ছবিগুলো দেখে বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় ঃ আঙ্গুল তুলে শিক্ষককে শিক্ষা দিচ্ছেন যিনি তার নাম ছাত্রলীগ
16 Jul, 2018
দক্ষিন আফ্রিকায় সাদারা বাড়ির গেটে কালোদের উদ্দেশে লিখে রাখত,‘বাড়ির সামনে দাঁড়ালে ভেতর থেকে গুলি করা হবে’
ঠিক যেভাবে ঢাকায় লিখে রাখা হতো ‘কুকুর হইতে সাবধান’।সাদারা মাঝে মাঝে কালোদের গুলি করতো। ঢাকায় কুকুর দিয়ে ভয় দেখানো হতো।
দক্ষিন আফ্রিকায় দিন বদলেছে। ঢাকায়ও কুকুরের বিষয়টি আর তেমন নেই।
‘সাবধানে চলুন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা’- রাস্তার উপর বোর্ডে লিখে রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এটা কি ঢাকার সেই ‘কুকুর’র ঐতিহ্য, না দক্ষিন আফ্রিকার ‘গুলি’ করার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাইছে, বুঝতে পারছিলাম না।একদিন পর আজই বুঝে গেলাম।
ছবিগুলো দেখে আপনাদেরও বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের শিক্ষক। তিনি তার শিক্ষার্থীদের নিপীড়ন থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন মাঝখানে দাঁড়িয়ে। আঙ্গুল তুলে শিক্ষককে শিক্ষা দিচ্ছেন যিনি তার নাম ছাত্রলীগ।দ্বিতীয় ছবিতে শিক্ষককে যিনি ঘুষি মারতে যাচ্ছেন, তার নামও ছাত্রলীগ।
তৃতীয় ছবিটিতে যাকে মারা হচ্ছে সেই শিক্ষার্থীদেরই বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তানজীমউদ্দিন খানরা। পুরোপুরি পারছেন যে না, তা ছবি প্রমাণ করছে।
‘সাবধান’ সাইন বোর্ড যিনি লাগিয়েছেন তার নাম প্রক্টোর। তিনি তানজীমউদ্দিন খান, ফাহমিদুল হক,রুশাদ ফরিদীদের বলেছেন ‘না জানিয়ে গেছেন কেন’?
ঠিকই তো বলেছেন, তিনি কেন ‘সাবধান’ করেছিলেন তা শিক্ষকদের বুঝতে হবে না!
এই ক্যাম্পাস আইয়ুব খানের এনএসএফ দেখেছে। দেখেছে আওয়ামী ছাত্রলীগ, জাসদ ছাত্রলীগের সন্ত্রাস ।বিএনপির ছাত্রদলের সন্ত্রাস দেখেছে। এরশাদের নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের সন্ত্রাস ও তাদের বিতাড়িত করা দেখেছে। দুই দল ছাত্রের বন্দুকযুদ্ধ দেখেছে, ছাত্রের লাশ দেখেছে। ছাত্রদলের হাতে ছাত্রী নিপীড়ন, শিক্ষক লাঞ্ছনাও দেখেছে।
এখনকার মত এতটা দানবীয় নিরীহ ছাত্র নিপীড়ন, ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন- ধর্ষণের হুমকি, শিক্ষক লাঞ্ছনা, কোনোদিন দেখেছে? অতীতে শিক্ষকদের এতটা অপমান-অসম্মান কোনোদিন কোনো ছাত্র সংগঠন করেছে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এতটা দৃশ্যমান পৃষ্টপোষকতা পেয়েছে কোনো ছাত্র সংগঠন?
এমন উপাচার্য,এমন শিক্ষক সমিতি ছিল কোনোদিন?