বনি ইসরাইল, তালুত (Saul), জালুত (Goliath) ও দাউদ (আঃ) এবং ফিলিস্তিন দখল।

December 14, 2017 1:03 am0 commentsViews: 130
।। ড. ওমর ফারুক সম্পাদিত।।
ইবন জারি’র বনি ইসরাইলের ক্রমান্বয়ে খারাপ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি বর্ণনা করেন। তারা (বনি ইসরাইল) অনেক পাপ করেছিল এবং তাদের নবীদের হত্যা করেছিল। ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে একজন অত্যাচারী রাজা প্রেরণ করেন, যে তাদের সাথে খারাপ আচরণ করত এবং তাদের রক্ত ঝরাত এবং তাদের বিরুদ্ধে ভেতর ও বাইর থেকে শত্রু লাগিয়ে দিত। তারা যুদ্ধে যাওয়ার সময় “Ark of Covenant” তাদের সাথে নিয়ে যেত। তারা এটা মনে করত যে, এটা নিয়ে গেলে এর কল্যাণে তারা যুদ্ধে জিতে যাবে এবং এটা তাদের শান্তির প্রতীক এবং এটা ছিল হযরত মুসার (আ) লোকজনের ফেলে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ। যখন তারা গাজা (Gaza) ও আশকালন (Ashkalon) –এর লোকজনের সাথে যুদ্ধে গেল, তারা পরাজিত হল। কারণ তাদের “Ark of Covenant” তাদের কাছে থেকে পাকড়াও করা হয়েছিল। যখন ইসরাইলের রাজা এর খবর শুনল, সে সেখানেই মারা গেল।
বনি ইসরাইল নেতৃত্ব শূন্য অবস্থায় রইল, যতক্ষণ পর্যন্ত না আল্লাহ তা’য়ালা তাদের মধ্যে Samuel (শাম্মিল) নামে একজন নবী আসল। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল যে, তিনি যেন তাদেরকে একজন রাজা নিযুক্ত করে দেন, যিনি তাদেরকে তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দেবেন। ইবন আসাকারের মতে, বনি ইসরাইল তাদের “Ark of Covenant” কে খুব পবিত্র ও তাদের ইতিহাসের গুরত্বপূর্ণ প্রতীক হিসেবে মনে করত। তারা তাদের “Ark of Covenant” যুদ্ধ ক্ষেত্রেও নিয়ে যেত এবং তারা বিশ্বাস করত যে, এটার কারণে আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করবন। এ বিশ্বাস, তাদের তাদের মনে প্রশান্তি ও বিরাট সাহস যোগাত এবং তাদের শত্রুরা পর্যন্ত এটার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। তাদের শত্রুরা আরও বিশ্বাস করত যে, এটাতে আল্লাহ তা’য়ালা বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছেন। ধীরে ধীরে বনি ইসরাইলরা আল্লাহ তা’য়ালার আইন মানাকে অগ্রাহ্য করতে লাগল এবং খারাপ অভ্যাস তাদের জীবনের অংশ হয়ে গেল। আল্লাহ তা’য়ালা তাদের উপর এক শত্রু পাঠালেন, ফিলিস্তিনি (বর্তমানের ফিলিস্তিনের অধিবাসীদের পূর্ব পুরুষদের না বরং আজ থেকে ৩০০০ বছর আগে ফিলিস্তিনে যারা বসবাস করত, তারা বাইবেলে তাদেরকে বলা হয়েছে ‘Cannanite’), তারা ইসরাইলিদের পরাজিত করল, তাদের “Ark of Covenant” হস্তগত করল, তাদেরকে তাদের বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল, এবং তাদের সন্তানদের দাস/দাসী হিসেবে বিক্রি করল। তাদের ক্ষমতা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছিল। তারা একে অপরের থেকে আলাদা হয়ে পড়েছিল এবং তারা ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েছিল।
