বিশ্ব পুরুষ দিবসে আমার যত ভাবনা।

November 20, 2017 12:57 am0 commentsViews: 18

ড. ওমর ফারুক। নিউইয়র্ক থেকে। স্থানীয় সময়ঃ ১৯ নভেম্বর রাত আটটা।

কোন ছেলে কোন মেয়েকে মারধর করেছে, কিংবা আরও কোন সহিংসতা চালিয়েছে। ফেসবুক বা ব্লগে সে রকম পোস্ট দেখলে শুধু নারীরা নয়, পুরুষেরা প্রতিবাদের বন্যা বইয়ে দেয়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। আহা রে, কি রকম অত্যাচারই না করেছে। আমি নিজেও নারীর ওপর সহিংসতা নিয়ে কম লিখি না। কিন্তু কোন পুরুষকে কোন মেয়ে মানুষ মেরেছে, তা দেখে নারী তো বাহবা দেয়ই, পুরুষরাও দেয়। অথচ নারীর ওপর কেন পুরুষ অমন সহিংস আচরণ করেছে, সে নিয়ে নিরপেক্ষ অনুসন্ধানের চিন্তা কেউই করে না। বিপরীত পক্ষে, পুরুষের ওপর নারীর সহিংস আচরণ অহরহ ঘটছে, সে নিয়ে নারী তো নয়, খোদ স্বজাতি পুরুষরাই কোন কারণ অনুসন্ধান না করেই সে নারীকে বাহবা দিতে থাকে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পুরুষের নারীর প্রতি এই একপেশে প্রবণতা বস্তুতপক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই নারীর কোমল একটু উষ্ণ অনুভূতি পাওয়ার খায়েশই অধিক কাজ করে। একটু নারীর পক্ষ হয়ে যদি আহা রে, উহু রে, ভাব প্রকাশ করে, তখন নারী তাকে মনে করবে, এই পুরুষ তো আমাদের প্রতি কত কোমল! নারী তখন ভাবে, আমিও তার জন্য হয়ে যাই মোহনীয়।

বস্তুতপক্ষে, আজকের যুগে শুধু নারীর প্রতি সহিংসতার ধারণাটি বেশ একটি আদিম বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। এখন নারীর কর্তৃত্ব সবখানেই। রাষ্ট্রযন্ত্র যেমনি নারীর পক্ষে, নরনারী নির্বিশেষে  সকল মানুষের প্রবৃত্তি নারীর পক্ষেই কাজ করে। এরিমধ্যে নারীদের ওপর সহিংসতা হচ্ছে না, তা আমি বলতে চােই না। তা সংঘটিত তো হচ্ছেই, বরং এখনও দেশে দেশে পুরুষ নির্যাতনের চেয়ে নারী নির্যাতনের হার অনেক গুণ বেশি।আমি যে কথা বলতে চাই, তাহল পুরুষ নির্যাতনের ঘটনার ব্যপ্তি ও অনুপাত আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি। সাবেক মূখ্য সচিব ড. কামাল সিদ্দিকীর অধীনে ‘সোসিও ইকোনমিক প্রফাইল অব ঢাকা সিটি’ প্রকল্পে ও পরবর্তীতে আমার এমফিল থিসিস ‘আরবান ফ্যামিলি প্যাটার্ন ইন বাংলাদেশ’  প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে  এ বিষয়টি আমি ভাল ভাবে উপলব্দি করি।

আমি পুরুষবাদ বা নারীবাদ এ রকম কোন ধ্যান ধারণাকে সামান্যও প্রশ্রয় দিতে নারাজ। পৃথিবীতে ’বাদ’ যদি থাকতে হয়, তাহলে সেটি হবে মানবতাবাদ।

লম্বা লেখা অনেকই পড়তে চায় না। আমি দীর্ঘায়িত করি না। শেষ কথা হলঃ নারীর ওপর সহিংসতা হোক বা পুরুষের ওপর নারীর সহিংসতা, দুটোকেই নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করতে হবে।

নারী কর্তৃক পুরুষরা যেভাবে নির্যাতিত হন!
নারী কর্তৃক পুরুষ নির্যাতনের অভিযোগের কথা শুনলেও হাসেন অনেকেই। কিন্তু আসলে এটি হাসির ব্যাপার নয়। এটি বাস্তব এবং নিত্যদিনের ঘটনা। নারী নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে আইনের বাস্তবায়নের জন্য সেমিনার, আলোচনাসভা ও মানববন্ধন পর্যন্ত হচ্ছে। কিন্তু সামাজিকভাবে খুব একটা আমলে না নেয়ায় এর প্রতিকার মিলছে না।
পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধ আন্দোলন নামক একটি সংগঠন বলছে- সমাজে অনেক পুরুষই বউয়ের যন্ত্রণায় নীরবে কাঁদেন। লোকচক্ষুর আড়ালে গিয়ে চোখ মোছেন। কিন্তু দেখার কেউ নেই। এ ছাড়া ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ডিসি ফরিদা ইয়াসমিনও জানিয়েছেন এমন কথা।
পুরুষ নির্যাতন প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি শেখ খায়রুল আলম ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ডিসি ফরিদা ইয়াসমিন আলোচনায় উল্লেখ করেছেন- নারী কর্তৃক কীভাবে নির্যাতিত হন পুরুষরা।
আসুন জেনে নিই কীভাবে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন পুরুষরা।
যৌতুকের মামলা
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সংসারে কোনো সমস্যা হলেও স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দেয়া। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় সমস্যা যৌতুক নয় পরকীয়া।
পরকীয়া
অনেক সময় দেখা যায় স্ত্রী যদি পরকীয়ায় আসক্ত হয়, এ ক্ষেত্রে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়। অনেক সংসার ভেঙে যায়।
যৌথ পরিবার ভেঙে যাওয়া
এখনকার বেশিরভাগ নারী যৌথ পরিবারে থাকতে চান না। এ ছাড়া স্বামী, বাবা-মাকে দেখভাল করবেন, তাদের বাড়তি যত্ন নেবেন- এসব নানা বিষয় সংসারে ঝামেলা ও বোঝা মনে করেন।
পুরুষ নির্যাতন আইন
পুরুষ নির্যাতনে তেমন কোনো আইন না থাকায় এটি বাড়ছে। কারণ পুরুষ  নির্যাতনের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
প্রযুক্তির অপব্যবহার
পুরুষ নির্যাতনের অরেকটি বিষয় হচ্ছে- প্রযুক্তির অপব্যবহার। প্রযুক্তির অপব্যবহার করে অনেক নারী পুরুষকে ট্রাপে ফেলেন। সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেন। এ ছাড়া অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন।
আইনের অপব্যবহার
অনেক ক্ষেত্রে নারী নির্যাতন আইনের অপব্যবহার হয়ে থাকে। দেখা যায়, আইনের অপব্যবহারের ফলে অনেক নির্দোষ পুরুষ শাস্তি পান।
শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবরকে মামলা
অনেক নারী আছেন যারা শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবরকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রতিকার না থাকায় পুরুষরা বিপদে পড়ে যান।
বৃদ্ধ পিতামাতাকে ত্যাগ
অনেক নারী আছেন যারা শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবরের সঙ্গে থাকতে ঝামেলা মনে করেন। এ ক্ষেত্রে আলাদা থাকতে পছন্দ করেন। আর পুরুষরা বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে না পারার কষ্ট কাউকে বলতে পারেন না। সম্মানের কথা চিন্তা করে চুপ থাকেন। [আংশিক যুগান্তরের সৌজন্যে]

 

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com