ফেসবুকে স্ট্যাটাসঃ মহিলা আ.লীগ নেত্রী বহিষ্কার।।
৫ মার্চ ২০১৮ঃ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহানা মিলিকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফারহানা মিলি তার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে অসৌজন্যমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সে জন্য মহিলা আওয়ামী লীগ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। তার এই সংগঠন পরিপন্থী, সংগঠন বিরোধী এবং অসৌজন্যমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হল।
এর আগে গত ৩ মার্চ ফারহানা মিলি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়ার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘রাজনীতি বুঝুক না বুঝুক, সেক্সনীতি বুঝলেই বাপের বয়সী সাধারণ সম্পাদকের কোলে বসে ফুরতি করাটাই রাজনীতিতে পদবী পাওয়ার কাজ দেবে! শিক্ষিত না হলে দোষ নাই, একাধিক নেতা আর ব্যবসায়ীদের শারীরিক সুখ দিতে পারলেই পদবী পাওয়া যাবে! মঞ্চে দাঁড়িয়ে দুই চারটা রাজনৈতিক ভালো কথা বলতে না পারলেও হোটেলে গিয়ে বাচ্চাদের ভঙ্গিমায় প্রেমালাপ পারলেই রাজনীতি হবে! স্বামীর রোজগারে ঠিকমত বাসাভাড়া আসবে না, কিন্তু জীবন যাপনের স্টাইল লাখ টাকার বাজেটে করতে পারাটাই রাজনৈতিক স্বার্থকতা তাদের জন্যে!…’ । ফারহানা মিলির এই স্ট্যাটাসটি নিয়ে কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ প্রকাশ করে। পরবর্তীতে বিষয়টি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফারহানা মিলি আমাদের সময়কে বলেন, তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে কিছু লেখেননি, লিখেছেন স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে। বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বহিষ্কারের ব্যাপারে জানেন না। তবে কিছুক্ষণ আগে তিনি নিজেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের আইন ও বিধিমালা সংস্কার কমিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেসবুকের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করার সুপারিশ করেছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের নামে অপপ্রচার, ঘৃণা প্রচার, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও দল সম্পর্কে অশোভন ও মান হানিকর বক্তব্য আসার আশঙ্কা থেকে তারা এই সুপারিশ করেছে বলে জানানো হয়। এটি মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার শামিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা দল সম্পর্কে মানহানিকর প্রচার চালালে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। আর এ ধরনের প্রচার তো শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হচ্ছে না। রাজনীতির মাঠে হরহামেশাই হচ্ছে। সেসব বিষয়ে নীরব থেকে নির্বাচন কমিশন ফেসবুক নিয়ে টানাটানি করলে এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনমনে সন্দেহ জাগা স্বাভাবিক। এ ছাড়া কোন বিধান জারি করলেই তো হবে না। সেটি বাস্তবসম্মত কি না, যাচাই করে দেখতে হবে। একজন সাবেক নির্বাচন কমিশনারও বলেছেন, এ ধরনের বিধান করলে তা কার্যকর করা অসম্ভব হবে। কারণ ফেসবুক, টুইটার এগুলো এখন জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম। বিপুল সংখ্যক মানুষ ইন্টারনেটে এসব যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করবে। এগুলো বন্ধ করলে নির্বাচনের পরিবেশ সুস্থ হবে না।
ইসিকে মনে রাখতে হবে, কঠিন বাস্তবতায় আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হল সেই নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করা তথা সবার জন্য মাঠ সমতল করা। রাষ্ট্রীয় সুবিধা ব্যবহার করে কোন দল নির্বাচনী প্রচার চালাবে, আর অন্যদের সভা-সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হবে, সেটি হতে পারে না। তফসিলের দোহাই দিয়ে ইসি এ ব্যাপারে নিশ্চুপ থাকতে পারে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তফসিল ঘোষণার পর তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিজের নিয়ন্ত্রণে আনা। ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনে রদবদল শুরু হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে আরও হবে। সেই রদবদলের প্রতিও ইসির কঠোর নজরদারি থাকতে হবে। তবে ইলেকট্রনিক ডিসপ্লে সম্পর্কে ইসির সংস্কার কমিটি যে প্রস্তাব করেছে, তা গ্রহণযোগ্য বলে ধারণা করি। সে জন্য আলাদা বিধি বা আইন করার প্রয়োজন নেই। বর্তমান আইনেই নির্বাচনী প্রচারের ওপর যে বিধিনিষেধ আছে, তার যথাযথ প্রয়োগ করলেই কোনো প্রার্থী লাখ লাখ টাকা খরচ করে এ ধরনের প্রচার চালাতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের কাছে আহ্বান থাকবে, ফেসবুক বন্ধের অবাস্তব চিন্তা বাদ দিয়ে তারা যেন নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে। ইসিকেও শুধু কথা নয়, কাজ দিয়েই প্রমাণ করতে হবে তারা স্বাধীন ও নিরপেক্ষ।
সেই স্ট্যাটাসের জবাবে যা বললেন মহিলা আ. লীগ নেত্রী
রাজনৈতিক নেত-নেত্রীদের নিয়ে শনিবার সকালে নিজের ফেসবুকে আইডিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারহানা মিলি বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন।
মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘রাজনীতি বুঝুক না বুঝুক, সেক্সনীতি বুঝলেই বাপের বয়সী সাধারণ সম্পাদকের কোলে বসে ফুরতি (ফুর্তি) করাটাই রাজনীতিতে পদবী পাওয়ার কাজ দেবে! শিক্ষিত না হলে দোষ নাই, একাধিক নেতা আর ব্যবসায়ীদের শারীরিক সুখ দিতে পারলেই পদবী পাওয়া যাবে! মঞ্চে দাঁড়িয়ে দুই চারটা রাজনৈতিক ভাল কথা বলতে না পারলেও হোটেলে গিয়ে বাচ্চাদের ভঙ্গিমায় প্রেমালাপ পারলেই রাজনীতি হবে!
