ঘটেছিল সে ঘটনার বর্ণনা আছে তার লেখায়। তিনি আরো দাবি করেন, শেখ মুজিব শুরুতে ধর্মরিপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুললেও ১৯৭৩ সালে আবর-ইসরাইল যুদ্ধের সময় আরব দেশে মেডিকেল টিম পাঠিয়ে এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত OIC এর সম্মেলনে যোগ দিয়ে তিনি তার সেক্যুলার নীতি থেকে অনেকটা সরে আসেন।
ড. মোবাশ্বের নিখোঁজ হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে সাংবাদিকরা উপরের প্রেক্ষাপটগুলো বিবেচনায় আনতে পারেন