ক্ষমা একবার হয়, বারবার নয়: খালেদা
ক্ষমতাসীনদের ফাঁদে পা দিয়ে দলে ভাঙন সৃষ্টি না করতে নেতাকর্মীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, ক্ষমা একবার হয়, বারবার নয়। শনিবার দুপুরে হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভার প্রথম অধিবেশনে দলের চেয়ারপারসন এই হুঁশিয়ারি দেন।
‘কিন্তু যারা বেইমানি করবে তাদের মূল্যায়ন হবে না, ভালো জায়গায় থাকবে না। অবশ্য বিগত দিনে একবার ক্ষমা করেছি। ক্ষমা একবার করেছি, কিন্তু বারবার ক্ষমা হয় না, ক্ষমা একবারই হয়’ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, ‘বিপদ আসলে সবাই একসঙ্গে মোকাবেলা করব। আমি শুধু বলতে চাই- আমি যেখানেই থাকব, যেখানেই যাই আপনাদের সঙ্গে আছি, থাকব।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। অতীতেও হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। আমি দলের নেতাকর্মী ও দেশের মানুষর সঙ্গে আছি, থাকব। তাই সকলেরই সাহস সঞ্চয় করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।’
জিয়াউর রহমানের দিক-নির্দেশনায় দল চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ১/১১-এর সময় বহু চেষ্টা করেছিল বিএনপি ভাঙার । কিন্তু জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমান তৃণমৃলের নেতাকর্মীদের এমনভাবে শক্তিশালী করেছেন তা সম্ভব হয়নি। বড় নেতাদের সঙ্গে ছোট নেতাকর্মীরা যদি না থাকেন, তাহলে তারা কিন্তু কিছুই করতে পারে না। তা কিন্তু তারা বুঝিয়ে দিয়েছেন।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘বিগত দিনে দেখেন, এমপি- মন্ত্রী হওয়ার খায়েশ থাকতে পারে, টাকার লোভ থাকতে পারে, কিন্তু কর্মী বাহিনীকে তাদের সঙ্গে নিতে পারেনি। তৃণমূলে শক্তিশালী ভীত গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন জায়গায় তরুণ নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বয়স হয়েছে। তাই তরুণ নেতৃত্বকে আমরা সামনে নিয়ে এসেছি। আগামী দিনে তারা দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। দেশের জন্য যাতে ভালো কাজ করতে পারে, সেজন্যই পথ তৈরি করে দিয়েছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন আরও বলেন, ‘নির্বাহী কমিটির সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বহু সন্ত্রাস হবে, ষড়যন্ত্র হবে। নানা রকমভাবে হয়রানির করার চেষ্টা করা হবে। ভয়ভীতি দেখানো হবে। আমি ভয়ে ভীত নই।’
১/১১ এর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমার মুখের সামনে বলা হয়েছিল আমার দুই ছেলেকে নিয়ে যাবে এবং নিয়ে গেছেও। তাদের ওপর কত অত্যাচর করেছে আপনার দেখেছেন। একজনতো (কোকা) অত্যাচারের সেই অবস্থা কাটিয়ে ফিরে আসতে পারেনি আমাদের কাছে। তারেক রহমান এখনো অসুস্থ, চিকিৎসা নিতে হয়।’
এসময় বাষ্পরুদ্ধ পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন। পরক্ষণেই নিজেকে সামলে আবার বক্তব্য দিতে শুরু করেন তিনি।
বেলা ১১টা ১০ মিনিটে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে নির্বাহী কমিটির সভা শুরু হয়। শুরুতেই ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ অনুষ্ঠিত বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকে এখন পর্যন্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বরেণ্য ব্যক্তিদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব আনা হয়। তাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।