ভেজাল ঔষধের দেশ।। ১২ টাকার ভেজালটা ৩শ’ টাকায় বিক্রি!
ঢাকা থেকে নিজস্ব প্রতিনিধি।।
দেশে অনেক মানসম্মত ঔষধ প্রস্তুত হয়। অথচ একটি সুবিধাবাদী চক্র বিদেশ থেকে ভেজাল ঔষধ আমদানি করে বাজারজাত করে নানান কারসাজি করে বেশে মুনাফা লাভের ধান্ধা করার বিষয়টি নতুন নয়। তবে এবার এমনি একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ভেজাল ঔষধ তৈরি এবং আমদানিতে সব মিলিয়ে খরচ হত মাত্র ১২ টাকা। ক্রেতা সাধারণের বিদেশি ঔষধের প্রতি একটি অন্ধ আবেগকে পুঁজি করে তারা বাজারে তা বিক্রি করত ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায়।
ক্যান্সারের ভুয়া প্রতিষেধকসহ বিভিন্ন ভেজাল ঔষধ চীনে তৈরি করে দেশের বাজারে ছড়িয়ে দেয়া চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ২১ হাজার পাতা ঔষধ জব্দ করা হয়। আটক ব্যক্তিরা হলেনঃ রুহুল আমিন ওরফে দুলাল চৌধুরী, নিখিল রাজবংশী ও মো. সাঈদ।
গত বছর ডিসেম্বর মাসের শেষ শুক্রবার, ২৯ ডিসেম্বর, দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্লা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা তাদের কাছে এমটিএক্স, ক্লোমাইড ও রিভোকন নামে তিন ধরনের ভেজাল ঔষধ পেয়েছি। এসব ঔষধ প্রতি পাতা তৈরি এবং আমদানীতে তাদের ব্যয় হত ১২ টাকা। আর তারা তাদের এজেন্টদের কাছে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করত। খুচরা পর্যায়ে এসব ঔষধ ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায় বিক্রি করা হত।
পুলিশ কর্মকর্তা মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, আটকরা প্রায়শ চীনে যাতায়াত করে। সেখানে গিয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ভেজাল ঔষধ তৈরির অর্ডার করেন। ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডসহ নিম্নমানের উপাদান দিয়ে দামী দামী জীবন রক্ষাকারী ঔষধ তৈরি করা হয়। তারপর ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানীর আড়ালে কাস্টমসের কিছু কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় সেসব ঔষধ কন্টেইনারে করে আমদানী করত এ সকল দুর্বৃত্ত চক্র।
তিনি আরও বলেন, চীন থেকে ভেজাল ঔষধগুলো এনে তারা একটি গোডাউনে রাখত। তারপর ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে দেয় তারা। ঔষধের সঙ্গে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন জড়িত। জীবন রক্ষাকারী এসব দামী ঔষধে ভেজালের ফলে মানুষ চরমভাবে প্রতারিত হচ্ছে। আমরা চক্রের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেছি। আমরা এটা শেষ করতে চাই।’
আটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা মূলত জুয়াড়ি। বিভিন্ন ক্যাসিনোতে গিয়ে জুয়া খেলতে গিয়ে তাদের পরিচয়। এরপর পরস্পরের যোগসাজসে চীনে ভেজাল ঔষধ তৈরি করে আমদানির পরিকল্পনা করে তারা।
‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, রাতে অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্য আটক এবং পরে তাদের প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাঁতিবাজার এলাকায় তাদের গোডাউন থেকে ঔষধগুলো জব্দ করা হয়।
[ সোনালীনিউজ প্রকাশিত নিউজ অবলম্বনে সম্পাদিত ও পরিমার্জিত।]