ভয়াবহ তহবিল সঙ্কটে ব্যাংকগুলো

November 19, 2017 9:58 pm0 commentsViews: 24

নভেম্বর ১৯, ২০১৭ঃ

সাড়ে ৮ শতাংশ সুদে তহবিল সংগ্রহ করছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো : বেড়েছে ডলারের দাম, ব্যাংকিং চ্যানেলে বিক্রয়মূল্য ৮৪, খোলাবাজারে ৮৫ : ডিপোজিট রেট কমে যাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে সঞ্চয়ের আগ্রহ কমেছে -ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ফার্মার্স ব্যাংকে তাদের গচ্ছিত ৩৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা তুলতে যায়। টাকার জন্য ব্যাংকের গুলশান শাখায় চেক জমা দিলে টাকা নেই বলে ফেরত দেয়া হয়। একইভাবে দ্বিতীয়বার টাকা না পেয়ে চেক নিয়ে ফিরে আসে বিটিসিএল। নিজেদের গচ্ছিত টাকা তুলতে না পেরে ক্ষোভও প্রকাশ করে টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাই বিটিসিএল ফার্মার্স ব্যাংকের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপককে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের কাছে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছে। বিটিসিএল’র এক কর্মকর্তা জানান, চেকের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ফার্মার্স ব্যাংক সময় চেয়েছে। এই ঘটনার পর খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেসরকারি এই ব্যাংকটিতে তীব্র আর্থিক সঙ্কট বিরাজ করছে। তাই কেবল বিটিসিএলকেই নয়, এরকম অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের গচ্ছিত টাকা তুলতে গিয়ে চেক নিয়ে ফিরে আসছে।

সরকারি বন্ডে দীর্ঘমেয়াদে বিপুল অর্থ আটকে যাওয়া, সঞ্চয়পত্র ও শেয়ারবাজারে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ, মূলধনী যন্ত্র আমদানি ও অফশোর ব্যাংকিংয়ের আড়ালে বিপুল অর্থ পাচারের কারণে তীব্র তহবিল সংকটে পড়েছে ফার্মার্স ব্যাংকসহ বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। সংকট মেটাতে ‘কমিশনের’ বিনিময় বড় অংকের তহবিল সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় নেমেছে ব্যাংকগুলো। এদিকে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক ডলার সংকটে পড়েছে সরকারি ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো। এজন্য দৈনন্দিন প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে হাত পাততে হচ্ছে তাদের। ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতি ডলারের বিক্রয়মূল্য ৮৪ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে তা ৮৩ টাকায় নেমে আসে। বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রোববারও আন্ত:ব্যাংক রেট ৮২টাকা ৯৫ পয়সায় প্রতি ডলার বিক্রি করা হয়েছে। অপরদিকে খোলাবাজারে প্রতি ডলার বিক্রি হয়েছে ৮৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৮৫ টাকায়। এদিকে ডলারের বাজারে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতা ভোগ্যপণ্যের বাজারে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন আমদানিকারকরা। দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রæপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ডলারের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে ভোগ্যপণ্যের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ে। ডলারের বাজার যাতে স্থিতিশীল থাকে, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তারা তহবিলের জন্য বড় বড় রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান ও গ্রæপগুলোর কাছে হন্যে হয়ে ছুটছেন। উদ্বৃত্ত তারল্য থাকা সরকারি ব্যাংকগুলোর কাছেও যাচ্ছেন তারা। আর যারা তহবিল সংগ্রহ করে দিচ্ছেন তাদেরকে প্রতি ১শ টাকায় ১০ পয়সা থেকে ১ টাকা পর্যন্ত ‘কমিশন’ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। কার থেকে কে বেশি কমিশন দেবেÑ তেমন প্রতিযোগিতাও লক্ষ্য করা গেছে ব্যাংকগুলোর মধ্যে। এর কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, কিছুদিন আগেও উদ্ধৃত্ত তারল্য নিয়ে বিপদে থাকা বেসরকারি ব্যাংকগুলো নগদ টাকার তীব্র সংকটে ভুগছে। সংকটের কারণ হিসেবে ব্যাংকাররা কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করেছেন। সরকারি বন্ডে দীর্ঘমেয়াদে বিপুল অর্থ আটকে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাংক আমানতের তুলনায় সঞ্চয়পত্র ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বেশি লাভজনক হওয়ায় সেখানে বিপুল বিনিয়োগ চলে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
তাদের দাবির সত্যতা মিলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে। দীর্ঘমেয়াদী সরকারী বন্ড কিনে ব্যাংকগুলোর ১ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা আটকে গেছে সরকারি কোষাগারে। অন্যদিকে গ্রাহক ব্যাংক খাতে সঞ্চয় কমিয়ে দেওয়ায় বিনিয়োগযোগ্য উদ্ধৃত্ত তহবিল ব্যাপকহারে কমে ৮৭ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। কিছুদিন আগেও এই তহবিল ছিল এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে।

