ভারত আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্ভারে ঢুকতে চেয়েছিল
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: দেশের এনআইডি সার্ভারে বর্তমানে কোন হুমকি আছে কিনা?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: না বর্তমানে আমাদের সার্ভার নিরাপদ। তবে ভারত ফ্রান্সসহ ৪টি দেশ আমাদের সার্ভারে ঢুকতে চায়। কিন্তু এটা আমি না করে দিয়েছি। এটি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়। আমাদের নাগরিকের তথ্য অন্য রাষ্ট্রকে দিবো না।
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে আপনারা কি উদ্যোগ নিচ্ছেন?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: আমরা নাগরিকদের ভোগান্তি কমাতে ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সফটওয়্যার চালু করতে যাচ্ছি। মানুষের সেবাটা তাদের দ্বারপ্রাপ্তে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এটি চালু করছি। এ সফটওয়্যারের ম্যধ্যেমে উপজেলা অফিসে ১০ দিন, জেলা ও আঞ্চলিক অফিসে তিন দিন করে ৬টি এবং এনআইডি উইংয়ে ১০ দিন এবং পাঠাতে ৪ দিনসহ মোট ৩০ দিন নির্ধারণ করা হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে মানুষের সেবা বুঝে দেওয়া হবে। দেরি করার কোন সুযোগ থাকবে না। কোন উপজেলা অফিসার ফাইল আটকাতে পারবে না, গ্রহকরা জমা দেয়ার পর অটোমেটিক এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে হেড অফিসে চলে আসবে ফাইল।
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: সবার হাতে স্মার্টকার্ড কবে দিবে ইসি?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: আমরা সাধ্যমতো নাগরিকদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। শিগগিরি দুই হাজার ফিঙ্গার প্রিন্ট ও দুই হাজার আইরিশ মেশিন ক্রয়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও জনবল সংকট রয়েছে। সেটাও সমাধান করা হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বর থেকে জেলা গুলোতে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু করব।
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: ফ্রান্সের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর কিভাবে স্মার্টকার্ড উৎপাদন হচ্ছে?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: গত ২৭ আগস্ট থেকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্মার্টকার্ড উৎপাদন শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভান্ডারে স্থাপিত ১০টি (প্রতিটি মেশিনের দাম ১শ কোটি টাকা) মেশিনে কার্ড উৎপাদন করা হচ্ছে। মেশিনগুলো থেকে প্রতিমাসে ৬ লাখ টাকা উৎপাদন করা হচ্ছে। কিন্তু যত কার্ড উৎপাদন হচ্ছে ততো বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে ত্রাণভান্ডারে কার্ডের স্তুপ জমেছে। উৎপাদন কার্যক্রম ত্বরাণিত করতে সশস্ত্র বাহিনীর সহায়তা চেয়েছে ইসি। কমিশনের নিজস্ব উদ্যোগে স্মার্টকার্ড উৎপাদন-পার্সোনালাইজেশনের কাজে সহায়তার জন্য অর্ধ শতাধিক কর্মকর্তা চেয়ে সম্প্রতি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: যারা স্মার্টকার্ড পেয়েছে তারা যদি কোন সংশোধন করতে চাই রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে তারা আবার স্মর্ট কার্ড পাবে?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: যে ৩২ লাখ নাগরিক এখন পর্যন্ত স্মার্টকার্ড পেয়েছেন, তাদের কার্ড হারিয়ে গেলে বা কোন সংশোধনের প্রয়োজন পড়লে তিনি আর স্মার্টকার্ড পাবেন না। বরং সংশ্লিষ্ট নাগরিককে দেয়া হবে পূর্বের মতো লেমিনেটিং করা ম্যানুয়াল কার্ড। এর কারণ হিসাবে এনআইডি জানিয়েছে, প্রতিটি নাগরিকের জন্য আপাতত একটি স্মার্টকার্ড বরাদ্দ রয়েছে। ফলে এই মুহুর্তে একের অধিক কাউকে কার্ড দেয়া সম্ভব হবে না। তবে ২০১৮ সালের পর এই সংকট থাকবে না বলে দাবি এনআইডি মহাপরিচালকের।
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: স্মার্টকার্ডে ধীরগতির কারণ কি?
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য ফ্রান্সের কোম্পানী অবার্থুর টেকনোলজিসকে দায়ী করছে নির্বাচন কমিশন। কেননা ওই কোম্পানীটি চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে ব্ল্যাঙ্ক স্মার্টকার্ড সরবরাহ করতে পারেনি। ২০১৫ সালের ১৪ জানুয়ারি স্মার্টকার্ড সরবরাহকারী ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান ওবার্থুর টেকনোলজিসের (ওটি) সঙ্গে ১০২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৮১৬ কোটি টাকার) চুক্তি করে ইসি। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে ৯ কোটি ভোটারের জন্য স্মার্টকার্ড উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে তাতে ব্যর্থ হওয়ার পর ওই চুক্তির মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু জুন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখ করার মতো অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। ফলে ওই কোম্পানির চুক্তি বাড়ানোর আবেদন বাতিল করে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্মার্ট কার্ডের কার্যক্রম শুরু করে ইসি।
গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকম: আপনার মূল্যবান সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন…
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম: আপনাকেও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। গ্লোবালভিশন টোয়েন্টিফোর ডটকমের শুভ কামনা করছি। এ অনলাইনটি দেশের উন্নয়নমূলক কাজে অংশিদার হবে এটাই আমার চাওয়া।
সূত্রঃ গ্লোবালভিশন