ওইসব মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হওয়ার পর তিনি তার ফেসবুক আইডিতে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি তার ফেসবুক আইডিতে উল্লেখ করেন, আমি জেলার রাজনীতি নিয়ে ফেইজবুকে স্টেটাস দিয়েছি।আমার প্রশ্নের জবাব দে জারজ সন্তানের দল,,,,,
০১/ আমি কি কোন রাজনৈতিক সংগঠনের নাম লিখেছি? ০২/ আমি কি কোথাও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ এর সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক এর নাম উল্লেখ করেছি? ০৩/ আমি কি কোথাও আওয়ামী লীগ বা অন্য কোন রাজনৈতিক সংগঠন এর সাধারণ সম্পাদক এর নাম উল্লেখ করেছি? ০৪/ আমি কি কোথাও কারো ব্যক্তিগত নাম ব্যবহার করেছি?
ফারহানা মিলির ফেসবুক আইডির স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হল…
” আমি জেলার রাজনীতি নিয়ে ফেইজবুকে স্টেটাস দিয়েছি। আমার প্রশ্নের জবাব দে জারজ সন্তানের দল,,,,, ০১/ আমি কি কোন রাজনৈতিক সংগঠনের নাম লিখেছি?
০২/ আমি কি কোথাও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ এর সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক এর নাম উল্লেখ করেছি? ০৩/ আমি কি কোথাও আওয়ামীলীগ বা অন্যকোন রাজনৈতিক সংগঠন বা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এর নাম উল্লেখ করেছি?
০৪/ আমি কি কোথাও কারো ব্যক্তিগত নাম ব্যবহার করেছি? কতগুলি কুলাঙ্গার জারজ তা জড়াচ্ছেন নিয়ে কেন্দ্রীয় সম্মানিত ও সকলের শ্রদ্ধাভাজন সাধারণ সম্পাদক এর সাথে!
আমার স্টেটাস মনুযোগ দিয়ে পড়লেই যে কেউ বুঝতে পারবে আমি স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে স্টেটাস দিয়েছি। আর আমার এই স্টেটাসের আগে পরের সব স্টেটাস দেখলেই যে কেউ বুঝতে পারবে আমি জেলার রাজনীতি নিয়ে লিখেছি। আর আমি শুধু নারীদের বিরুদ্ধে কিছুই লিখিনি, কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেছি, কিছু অসৎ ব্যক্তির রাজনৈতিক অযোগ্যতার কথা তুলে ধরেছি!
আর আমি কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ নিয়ে কখনোই কোন আপত্তিকর মন্তব্য করিনি, করতে পারিনা। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক অত্যন্ত নিঃষ্কলঙ্ক এবং নির্ভেজাল একজন মানুষ। নারীদের উনি অত্যধিক সম্মানের নজরে দেখেন। নারী কর্মীরাও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কে অত্যধিক সম্মান করেন।
বিঃদ্রঃ এইসব ভুয়া নিউজ করলে কার লাভ হবে? একমাত্র জেলার কয়েকটা কুলাঙ্গার এর! যারা জেলা আওয়ামীলীগ টা কে পুরোদমে ধ্বংস করে দিয়েছে! যারা রাজনীতির নামে পদবী বেচেঁ অবৈধ পয়সার মালিক হয়েছে! বিল্ডিং আর দামী ফ্ল্যাট এর মালিক হয়েছে! ”