এ সড়ক দুর্ঘটনাতেই নিহত সেরা ইসলামিক স্কলার ড আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর।
শাইখ ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহিমাহুল্লাহর কথা নিশ্চয়ই মনে থাকবে আপনাদের। আমি তো এক মূহুর্তের জন্যও ভুলতে পারিনা। চোখ বুজে খেয়াল করলে সাথে সাথেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে তার সেই হাস্যোজ্জ্বল মুখটি। আমার ধারণা যদি ভুল না হয় যারা তাকে দূরে কিংবা কাছ থেকে একবারও দেখেছেন তাদেরও এমনটা মনে পড়ার কথা।
অত্যন্ত মেধাবী, সুশীল এবং শান্তিপ্রিয় এই মানুষটির কথা মনে পড়লে আরও একটি দৃশ্য হৃদয়কে তোলপাড় করে দেয়। সেটি হলো যেদিন স্যার চলে গেলেন সেদিনের দৃশ্য। এক বন্ধুর ফেসবুকে হঠাৎ করেই একটি ভিডিও পেলাম। যেখানে দেখা যাচ্ছে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া স্যারের সেই চিরচেনা গাড়িতে স্যারের ড্রাইভার তখনও নিঃশ্বাস নিচ্ছে, পাশের সিটেই যেন চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে গেছেন প্রিয় শাইখ আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর।
স্যার সেদিন ঝিনাইদহ থেকে রাজধানী ঢাকায় আসছিলেন নিজের ব্যক্তিগত কাজে। কিন্তু কে জানতো ঘাতক কাভার্ডভ্যান স্যারের সে যাত্রা চিরকালের জন্য শেষ করে দেবে?
ক্যাম্পাসে থাকতে দেখতাম অনেক সময় স্যার নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে চলে আসতেন। কিন্তু কখনও কি আমরা কেউ ভাবতে পেরেছি খুব অল্পসময়ে আমরা হারাতে চলেছি এই গুণী মানুষকে?
সারা বাংলাদেশে স্যারের শুভাকাঙ্খী, ভক্তকূলের অভাব নেই। কিন্তু আমরা কেউ সেদিন আজকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মত রাস্তায় দাঁড়িয়ে একবারের জন্যও বলতে পেরেছি- We Want Justice? আমরা কি একবারের জন্য সেই কাভার্ডভ্যানের ঘাতক চালকের বিচার চেয়েছি? অথচ এরকম একজন জনপ্রিয় মানুষের মৃত্যুতে হত্যাকারীর বিচার গণদাবিতে পরিণত হতে পারতো! সত্যিই আজকে রাস্তায় দাঁড়ানো কিশোর কিশোরীদের চেয়ে আমরা অনেক বেশী অধম, স্বার্থপরও বটে।
আজ নিরাপদ সড়কের দাবিতে কিশোর কিশোরীরা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তারা ঘাতকদের বিচার চায়। সে যৌক্তিক আন্দোলনে তারা যাতে টিকতে না পারে তা নিশ্চিত করতে নানামুখী রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। অথচ আমরা শুধুমাত্র ফেসবুকে বাহবা দিয়েই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছি। এটা অন্যায়। এ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাশে আপনার আমার অংশগ্রহণ নৈতিক দায়িত্ব। তাদের এ পথচলা যেন কোন সন্ত্রাসী থামিয়ে দিতে না পারে অভিভাবক হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়ানোই হতে পারে ঋণ পরিশোধের সুযোগ।
Moyn Khan