তারপর তাদের স্বস্তি দেয়ার জন্য তাদের কাছে নবী স্যামুয়েলকে (আঃ) [আরবীতে Samuel কে বলে ‘শাম্মিল’] আসলেন। তারা তাদের একজন শক্তিমান নেতা নিয়োগ দেয়ার জন্য তাদের নবীকে বলল, যে রাজার ব্যানারে তারা একত্রিত হবে এবং ফিলিস্তিনিদের (Cannanites) বিপক্ষে যুদ্ধ করবে। নবী স্যামুয়েল (আ) তাদের দুর্বলতা জানতেন, তাই তাদের বললেনঃ “আমি ভয় করছি যে, যখন সময় আসবে তখন তোমরা যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানাবা।” কিন্তু তারা তাঁকে নিশ্চয়তা দিল যে, তারা অনেক অপমানের স্বীকার হয়েছে এবং তারা আল্লাহ তা’য়ালার পথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত, যদিওবা এতে তাদের জীবনও চলে যায়।
নবী স্যামুয়েল (আঃ) আল্লাহ তা’য়ালার কাছে দিক নিদের্শনার জন্য প্রার্থনা করলেন। আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর কাছে বাণী পাঠালেন যে, সেই ব্যক্তি যাকে বাছাই করা হয়ে এ কাজের জন্য (বনি ইসরাইলের রাজা ও তাদের যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য), তালুত (Saul) হবে তাদের রাজা। নবী জানতে চাইলেন, তিনি কিভাবে ভবিতব্য রাজাকে চিনবেন। তাকে বলা হল যে, তালুত (Saul) নিজেই তাঁর কাছে আসবে এবং তারপর তাদের (বনি ইসরাইল) উচিৎ হবে, তার কাছে তাদের রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করা, যাতে তিনি তাদেরকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে পারেন।
তালুত (Saul) লম্বা ও শক্তিশালী, ধার্মিক এবং সাংঘাতিক বুদ্ধিমান ছিলেন। তিনি তাঁর পিতার সাথে থাকতেন ও তার খামারেই কাজ করতেন। একদিন তার কয়েকটি গাধা হারিয়ে গিয়েছিল। তার চাকরের সাথে করে, তিনি গাধাগুলো খুঁজতে বের হলেন। তারা অনেকদিন খুঁজল এবং খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তালুত (Saul) তাঁর চাকরকে বললঃ “চল ফিরেই যায়, আমি নিশ্চিত যে আব্বা এতক্ষণে অনেক দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন এবং অন্য পশুগুলোরওতো যত্ন নিতে হবে!” তাঁর চাকর তাঁকে পরামর্শ দিল যে, তাঁরা যে এলাকাতে আছে, সে এলাকা স্যামুয়েল নবীর (আঃ) এলাকা। তাঁদের তাঁর কাছে গিয়ে হারানো গাধাগুলোর খবর নেওয়া উচিৎ।
তালুত (Saul) রাজি হল এবং তারা চলতে থাকল। পথে তারা পানি বহনকারী মেয়েদের কাছ থেকে দিক নির্দেশনা নিল। তারা পর্বতের দিকে যেতে বলল। সেখানে, বিশাল জনতা নবী স্যামুয়েলের (আঃ) জন্য অপেক্ষা করছিল। যখন তালুত (Saul) তাঁর দৃষ্টিতে দৃষ্টি রাখল, তাৎক্ষণাৎ সে তাঁকে (স্যামুয়েল (আঃ) চিনে ফেলল যে, তিনিই নবী। নবী স্যামুয়েলও তালুতকে (Saul) চিনে ফেললেন, যাকে আল্লাহ তা’য়ালা রাজা হিসেবে তাদের জন্য মনোনীত করেছেন। তালুত (Saul) নবীকে সম্মানের সাথে স্বাগত জানাল। যখন তিনি তার হারানো গাধাগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবী তাকে দুশ্চিন্তা করতে মানা করলেন, তার গাধাগুলো ইতমধ্যেই তার পিতার খামারে চলে গিয়েছে।
