ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ ঘোষণায় জাতিসংঘ সহ ৭ সংস্থা বরাবর গণ স্বাক্ষরতা!
গত চার দিন ধরে অনলাইন ‘চেঞ্জ ডটঅর্গে’ ডেইলি স্টার ও অপরাপর অনলাইন ছবি সংবলিত লিঙ্কসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ প্রতিপন্নে জাতিসংঘের পাশাপাশি নিরাপত্তা পরিষদ, ইন্টারপোল, এফবিআই,
সিআইএ, যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস, যুক্তরাজ্য পার্লামেন্ট (হাউজ অব কমন্স) ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল (ওএইচসিএইচআর) বরাবরে গণস্বাক্ষরতার স্ফূরণ ঘটেছে।
সেখানে ‘জেনারেল পিপল অব বাংলাদেশ’ বা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘এনলিস্ট বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল) এজ এ টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন’ অর্থাৎ বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করুন’ শিরোনামে তা স্থান পেয়েছে। এতে ইতোমধ্যে নির্ধারিত দেড় লাখ লক্ষ্যমাত্রার ক্ষেত্রে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৭১ জন স্বাক্ষর করেছেন।
ওই আবেদনে বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী সংগঠন হচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল)। আওয়ামী লীগ সকলের অংশগ্রহণমূলক স্বচ্ছ নির্বাচন উপেক্ষা করে যাচ্ছে। আপাতদৃষ্টিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি একটি প্রতিপক্ষহীন লোকদেখানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৮ সালের নভেম্বরে আরেকটি সাধারণ নির্বাচনের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যা হবে ব্যাপকমাত্রার দুর্নীতি, হুমকি ও জালিয়াতি প্রদর্শন। ক্ষমতা ধরে রাখতে সাধারণ মানুষের সকল প্রকার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগকে আওয়ামী লীগ ব্যবহার করছে।
তবু সব কিছু ছাড়িয়ে গেছে, যখন ছাত্রলীগ নিরস্ত্র ও নিরীহ স্কুলের শিশুদের উপর আক্রমণ ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে, যারা দেশব্যাপী, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ভয়ঙ্কর রাস্তায় চলাচলের নিরাপত্তা চেয়েছে। প্রতি বছর বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালনা ও অনুপযোগী গাড়ির কারণে ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।
ছাত্রলীগ বর্তমান সরকার ও পুলিশের ছত্রছায়ায় নারী, বৃদ্ধ, উপজাতি, নিরস্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ সকলের উপর অব্যাহতভাবে আক্রমণ করে যাচ্ছে। কিন্তু সেই পরিসর এবার ছাড়িয়ে ১০-১২ বছরের শিশুদের টার্গেটে পরিণত করেছে। একটি রাজনৈতিক দলের অস্ত্রধারী যুব অঙ্গসংগঠন হিসেবে ভীতিপ্রদর্শনকারী ছাত্রলীগ পুরোপুরি বিচারহীন সন্ত্রাসী সংগঠনে বিবর্তিত হয়েছে।
সব কিছুই সীমা থাকে! আমরা বাংলাদেশের জনসাধারণ আমাদের শিশুদের সুরক্ষা চাই। সেজন্য আমরা ঐকান্তিকভাবে জাতিসংঘ ও নিরাপত্তা পরিষদের কাছে ছাত্রলীগকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্তির দাবি জানাচ্ছি, যারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে হত্যা, বিশেষ করে শিশুদের গুড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা শান্তি ও ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি এবং সেজন্য বাংলাদেশের শিশুদের রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সম্ভাব্য সহযোগিতা চাচ্ছি। আমরা আপনাদের সাহায্য চাই। তাই ছাত্রলীগকে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিবন্ধিত করা প্রয়োজন।
এছাড়া ওই আবেদনের শেষাংশে ‘রিজনস ফর সাইনিং’ বা স্বাক্ষরের কারণ দেখিয়ে ৪ দিন আগে মোট ৫ জন তাদের বক্তব্য রেখেছেন। তাদের মাঝে শুরুতেই মামুর খান লিখেছেন, আজ ছাত্রদের উপর আক্রমণের কারণে স্বাক্ষর করেছি। আক্রমণকারীরা সন্ত্রাসী বৈ কিছু নয়।
মাহিনুর রহমান খান লিখেছেন, আমরা পরিবর্তন চাই। এই সরকার দেশ পরিচালনায় অযোগ্য। তাহমিদ রাকিব লিখেছেন, সন্দেহাতীতভাবে তারা সন্ত্রাসী। মোবাস্বির পারভেজ লিখেছেন, ছাত্ররা নিরাপদ সড়ক চেয়েছে; তাহলে কেন তাদের গুলি, ধর্ষণ ও হত্যা করা হচ্ছে। সবটাই অর্থহীন।
সূত্র : রক্তভেজা২৪.কম