গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ আটক
মোঃ আশরাফুজ্জামান সরকার, গাইবান্ধাঃ
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সাংসারিক কোন্দলের জের ধরে শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা সাবেক ইউপি সদস্যের পুত্রবধূ জান্নাতুন ফেরদৌসি মমতাকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের বালাবামুনিয়া গ্রামে। শাশুড়ি রেবা বেগমের আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে এলাকাবাসির মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়াসহ নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা যায়, পবনাপুর ইউনিয়নের পারবামুনিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বাকী মিয়ার দ্বিতীয পুত্র প্লাবন গত ৩ বছর আগে একই ইউনিয়নের পাশের গ্রাম মালিয়ানদহ গ্রামের মন্টু শেখের কন্যা মমতার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্ক অটুট রাখতে মমতা ওই সময় অপ্রাপ্ত থাকায় তাদের রেজিষ্ট্রিবিহীন সামাজিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়।
বিয়ের পর মমতা এক পর্যায় ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। ওই সময় বিয়ে রেজিষ্ট্রি হয়নি অভিযোগসহ বিয়ে মেনে না নেয়ার নানা অজুহাতে চক্রান্ত করে শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্যরা সে দফায় মমতার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলেন।
এরপর প্লাবন ও মমতার বিয়ে রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করা হয়। পরবর্তিতে বাবা-মা’র চক্রান্ত থেকে দূরে থাকতে স্ত্রী মমতাকে নিয়ে প্লাবন গাইবান্ধা শহরে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন।এসময় মমতা আবারো ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।
গত বৃহস্পতিবার বালাবামুনিয়া গ্রামে পারিবারিক ঝগড়াবিবাদ ঘটনার চারদিন আগে প্লাবন ভাড়া বাসা থেকে অন্যত্র আত্মগোপন করে। নিরুপায় স্ত্রী মমতা স্বামীর খোঁজে বৃহস্পতিবার সকালে গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে প্লাবনের খোঁজে গ্রামের বাড়িতে আসেন।
প্লাবনের মা রেবা বেগম মমতার আগমনে বাড়ীর সব ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন।এসময় বাকী মেম্বারের বড় ছেলে সবুজসহ প্লাবনের বোন জামাই অন্তঃসত্ত্বা মমতাকে এলোপাতারি মারপিট করে।
এ সময় শাশুড়ি রেবা বেগম মারপিটের ভিতর ঢুকে পড়ায় পরস্পর ধাক্কায় আকস্মিক মাটিতে পড়ে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন তাৎক্ষনিক চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শাশুড়ি রেবা বেগমের মৃত্যু ঘটে।
মমতার পরিবার জানান ঘটনার আকস্মিকতায় রেবা বেগমের মৃত্যু ঘটলেও বাকী মেম্বর পুত্রবধূ হিসেবে মেনে না নেয়ার পূর্ব শত্রুতাবশতঃ অহেতুক মমতাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
হরিনাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়ীত্বপ্রাপ্ত আইসি কামাল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করেন। এসময় জিজ্ঞাসা- বাদের জন্য মমতাকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়।
দায়িত্বপ্রাপ্ত পলাশবাড়ী থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, রেবা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে না তার আকস্মিক স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটেছে ময়না তদন্তের রিপোর্টেই তা জানা যাবে।