তিনি তারপর তালুতকে (Saul) বললেন যে, আল্লাহ তা’য়ালা তাকে বনি ইসরাইলের রাজা হিসেবে মনোনীত করেছেন। তার কর্তব্য হবে দায়িত্ব বুঝে নেয়া, তার ব্যানারে তাদেরকে একত্রিত করা এবং তাদেরকে তাদের শত্রুদের থেকে রক্ষা করা। যদি তিনি আল্লাহ তা’য়ালার আদেশ মান্য করেন, তবে তাকে বিজয় দান করা হবে। তাঁকে সহসা এ সম্মান প্রদান করাতে তালুত (Saul) বিস্মিত হয়ে গেলেন। এটা ছিল বিরাট এক দায়িত্ব। সে প্রতিবাদ করল যে, সে বনি বিনইয়ামিনের (Children of Benjamin, উল্লেখ্য বিনইয়ামিন বা বেঞ্জামিন হযরত ইযাকুবের (আ) দ্বাদশ পুত্র ছিলেন) যেটা ইসরাইল গোত্রের সবচেয়ে কম পরিচিত; তিনি নেতৃত্ব ও রাজত্ব সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং তার কোন সম্পদই নেই। স্যামুয়েল তাকে বললেন যে, এটা আল্লাহ তা’য়ালার ইচ্ছা যে, তিনি রাজা হবেন, তাকে আল্লাহ তা’য়ালা যে অনুগ্রহ দিয়েছেন তার জন্য তার উচিৎ আল্লাহ তা’য়ালাকে ধন্যবাদ দেয়া এবং বিশ্বাসে দৃঢ় হওয়া।
তালুতের (Saul) হাত ধরে, স্যামুয়েল তাকে বনি ইসরাইলের কাছে নিয়ে গেলেন। কিন্তু তারা আল্লাহ তা’য়ালার কাছ থেকে সরাসরি নিদর্শন দেখার পক্ষে জেদ ধরে রইল। নবী স্যামুয়েল (সাঃ) তাদেরকে শহরের বাইরে যেতে বললেন নিদর্শন দেখার জন্য। তারা সেটা করল। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ
“মূসার পর তুমি কি বনী ইসরাঈলের একটি দলকে দেখ নি, যখন তারা বলেছে নিজেদের নবীর কাছে যে, আমাদের জন্য একজন বাদশাহ নির্ধারিত করে দিন, যাতে আমরা আল্লাহর পথে যুদ্ধ করতে পারি। নবী বললেন, তোমাদের প্রতিও কি এমন ধারণা করা যায় যে, লড়াইর হুকুম যদি হয়, তাহলে তখন তোমরা লড়বে না? তারা বলল, আমাদের কি হয়েছে যে, আমরা আল্লাহর পথে লড়াই করব না। অথচ আমরা বিতাড়িত হয়েছি নিজেদের ঘর-বাড়ি ও সন্তান-সন্ততি থেকে। অতঃপর যখন লড়াইয়ের নির্দেশ হল, তখন সামান্য কয়েকজন ছাড়া তাদের সবাই ঘুরে দাঁড়াল। আর আল্লাহ তা’আলা জালেমদের ভাল করেই জানেন। আর তাদেরকে তাদের নবী বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তালূতকে তোমাদের জন্য বাদশাহ সাব্যস্ত করেছেন। তারা বলতে লাগল তা কেমন করে হয় যে, তার শাসন চলবে আমাদের উপর। অথচ রাষ্ট্রক্ষমতা পাওয়ার ক্ষেত্রে তার চেয়ে আমাদেরই অধিকার বেশী। আর সে সম্পদের দিক দিয়েও সচ্ছল নয়। নবী বললেন, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তাকে পছন্দ করেছেন এবং স্বাস্থ্য ও জ্ঞানের দিক দিয়ে প্রাচুর্য দান করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তাকেই রাজ্য দান করেন, যাকে ইচ্ছা। আর আল্লাহ হলেন অনুগ্রহ দানকারী এবং সব বিষয়ে অবগত। বনী-ইসরাঈলদেরকে তাদের