ফাস্টফুডের দোকানে ডিবি কর্মকর্তাদের কাণ্ড, ৮ জন প্রত্যাহার

প্রত্যাহারকৃতরা হলেন, ডিবির পরিদর্শক মাসুদুর রহমান, এসআই মিজানুর রহমান ও আবু সায়েম, এএসআই আজিুজুর রহমান, দেওয়ান তৌফিক, বকুল মিয়া, আমিনুল হক ও কনস্টেবল লুৎফর রহমান।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি) মোহাম্মদ নূরে আলম জানান, রোববার ডিবি পুলিশের সঙ্গে ফাস্টফুটের মালিকসহ তার লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ইতোমধ্যে ডিবি ৭ কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে সাময়িক প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। আর ঘটনাটি তদন্তের জন্য তাকে প্রধান করে একটি ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘটনায় যদি ডিবি পুলিশের কোনো কর্মকর্তা দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার রাতে পার্কের সামনে অবস্থতি মাই লাইফ নামে একটি ফাস্টফুডে খাবার খেতে যায় ডিবির এএসআই আমিনুল ও বকুল। তারা খাবারের পর কোয়ালিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে নিজেদের পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে খাবারের টাকা দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে দোকান মালিকের ছেলের সঙ্গে তর্কে জড়ান ডিবির ওই কর্মকর্তারা। এক পর্যায়ে ডিবির দুই এএসআই দোকানের মালিক রবীনকে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে ছুটে আসে রবীনের বাবা জালাল উদ্দিন, মা রীনা ইয়াসমিন, ভাই আলামিন। তারা এসে প্রতিবাদ করলে তাদেরকেও মারধর করে।
এক পর্যায়ে আশপাশের দোকানদাররা এক জোট হয়ে ডিবির দুই কর্মকর্তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে মারাত্মকভাবে আহত হন ডিবির কর্মকর্তারা। পরে খবর পেয়ে ডিবির একটি টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং সংঘবন্ধ ব্যবসায়ী ও লোকজনের ওপরপর লাঠিচার্জ শুরু করেন। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এক পর্যায়ে ব্যবসায়ী ও এলাকার বেশ কিছু যুবক সংঘবদ্ধভাবে ডিবির উপর চড়াও হয়। শুরু হয় উভয়েপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ।
পরে খবর পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। হামলা-পাল্টা হামলায় আহত হন ডিবির ইন্সপেক্টর মাসুদ রানা, এসআই মিজান, সায়েম, এএসআই আমিনুল ও বকুল। তাদের প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান এসআই মিজান ও সায়েমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এছাড়াও ডিবি পুলিশের হামলায় গুরুতর আহত হয় জালাল উদ্দিন, রীনা ইয়াসমিন, রবীন ও আলামিন। তাদেরকে প্রথমে খানপুর হাসপাতালে পরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। গ্রেফতারের ভয়ে ঢাকা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসেন আহত জালাল উদ্দিন, রীনা ইয়াসমিন, রবীন ও আলামিন। পরে তারা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।