মার্কিন এয়ারপোর্ট থেকে বিমান চুরি, আতঙ্ক। চীনের পর এবার তুরস্কের বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সিয়াটলের একটি এয়াপোর্ট থেকে একটি ‘বিমান চুরি’র ঘটনার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকায়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সিয়াটল-টাকোমা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। অবশ্য বিমানটি ওই বিমান বন্দর থেকে উড্ডয়নের পর সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা গেছ
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে ‘চুরি’ যাওয়া উড়োজাহাজটিতে কোনো যাত্রী ছিলেন না বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়,
একজন পাইলট অনুমতি ছাড়াই বিমানটি নিয়ে উড়ায় দেয়। পাইলটের পরিচয় প্রাথমিকভাবে জানা না গেলেও সে বিমানেরই একজন কর্মী, বয়স আনুমানিক ২৯ বছর।
উড্ডয়নের পর বিষয়টি ধরা পড়ে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষের কাছে। উড়োজাহাজটির পাইলটের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় কর্তকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বিমানটি কিছু দূর গিয়ে সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয়েছে। পাইলটের পরিচয় ও তার অবস্থা জানা সম্ভব হয়নি। তবে সে স্থানীয় নাগরিক বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কাউন্টির শেরিফ অফিস।
চীনের পর এবার তুরস্কের বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধে নামতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার হোয়াইট হাউজ ঘোষণা করেছে, তুরস্ক থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে নতুন করে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১৩ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নতুন এই শুল্ক। এর ফলে ন্যাটো মিত্র তুরস্কের সাথে নতুন করে বিরোধী জড়িয়ে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র।
এই আইন কার্যকর হলে নতুন চ্যালেঞ্জে পড়বে তুরস্কের রজব তাইয়েব এরদোগান সরকার। এমনিতেই সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির অর্থনীতি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্র লিরার মান কমছে ক্রমশ। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বিপুল জনসমর্থন নিয়ে জিতলেও এটি তার সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণা আসতে পারে সেটি জানাই ছিল। হোয়াইট হাউজ শুল্ক আরোপের আগে বিষয়টি টুইটারে জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছে, তুরস্কের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো নয়। দেশটি থেকে আমদানিকৃত অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২০ শতাংশ ও স্টিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের আইনে স্বাক্ষর করেছি।
এই টুইটের পরই গত কয়েকদিনে ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্রার মান কমেছে কয়েক দফা। সব মিলে চলতি বছরের শুরু থেকে তুর্কি লিরা ডলারের বিপরীতে ৩০ শতাংশ মান হারিয়েছে। ফলে এরদোগান আবারো তুর্কি নাগরিকদের আহ্বান জানিয়েছেন, স্বর্ণ ও ডলারের বদলে লিরা সংরক্ষণ করতে। শুক্রবার এরদোগান, বলেছেন, অর্থনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে জাতীয় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। কৃষ্ণ সাগর পাড়ের শহর রাইজে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ডলার কখনোই আমাদের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না। তাই আমি আবারো বলছি, আপনাদের যাদের কাছে ডলার ও স্বর্ণ মজুদ আছে, ব্যাংকে গিয়ে সেগুলোর বিনিময়ে লিরা সংগ্রহ করুন।
এরদোগান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এগুলো নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের যেমন ডলার আছে, আমাদের আছে আল্লাহ ও আমাদের জনগন। আমরা প্রতিদিন উন্নতি করছি। গতকালকের চেয়ে আজ ভালো আছি, আগামীকাল আরো ভালো থাকবো।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করে, তুরস্ক তার মধ্যে উপরের দিকে। ২০১৭ সালে দেশটি থেকে একশো কোটি ডলারের বেশি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।