নবী আরো বললেন, তালূতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে, তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের সন্তুষ্টির নিমিত্তে। আর তাতে থাকবে মূসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে। অতঃপর তালূত যখন সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বেরুল, তখন বলল, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদিগকে পরীক্ষা করবেন একটি নদীর মাধ্যমে। সুতরাং যে লোক সেই নদীর পানি পান করবে সে আমার নয়। আর যে, লোক তার স্বাদ গ্রহণ করল না, নিশ্চয়ই সে আমার লোক। কিন্তু যে লোক হাতের আঁজলা ভরে সামান্য খেয়ে নেবে তার দোষ অবশ্য তেমন গুরুতর হবে না। অতঃপর সামান্য কয়েকজন ছাড়া সবাই সে পানি পান করল । পরে তালূত যখন তা পার হল এবং তার সাথে ছিল মাত্র কয়েকজন ঈমানদার। তখন তারা বলতে লাগল, আজকের দিনে জালূত এবং তার সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার শক্তি আমাদের নেই। যাদের ধারণা ছিল যে, আল্লাহর সামনে তাদের একদিন উপস্থিত হতে হবে। তারা বারবার বলতে লাগল, সামান্য দলই আল্লাহর হুকুমে বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে । আর যারা ধৈর্যশীল, আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন। আর যখন তালূত ও তার সেনাবাহিনী শত্রুর সম্মুখীন হল, তখন বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের মনে ধৈর্য সৃষ্টি করে দাও এবং আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখ-আর আমাদের সাহায্য কর সে কাফের জাতির বিরুদ্ধে।”
[আল-কুরআন; সূরাঃ বাকারা, আয়াতঃ ২৪৬-২৫০]
তালুত দৃঢ় বিশ্বাস এবং বুদ্ধিমত্তার সাথে তার সৈন্য যোগাড় করতে লাগলেন। তিনি নির্দেশ দিলেন যে, শুধুমাত্র দায়িত্বশীল লোকেরা যেন যোগদান করে। যারা বাড়ি তৈরিতে নিয়োজিত, যে লোক বিয়ে করতে যাচ্ছে এবং যারা ব্যাবসা নিয়ে ব্যস্ত তারা যেন যোগদান না করে [কারণ, যে বাড়ি তৈরি নিয়ে ব্যস্ত সে যুদ্ধের ময়দানে বাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তা করবে এবং তার মাধ্যমে পুরো ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হবে, একই কথা প্রযোজ্য অন্যগুলোর জন্য। কাজেই যুদ্ধে তারাই যোগ দিইক, যারা ১০০% যুদ্ধ নিয়ে মানসিকভাবে প্রস্তুত]।
সুপ্রশিক্ষিত সৈন্য প্রতিষ্ঠার পর, তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তাদেরকে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে। তিনি তাদেরকে বললেন যে, তাদের যাত্রাপথের মধ্যে তারা একটি নদীর মধ্য দিয়ে অতিক্রম করবে যেখানে তারা শুধুমাত্র সেটুকু পানি পান করবে যেটুকুতে তাদের তৃষ্ণা মিটবে কিন্তু তার একচুলও বেশি নয়। তিনি হতাশ হয়ে দেখলেন যে অধিকাংশই আঁজলা ভরে পানি পান করল!! তিনি তাদেরকে বরখাস্ত করে দিলেন এবং তাদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনকে রাখলেন যারা তাকে মান্য করেছিল, তারাই ছিল যারা তাদের সততা বজায় রেখেছিল। এটার ফলে সৈন্যদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হল কিন্তু তিনি তা আমলে নিলেন না। তিনি গুণে বিশ্বাসী ছিলেন, সংখ্যায় না; বিশ্বাসীদের একটা ছোট গ্রুপ বিশাল সংখ্যার অনির্ভরযোগ্য সৈন্যদের থেকে ভাল।