পূর্বে সরকার ২৮ দিন, ৬৪ দিন, ২৮০ দিন ও ৩৬৪ দিন মেয়াদের ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে বেশিরভাগ ঋণ নিত। কিন্তু ২০০৯ সালের পর থেকে ৫ বছর, ১০ বছর, ১৫ বছর ও ২০ বছর মেয়াদি ঋণ নেওয়া শুরু করে সরকার। ২০০৯ সালের জুনে সরকারের ঋণ স্থিতি ৫৬ হাজার কোটি টাকা হলেও আট বছরের মাথায় ১ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। শেয়ারবাজারের মন্দার কারণে এতদিন ব্যাংকগুলোতে বিপুল সঞ্চয় হওয়ায় প্রচুর উদ্ধৃত্ত তারল্য থাকার কারণে বিষয়টি কোনও সংকটের কারণ হয়নি। বরং ব্যাংকগুলোর বাড়তি তারল্য সংকট হিসেবে দেখা দেয়। একপর্যায়ে সঞ্চয় নিরুৎসাহিত করতে ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার কামাতে শুরু করে যা কমতে কমতে গড় ৫ শতাংশে পৌঁছে। একদিকে ব্যাংক সুদহার কমে, অন্যদিকে চাঙ্গা হয় পুঁজিবাজার। পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রে ঝোঁক। এ কারণে আমানতকরীরা ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বিনিয়োগ শুরু করে পুঁজিবাজার ও সঞ্চয়পত্রে। এর পাশাপাশি ‘অদৃশ্য কারণে’ ব্যাংকগুলোতে হঠাৎ ব্যাপকহারে বিনিয়োগ বেড়ে যায়। এতে বর্তমানে নগদ টাকার তীব্র সংকটে পড়তে হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। বড় তহবিল সংগ্রহে সাড়ে ৭ থেকে সাড়ে ৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে, যদিও দৃশ্যমান গড় সুদহার ৫ শতাংশে অবস্থান করছে। অর্থাৎ, সাধারণ সঞ্চয়কারীরা গড়ে ৫ শতাংশ সুদ পাচ্ছেন।

এদিকে ব্যাংকের আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধির সূচক অস্বাভাবিক আচরণ করছে। আমানতের প্রবৃদ্ধি ব্যাপকহারে কমলেও বেড়েছে ঋণের প্রবৃদ্ধি। আগস্ট শেষে আমানতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, জুনেও যা ছিল ১১ শতাংশ। অথচ উল্টো চিত্র বিনিয়োগে, প্রবৃদ্ধি বেড়ে ১৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

এই পরিসংখ্যানকে ‘অশুভ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী আমানতের প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি কম হওয়ার কথা থাকলেও এটি হচ্ছে উল্টো। কারণ হিসেবে তারা সন্দেহ করছেন, ঋণের সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। ঋণের অর্থ হয় হুন্ডির মাধ্যমে পাচার হচ্ছে, না হয় গ্রাহক যে কাজের জন্য ঋণ নিয়েছেন সেই কাজে ব্যবহার করছেন না।

এদিকে হঠাৎ করে ঋণ বেড়ে যাওয়ারও কোনও যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না খাত সংশ্লিষ্টরা। গত সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বাড়লেও আগের বছরের একই সময়ে এই প্রবৃদ্ধি ছিল ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। টাকার অঙ্কে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে ২৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে মূলধনী যন্ত্রপাতিই সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এই বিপুল বিনিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, ঋণের নামে বেশিরভাগ অর্থই পাচার হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে শুধু টাকার সংকট নয়, ডলার সংকটও তীব্র আকার ধারণ করেছে ব্যাংকখাতে। গত কয়েকবছর ধরে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে উদ্ধৃত্ত ডলার বিক্রি করে আসলেও এবারের চিত্র উল্টো। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে ৪৫ কোটি ডলার কিনতে হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এদিকে ডলার সংকট কেন্দ্র করে আমদানিকারকদের ‘জিম্মি’ করে আতিরিক্ত অর্থ আদায় করতেও দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে আমদানিকারকদের কাছ থেকে প্রতি ডলারের বিনিময়ে ৮৪ টাকা পর্যন্ত নিতে দেখা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২৭ শতাংশ বেশি এলসি খোলা হয়েছে। একই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি বেশি হয়েছে ২৪ শতাংশ। অথচ এ সময়ে রফতানি বেড়েছে মাত্র ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। অন্যদিকে টানা দুই অর্থবছর রেমিটেন্সে কমার পর চলতি অর্থবছরে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রেমিটেন্সে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত অর্থবছর আমদানিতে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির বিপরীতে রফতানি বৃদ্ধি পায় মাত্র ১ দশমিক ৭২ শতাংশ। আর রেমিটেন্স কমে ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোতে ডলারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

