তের ভেজালের বিরোধীদল বিএনপি’র সাতকাহন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে প্রায় বছর দুয়েক আগে। এরপর নতুন কমিটি গঠনে দৃশ্যত কোনও উদ্যোগ এখনও চোখে পড়ে নি। বিএনপির প্রধানতম এই সহযোগী সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির নেতৃত্বে। নতুন কমিটি নিয়ে দীর্ঘসূত্রতায় পরবর্তী কমিটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশীরাও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তাই আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন কমিটির ফয়সালা চায় ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নেতারা। এমতাবস্থায় রোববার (০২ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী একঝাঁক নেতা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করেছেন। সকাল থেকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জড়ো হয়ে পরে তারা এই সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় ছাত্রদলের নেতারা মঙ্গলবার (০৪ সেপ্টেম্বর) এর মধ্যে ছাত্রদলের নতুন কমিটি চান। এসময় রিজভী তাদের বলেন, এখন দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলনের সময়। এ মুহূর্তে কমিটি দিলে বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে।
জবাবে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতারা বলেন, আমরা লিখিত দেব, এই মুহূর্তে কোনো বিদ্রোহ করব না। আমরা শতভাগ দায়িত্ব নিয়েই বলছি, বিদ্রোহ করব না।
এরপরও বিভিন্নভাবে ছাত্রদল নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকেন রিজভী। এক পর্যায়ে কয়েকজন ক্ষুব্ধ নেতা রিজভীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, কী… (প্রকাশের অযোগ্য) ভূগোল বোঝান আমাদের? কিছুদিন আগেই তো সারাদেশে জেলা ও ইউনিট কমিটি হলো। তখন তো কোনও ঝামেলা হলো না। এখন ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটি করলে কি সমস্যা হবে আপনাদের? আপনি ভাইয়ের (তারেক রহমান) সঙ্গে কথা বলেন। ভাইকে বলেন পদপ্রত্যাশীরা কমিটির দাবিতে আমার (রিজভী) সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। যা হয় হোক, আমরা দ্রুত কমিটির একটা সমাধান চাই।
রিজভীর সঙ্গে দেখা করার পর কার্যালয়ে অবস্থানরত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন নেতারা। বিষয়টি টের পেয়ে দ্রুত কার্যালয় ত্যাগ করেন তিনি।
পরে ছাত্রদল নেতারা দলীয় কার্যালয়ের ৪ তলায় ছাত্রদলের অফিসে গিয়ে অবস্থান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- ছাত্রদলের সহ সভাপতি নাজমুল হাসান, আব্দুল ওহাব, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নুরুল হুদা বাবু, আবুল হাসান, শামছুল আলম রানা, সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিম, আজিজুল হক পাটুয়ারী, ক্রিড়া সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. শামীম ইকবাল খান, সদস্য মোমিনুর রহমান মালিতাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এর আগে শনিবার (০১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভায় নতুন কমিটি ঘোষণার দাবিতে নিজ সংগঠনের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের রোষের মুখে পড়েছিলেন ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। তারা বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় নতুন কমিটির দাবিতে অন্তত ৩০-৩৫ জন ছাত্রদল নেতা তখন মঞ্চে উঠে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বক্তব্য দিতে বাধা প্রদান করেন। সে সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে পদপ্রত্যাশী ছাত্রদল নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে সম্মিলিতভাবে বলতে থাকেন, সংগঠনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখন কোনও নেতৃত্ব নাই, কমিটি নাই। [সূত্রঃ পূর্বপশ্চিম]