তালুতের লোকেরা নদীর অপর পাড়ে শত্রুদের দেখল। তাদের শত্রুরা শারীরিকভাবে শক্ত সামর্থ ও উন্নতমানের অস্ত্রের অধিকারি ছিল। তাদেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিল জালূত (Goliath), যে পরিচিত ছিল তার বিশাল দেহ ও শক্তির জন্য। তালুতের সৈন্যদের বিরাট অংশ জালূতের (Goliath) বিশাল শক্তিশালী সৈন্যদের দেখে পালাল। যে ছোট একটা দল ছিল তারা পরিস্থিতি যাই হোক না কেন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত ছিল, কারণ তারা শুনেছিল যে অতীতে অনেক নজির আছে যেখানে আল্লাহ তা’য়ালা ছোট দলের দ্বারা বিরাট বাহিনীকে পরাজিত করিয়েছেন।
[তালুত বা Saul-এর সাথে এসেছিল ৭২,০০০; নদী পার করেছিল ৪,০০০ জন আর বাকিরা পানি পান করে আর যুদ্ধে যেতে চাইল না। ৪,০০০ জনের মধ্যে আবার জালুতের (Goliath) শক্তিশালী সৈন্যদেখে অধিকাংশ পালাল আর বাকি থাকল মোটে ৩১০ এর কিছু!! এই সৈন্যগুলোই প্রকৃত যুদ্ধ অংশগ্রহণ করেছিল। অনেক ‘আলেমের মতামত যে তালুতের সাথে যুদ্ধে যতজন অংশ নিয়েছিলেন সেই একই পরিমান সৈন্য অংশ নিয়েছিলেন বদরের যুদ্ধে এবং শেষ জামানায় মাহাদির কাছে যারা বায়’আত প্রথম গ্রহণ করবেন (বায়তুল হারামে) তাদের সংখ্যাও হবে সেই একই অর্থাৎ ৩১০-এর কিছু বেশি]
যাইহোক, তালুত খুবই বুদ্ধিমান ছিলেন, তিনি বুঝলেন সরাসরি যুদ্ধ করে এদের সাথে পারা যাবে না তাই তিনি তাদেরকে দ্বৈত যুদ্ধের (Duel) আহবান জানালেন। শত্রুপক্ষ থেকে জালুত (Goliath) রাজি হল, এরপর তালুত তার সৈন্যদের কাছে জানতে চাইলেন যে কে জালুতের (Goliath) [জালুত ছিল দানবের মত উচুলম্বা ও শক্তিশালী] সাথে ডুয়েল করতে রাজি আছে? অবাক বিষয়, কোন হাত নেই, কেউ যুদ্ধ করতে রাজি হয় না!! হটাৎ তিনি (তালুত) দেখলেন একটা কিশোর হাত তুলেছে। তিনি আবারও একই প্রশ্ন করলেন, আবারও অবাক বিষয়, কেউ হাত তুলল না, শুধুমাত্র ঐ কিশোরই হাত তুলল!! তিনি কিশোর বলে তাকে গুরত্ব দিলেন না, কারণ তিনি চাচ্ছিলেন, শক্ত সামর্থবান কেউ যুদ্ধের জন্য আসুক। তাই তিনি আবারও একই প্রশ্ন করলেন, আবারও তিনি একই উত্তর পেলেন! শুধু সেই কিশোরই হাত তুলেছে! যাই হোক, তিনি সেই কিশোরকেই যুদ্ধের জন্য পাঠালেন।
সেই কিশোর ছিল দারুণ সাহসী, তিনি একটা গুলতি দিয়েই দানবাকৃতি জালুতকে (Goliath) পরাজিত করলেন এবং মেরে ফেললেন। এর ফলশ্রুতিতে বনি ইসরাইল, তখনকার মুসলিম জাতি যুদ্ধে জিতে গেল এবং ফিলিস্তিনে তাদের জায়গা পেল। এ কিশোরই হলেন হযরত দাউদ (আঃ)!!

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com