সংকটের ধারণা পাওয়া যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার কেনা-বেচার চিত্রে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত বাজার থেকে একটি ডলারও না কিনে বিক্রি করেছে ৫০ কোটি ডলার। গত অর্থবছর বাজারে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রির বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৯৩ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনে। এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজার থেকে ৪১৩ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনলেও এক ডলারও বিক্রি করার প্রয়োজন পড়েনি। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকে ৩৭৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার কেনে। বিক্রি করে ৩৫ কোটি ৭০ ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাজার থেকে ৫১৫ কোটি ডলার কিনলেও কোনো ডলার বিক্রির প্রয়োজন পড়েনি।

সূত্র মতে, কয়েক মাস ধরেই অস্থিরতা চলছে দেশের ডলারের বাজারে। রফতানি ও রেমিটেন্স থেকে আয় কমে যাওয়া এবং খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য খাতে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বাজারে সংকট চলছে।

এদিকে নগদ ডলারের এই সংকট সহসাই কাটার কোনও লক্ষণ নেই। চাল সহ ভোগ্যপণ্য আমদানি ব্যাপহারে বেড়ে যাওয়ায় এবং ডেফার্ড এলসির মাধ্যমে এসব পণ্য আমদানি করায় সামনের দিনে সংকট আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি ৩০ শতাংশ প্রবাসীয় আয়ের বাজার সৌদি আরবে অস্থিতিশীলতা আরও বেড়ে যাওয়ায় প্রবাসী আয় আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে ডলার সংকটের আশু কোনও সমাধান দেখছেন না খাত সংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে ডলার ও টাকার তীব্র সংকটে ত্রাহী অবস্থা ব্যাংকগুলোর শীর্ষ নির্বাহীদের। সংকট সমাধানের আশু কোনও সমাধানও দেখছেন না তারা।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) তরিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, খাদ্যশস্যসহ সরকারি বিভিন্ন পণ্য আমদানির বিল পরিশোধের জন্য আমরা হন্যে হয়ে ডলার খুঁজছি। বাংলাদেশ ব্যাংক আরো বেশি হারে বাজারে ডলার ছাড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যেত।

বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) চেয়ারম্যান ও মেঘনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, সুশাসনের ঘাটতির কারণেই দেশে ডলারের বাজারে এ অস্থিতিশীলতা। এ মুহূর্তে বাজারে কোনো স্ট্যান্ডার্ড বা আইডিয়াল সিচুয়েশন নেই। সুযোগ পেলেই ফাঁকফোকর দিয়ে কিছু ব্যাংক ডলারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলোর ডলার সংরক্ষণের হার কিছুটা কমিয়ে দিলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। ওই বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশী ব্যাংকগুলো যথাসময়ে বাজারে ডলার বিক্রি করছে না। রেমিটেন্স ও রফতানি আয় কমে যাওয়া এবং আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিদ্যমান অস্থিরতা সাময়িক। চাহিদা কমে গেলে বাজার এমনিতেই স্থিতিশীল হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, ডিপোজিট রেট কমে যাওয়ায় গ্রাহকদের মধ্যে সঞ্চয়ের আগ্রহ কমে গেছে। অনেকে আবার অধিক ডিপোজিট রেট পেতে সমবায় বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকছে। তবে ব্যাংকের ডিপোজিট রেট কমে যাওয়ার জন্য তিনি ব্যাংকারদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, ব্যাংকাররা সবাই মিলে সঞ্চয়ের সুদ কমিয়ে দিয়েছে। ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এটা মার্কেটের উপর নির্ভর করে। আমদানি, এলসি চাহিদা এবং বিভিন্ন ওকেশনে চাহিদা বাড়ে। ব্যাংকগুলোও ডলার বেশি রাখতে পারে না। তাই বিভিন্ন সময়ে চাহিদা বাড়ায় হঠাৎ করে ডলারের দাম বাড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকিতে যা দু’একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। তবে দীর্ঘদিন থেকে ডলারের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডলারের চাহিদা বেশি, সরবরাহ কম অথবা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা আসছে। এছাড়া নষ্ট্র হিসাব (বহিঃবাণিজ্যে ব্যবহৃত বৈদেশিক মুদ্রার হিসাব) ব্যবহার করা হতে পারে। এক্ষেত্রে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নষ্ট্র হিসাব নতুনভাবে তদারিক এবং অন্যান্য বিষয়ে গুরুত্ব প্রদানের তাগিদ দেন।

উৎসঃ ইনকিলাব

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com