চরম সঙ্কটে বাংলাদেশের অর্থনীতি! বাণিজ্য ঘাটতি ছাড়াল ৩৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থ সংকট মেটাতে IMF-র কাছে ঋণ চেয়েছে।
চরম সঙ্কটে বাংলাদেশের অর্থনীতি! বাণিজ্য ঘাটতি ছাড়াল ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের (Dollar) নিচে নেমে এসেছে। সোমবার, ১ আগস্ট, দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯.৮০ বিলিয়ন ডলার। সোমবার, ১ আগস্ট, বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। যাতে বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র উঠে এসেছে।
Key Points:
* সংকট বাড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির।
* আমদানি বৃদ্ধি পেলেও বাড়ছে না রফতানি এবং রফতানি আয়।
* রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে।
সংকট বাড়ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির। আমদানি বৃদ্ধি পেলেও বাড়ছে না রফতানি এবং রফতানি আয়। রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে। আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। সোমবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯.৮০ বিলিয়ন ডলার। সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতেই উঠে এসেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির সামগ্রিক চিত্র।
ওই রিপোর্ট অনুসারে, ২০২১-২২ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই নিয়ে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক। তাদের আশঙ্কা, এই বছরেও বাণিজ্য ঘাটতি থাকবে। এবার এ বাণিজ্য ঘাটতি ৩৬/৭০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে। তারা জানিয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরের (জুলাই-জুন) শেষে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩২৫ কোটি ডলারে (তিন লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকার বেশি)। এটাই এখনও বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। একই সময় বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের ঘাটতিও সাড়ে ১৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ এর আগে কখনোই এত বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতির মুখে পড়েনি।
একদিকে বাংলাদেশ অর্থ সংকট মেটাতে IMF-র কাছে ঋণ চেয়েছে। একই সঙ্গে ভারত, চিন সহ অন্য দেশের কাছে যে ঋণ নিয়ে তা সুদ সহ মেটাতে গিয়ে হিমসিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। আগামী দিনে এ সংকট আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এ সময়েই বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে।
তাদের হিসাব অনুসারে, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত বাণিজ্যে বাংলাদেশের ঘাটতির পরিমাণ তিন হাজার ৩২৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল দু হাজার ৩৭৭ কোটি ডলার। এই অর্থবর্ষে আমদানি বেড়েছে ৩৫.৯৫ শতাংশ। যার জন্য ব্যয় হয়েছে আট হাজার ২৫০ কোটি ডলার। এই সময় রফতানি থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছে চার হাজার ৯২৫ কোটি ডলার। চলতি বছরেও রফতানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় বাড়বে বলেও জানানো হয়েছে। আমদানি ব্যয় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করছে তারা।
বাংলাদেশের ‘সেবা খাতে’-ও ঘাটতি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। সামগ্রিক লেনদেন বা ওভারঅল ব্যালেন্স-এ ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৩৮ কোটি ডলার। এ সময়ে রেমিট্যান্স কমেছে বলেও জানানো হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, এ মুহূর্তে বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আমদানির লাগাম টেনে ধরা । নাহলে সংকটে পড়বে পুরো অর্থনীতি।
মূলঃ রুপা সাহা, এই সময়, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত
Comments are closed