ছোট্ট ফুটফুটে মেয়েকে নিয়ে কবরে শুতে যায় বাবা,
ছোট্ট ফুটফুটে মেয়েকে- আধুনিক মনোবিজ্ঞান থেকে আমরা জানতে পারি যে, বাবা-মেয়ের সম্পর্কের একটি বিশেষ প্রভাব দু পক্ষের জীবনের উপরই রয়েছে। কন্যারা তাদের বাবার থেকেই শেখে যে কি ধরণের মানুষের সাথে তাদের সম্পর্কের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া উচিত। আর বাবারা তাদের কন্যাদের থেকে অমায়িক, ধৈর্যশীল এবং স্নেহময় হতে শেখে।
বাবার কাছে মেয়ে সবসময় খুব কাছের আর আদরের হয়। তারা সর্ব শক্তি দিয়ে তাকে আগলে রাখার চেষ্টা করে। আর মেয়ের কাছে বাবা ভগবানের মত হয়। যদি কেউ তাকে জিজ্ঞেস করে, কেমন পাত্র পছন্দ?
তাহলে মেয়েদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি যে উত্তরটি শোনা যায় তা হল ‘বাবার মতো’। জন্মের পর মেয়েরা প্রথম পুরুষের সান্নিধ্য পায় বাবার মাধ্যমে। এরপর বেড়ে ওঠার সময়টুকুতে বাবার থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
কিন্তু যদি এমন শোনেন যে, মেয়ে খুব শীঘ্রই মারা যাবে তাই বাবা মেয়েকে নিয়ে দিনের পর দিন কবরে সময় কাটাচ্ছেন যাতে তার মৃত্যুর পর একাকীত্ব বোধ না হয়। এটা সত্যিই ঘটেছে, আসুন জেনে নি সম্পূর্ণ ঘটনাটি।
দুই বছরের মেয়ে ঝাং জিনলে। শিশু বয়সেই ধরা পড়েছে দুরারোগ্য থ্যালাসেমিয়া। ঘনঘন রক্ত পরিবর্তন করতে হয় তার। তার বেঁচে থাকারও নিশ্চয়তা কম। এ কারণে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শিশুটি বেশিদিন বাঁচবে না। যে কোন সময় তার মৃত্যু হতে পারে।
প্রকৃতির ডাকে কখন যে বিদায় দিতে হয় তা তো বলা যায় না। তাই মৃত্যুর আগেই মেয়েকে নিয়ে কবরে সময় কাটাচ্ছেন বাবা, যাতে মৃত্যুর পর মেয়ে যেন একাকিত্ববোধ না করে। এমন ঘটনা সত্যিই প্রতিটি বাবাকে কাঁদায়।
গত জুন মাসের এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে আলোড়ন তুলেছে। দুই বছর বয়সী জিনলেই বংশগত কারণে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্ম নিয়েছে। নিয়মিত রক্তদান ও ওষুধ না দিলে এই রোগে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
মেয়ের বাবা ঝাং লিওং বলেন, তার মেয়ের চিকিৎসার জন্য নিজের সব অর্থ খরচ করে ফেলেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিগুলিতে দেখা যায়, ঝাং কবরে জিনলেইকে কোলে নিয়ে শুয়ে আছেন। কাছেই জিনলেইয়ের গর্ভবতী মা ডেং মিন বসে আছেন।
ঝাং বলেছেন, জিনলেইয়ের চিকিৎসায় ১ লাখ ৪০ হাজার ইউয়ান খরচ করেছি। অনেক অর্থ ঋণ করেছি। তাকে প্রতিদিন সেখানে খেলতে নিয়ে আসছি, যেখানে সে চিরনিদ্রায় শায়িত হবে।
এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে চীনের ক্রাউডফান্ডিং সাইট শুইডিচো ডট কমে ২ লাখ ইউয়ান সংগ্রহের লক্ষ্য স্থির করে অ্যাকাউন্ট খোলে। সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুযায়ী অর্ধেকের বেশি অর্থ উঠে এসেছে।
কিছু ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এই ঘটনার সমালোচনাও করেছেন। একজন লিখেছেন, এটা আমার কাছে প্রহসনের মত মনে হয়েছে। শিশুটি নির্দোষ, এমনভাবে তাকে কবরে নিয়ে যাওয়া ঠিক না। এই ছবি ইন্টারনেটের অনেক দর্শকদের মানসিক ক্ষতি করতে পারে।