বাংলাদেশে ৭০ লাখ মাদকসেবী, ফিলিপিনের চেয়েও বেশি।

May 21, 2018 9:15 pm0 commentsViews: 9
বাংলাদেশ মাদকছবির কপিরাইট.
Image captionইয়াবা

বাংলাদেশে মাদক ব্যবসা এবং এর ব্যবহার এখন এক ‘ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে’ এবং ‘রক্ষণশীল অনুমান অনুযায়ী’ এখন দেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ এবং এর অধিকাংশই ইয়াবাসেবী – বলছেন একজন বিশেষজ্ঞ।

এটা ফিলিপিনের চাইতেও অনেক বেশি, কারণ ২০১৬ সালেও সেদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা ছিল ১৮ লক্ষ” – বলছেন নর্থসা্‌উথ বিশ্বিবদ্যালয়ের অধ্যাপক এমদাদুল হক, যিনি উপমহাদেশে মাদকাসক্তির ইতিহাস নিয়ে একাধিক বই লিখেছেন।

ফিলিপিনে রডরিগো দুতার্তের সরকার গত বছর মাদকের বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র অভিযান শুরু করে তাতে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৮শ’-রও বেশি মাদকাসেবী, বিক্রেতা বা পাচারকারী নিহত হয়েছে – যাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘বিচার-বহির্ভূত হত্যা’ বলে আখ্যায়িত করেছে।

বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক এমদাদুল হক বলেন, বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং ভয়াবহ।

বাংলাদেশেও মে মাসের শুরু থেকেই এক মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছে পুলিশ ও র‍্যাব, এবং সোমবার পর্যন্ত ১৭ দিনে পুলিশের ভাষায় ‘বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ২৩ জন মাদক ব্যবসায়ী ও পাচারকারী’ নিহত হয়েছে।

এরা বিভিন্ন ধরণের মাদক বিশেষ করে ইয়াবা বিক্রি ও পাচারের সাথে জড়িত বলে বলা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলছেন, মাদকব্যবসার সাথে সন্ত্রাসী-অস্ত্রবাজরা জড়িত হয়ে পড়েছে এবং এ ব্যাপারে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশে মাদক ব্যবসা এবং ব্যবহারের ব্যাপকতা আসলে ঠিক কতটা?

অধ্যাপক এমদাদুল হক বলছেন, বাংলাদেশে মাদকাসক্তদের একটা বড় অংশই হচ্ছে ইয়াবা সেবী। তা ছাড়া আছে ফেন্সিডিল, হেরোইন এবং অন্যান্য মাদক।

বাংলাদেশ মাদকছবির কপিরাইট: GETTY IMAGES
Image caption: বাংলাদেশে এমাসে মাদকবিরোধী অভিযানে ২৭ জন নিহত হয়েছে

তিনি বলেন, এতদিন এ বিষয়টা খোলামেলা ভাবে আলোচিত হয় নি, কিন্তু পরিস্থিতি সত্যি ভয়াবহ।

“বিভিন্ন নিরাময় কেন্দ্রে গিয়ে আমি মাদকাসক্তদের সাথে কথা বলে আমি যে তথ্য পেয়েছি তা সরকারি পরিসংখ্যানের চাইতে বেশী। সব মিলিয়ে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭ থেকে ১০ মিলিয়নের মধ্যে হবে।”

কিন্তু বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এখন মাদকব্যবসা এবং পাচার ঠেকাতে যে কঠোর কর্মর্সূচি শুরু করেছে – তা কি এই সমস্যা মোকাবিলার সঠিক পন্থা?

বিবিসি বাংলার মোয়াজ্জেম হোসেনের এ প্রশ্নের জবাবে মি. হক বলেন, এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা এবং এটা মোকাবিলার পন্থা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে, এ নিয়ে ‘রাজনৈতিক হিপোক্রিসিও’ কাজ করে।

“বাংলাদেশে এ সমস্যার মোকাবিলা করতে গেলে এর চাহিদা, সরবরাহ, চিকিৎসা – এরকম অনেকগুলো দিক দেখতে হবে। একক কোন পন্থা নিয়ে এরকম একটা বিরাট সমস্যার মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব। এর জন্য একটা সামগ্রিক কৌশলগত পরিকল্পনা এবং কার্যকর পদক্ষেপ লাগবে” – বলেন তিনি।

অধ্যাপক হক বলেন, মাদক পাচারের দুটো দিক আছে। একটি হলো পেডলার বা খুচরো বিক্রেতা, আরেকটা হচ্ছে যারা এই ব্যবসার মূল নিয়ন্তা – যারা গডফাদার।

বাংলাদেশে এ সরকারি অভিযানে যারা টার্গেট হচ্ছে তারা প্রধানত পেডলার লেভেলের। এখানে গডফাদারদের যে বিষয়টা তারা অনেক সময়ই রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকে। তাদের হাতে কোন মাদক থাকে না, তাই এটা একটা আইনী সমস্যা যে কর্তৃপক্ষ তাদের পেছনে লাগলেও তাদের হাতে কিছু পায় না।

এই ব্যবসার সাথে জড়িত যারা তারা যদি রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাশালী হয়, তাহলে যে অভিযান এখন চলছে – তাতে আসলে কতটা কাজ হবে?

এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক হক বলেন, “বাংলাদেশে এটা নির্বাচনের বছর। তাই সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ – এই যে যারা গডফাদার আছে যাদের কথা সরকার নিশ্চয়ই জানে – তাদেরকে হয় শাস্তি দিতে হবে অথবা কঠোরভাবে সতর্ক করতে হবে, যাতে তারা এ থেকে বিরত হয়। এরকম একটা প্রভাব বিস্তারের পদক্ষেপ নেয়া যায় কিনা তা সরকার ভেবে দেখতে পারে।” সূত্রঃ বিবিসি

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com