ড. কামাল হোসেন কোথায় ছিলেন?
গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সিঙ্গাপুর সফর নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমীন হাওলাদার দাবি করেছেন ড. কামাল হোসেন চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান নি। তার সিঙ্গাপুর যাওয়ার খবর মিথ্যা, সময় হলে সবই জানতে পারবেন।
রোববার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের যৌথ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে জাপা মহাসচিব এ কথা বলেন।
এর আগে ড. কামাল হোসেনের ঘনিস্ট সূত্র জানায়, পায়ের চিকিৎসার জন্য গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা ছাড়েন দেশের সিনিয়র এ আইনজীবী। প্রথমে ব্যাংকক ও পরে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পায়ের চিকিৎসা করিয়ে নয়দিন পর শনিবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে তিনি ঢাকায় ফেরেন।
ড. কামালের হোসেন সিঙ্গাপুর সফরে যাওয়ার আগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে জাপার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল কিনা জানতে চাইলে বেশ জোড়ালোভাবে রুহুল আমীন বলেন, ড. কামাল সিঙ্গাপুর যাননি। এটা মিথ্যা কথা। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। আর সময় হলে এ বিষয়ে জানতে পারবেন।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন বড় প্রশ্ন. আসলে ড. কামাল কোথায় ছিলেন?
দেশে ফিরলেন ড. কামাল : কি হবে জাতীয় ঐক্যের?
চিকিৎসা শেষে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় ফিরেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী, গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন। শনিবার দুপুরে তিনি ঢাকায় ফেরেন। ড. কামাল হোসেন হাঁটুর চিকিৎসার জন্য প্রথমে ব্যাংকক এবং পরে সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে যান।
ড. কামাল হোসেন দেশে ফেরার পর বিকালেই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া এবং গণফোরাম নেতাদের সঙ্গে তার বেইলি রোডের বাসায় বৈঠক করেন।
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্যসচিব আবম মোস্তফা আমিনসহ নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া।
বিকাল ৪টায় এক ঘণ্টার এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ড. কামাল।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার শীর্ষ নেতা ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহম্মেদ শনিবার যুগান্তরকে বলেন, ‘ড. কামাল হোসেন দেশে ফিরেছেন। আমরা আলোচনা করে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করব। বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলব’।
অন্যদিকে মানবন্ধন কর্মসূচি সফল করতে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রচারপত্র বিলি করেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাকর্মীরা।
ড. কামাল এমন করবেন ভাবতেই পারেননি খালেদা
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সাক্ষাৎ করেছেন তাঁর স্বজনরা। পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া স্বজনদের মধ্যে ছিলেন- খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার, বোন সেলিনা ইসলাম, ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ভাতিজা অভিক এস্কান্দার, ভাগিনা ডা. মো. মামুন এবং তারেক জিয়ার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বড়বোন শাহীনা জামান। সেখানে প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকালের ওই বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন এবং সেই নির্বাচনে বিএনপির অবস্থান কী হবে তা নিয়ে কথা বলেছেন খালেদা জিয়া। কারাগার থেকে তিনি বার্তা দিয়েছেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে, যে কোনো মূল্যে বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে হবে।
এর আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঐক্য করতে হবে। এমনকি গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বেও বিএনপির আপত্তি নেই বলে তখন শোনা গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেনের পিছুটানে বেগম খালেদা জিয়া হতাশ। হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ড. কামাল হোসেন যে এমন করবেন তা তিনি ভাবতেই পারেননি। এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন কোনো বড় আন্দোলনে না গিয়ে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। যত বাধাই আসুক, বিএনপি যেন নির্বাচনে যায় দলের নেতাকর্মীদের সে বার্তা দেওয়ার জন্য তিনি গতকালের বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করার পরপরই খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁদের কাছে খালেদা জিয়ার নির্বাচনী বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।