এশিয়া সফরে ট্রাম্প প্রথম পা জাপানে , হুমকি শুরু উত্তর কোরিয়া’র কিমকে দিয়েই।

November 6, 2017 12:14 am0 commentsViews: 14
নিউইয়র্ক থেকে ড. ওমর ফারুক।।
স্থানীয় সময়ঃ ৫ নভেম্বর ২০১৭ রাত সাতটা।
[শুধু আকাশ হামলায় এই পরমাণু ভাণ্ডার ধ্বংস করা কার্যত অসম্ভব। কিম যে ভাবে উত্তর কোরিয়ার মাটির নীচে সেই অস্ত্র ভাণ্ডার লুকিয়ে রেখেছেন, তা খুঁজে বার করতে স্থল পথে যুদ্ধ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।]
এশিয়া সফরের শুরু এক সময়ে হিরোশিমা ও নাগাসাকি শহর ধ্বংসস্তুপে পরিণত করা জাপানে প্রথম পা রাখার মধ্য দিয়ে শুরু করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলাল্ড ট্রাম্প। আর সেখানে পা ফেলা বাকী। নেমেই প্রথমই হুমকি দিলেন উত্তর কোরিয়ার কিমকে।  টোকিও স্থানীয় সময় ৬ নভেম্বর, সোমবার, জাপানের রাজধানী টোকিওতে  এক দল সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘কোন একনায়কেরই আমেরিকাকে হাল্কা ভাবে নেওয়া উচিত নয়।’’ একই সঙ্গে পেন্টাগনও জানিয়ে রেখেছে, পিয়ংইয়ংয়ের পরমাণু ভাণ্ডার ধ্বংস করতে যুদ্ধই একমাত্র পথ। পেন্টাগন আরও জানিয়েছে, প্রয়োজনে আমেরিকার পদাতিক বাহিনী  উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করে পারমানবিক স্থাপনাসমূহ ধ্বংস করে আসবে।পিয়ংইয়ং ভাল করেই জানে, ট্রাম্প টোকিওতে নেমেই প্রথমে যে তার উত্তর কোরিয়ার উপর বড় ধরনের হুমকি ধমকি দেবে। তাই পাল্টা হুমকি রেখেছে কিম সরকারও। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থাকে উদ্ধৃত করে সেখানকার এক জনপ্রিয় দৈনিকে লেখা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যদি এখনও একের পর এক এরকম উদ্ভট মন্তব্য করতে থাকেন, তা হলে মার্কিন ভূখণ্ডে ‘পারমাণবিক বিপর্যয়’ কেউ আটকাতে পারবে না।

কিমের দেশের পরমাণু ভাণ্ডার শেষ করতে সে দেশে সেনা নামানোই একমাত্র উপায় বলে মনে করছে পেন্টাগন। যুদ্ধ লাগলে কতটা প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে—সম্প্রতি পেন্টাগনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন কংগ্রেসের দুই সদস্য। কারণ সে ক্ষেত্রে আমেরিকার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সেনারও প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রশ্নের উত্তরে পেন্টাগনের ‘জয়েন্ট স্টাফ’-এ ভাইস ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিরাল মাইকেল জে ডুমন্ট একটি চিঠি দিয়ে কংগ্রেসকে জানিয়েছেন, শুধু আকাশ হামলায় এই পরমাণু ভাণ্ডার ধ্বংস করা কার্যত অসম্ভব। কিম যে ভাবে উত্তর কোরিয়ার মাটির নীচে সেই অস্ত্র ভাণ্ডার লুকিয়ে রেখেছেন, তা খুঁজে বার করতে স্থল পথে যুদ্ধ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই বলেই মত ডুমন্টের। আর তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার ভূখণ্ড ব্যবহার করতেই হবে আমেরিকাকে।

দশ দিনের এশিয়া সফরে আজই টোকিওতে পা রেখেছেন সস্ত্রীক ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম এশিয়া সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। কোরীয় উপদ্বীপে মার্কিন নৌবাহিনীকে সাহায্য করছে জাপান আর দক্ষিণ কোরিয়া। এ দু’দেশেই সামরিক ঘাঁটি রয়েছে আমেরিকার। টোকিওর কাছে এমনই এক ঘাঁটিতে আজ মার্কিন সেনাদের সঙ্গে দেখা করেন ট্রাম্প। জাপানের পশ্চিম উপকূলে সরাসরি হামলার হুমকি দিয়ে রেখেছেন কিম।  দক্ষিণ কোরিয়কেও বারবার হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থায় তিন মিত্র দেশের বন্ধুত্বের ভিত আরও শক্ত করতেই ট্রাম্পের এশিয়া সফর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আজ টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্পকে। দু’জনকে একসঙ্গে গল্‌ফও খেলতে দেখা গিয়েছে। আগামীকাল, স্থানীয় সময় ৭ নভেম্বর, সরকারি নৈশভোজ। কিন্তু তার আগেই ট্রাম্প-আবের মাখোমাখো সম্পর্ক কিমকে নতুন করে সতর্ক করা ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করছেন অনেকে।

জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ছাড়া ভিয়েতনাম, চীন আর ফিলিপা্ইনও যাওয়ার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। আগামী মঙ্গলবার সিউলে যাওয়ার কথা ট্রাম্পের। দু’দিন সেখানে থাকবেন তিনি। তবে আজ দক্ষিণ করোরিয়ার রাজধানীতে অবশ্য সেখানেই ট্রাম্প-বিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়েছেন হাজার দু’য়েক মানুষ। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের তিক্ত সম্পর্ক সিউলের। কিন্তু ট্রাম্প সেই তিক্ততা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে মনে করেন দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক সচেতন নাগরিক। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় সাড়ে আঠাশ হাজার মার্কিন সেনার বাস। ট্রাম্পের একের পর এক হুমকিতে কিম আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন বলে ধারণা কোরিয়াবাসীর। আজকের বিক্ষোভে শ্লোগান ছিল, ‘আমরা যুদ্ধের বিরোধী। আমরা শান্তি চাই’। এক বিক্ষোভকারী বললেন, ‘‘নিজেদের রাজনৈতিক মুনাফার জন্য যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছেন ট্রাম্প আর কিম। আর আমরা সাধারণ মানুষ সর্বদা যুদ্ধের ভয়ে কাঁটা হয়ে আছি।’’ সেনায় দু’বছর কাটাতেই হবে, এমন নিয়ম রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এক সেনা সদস্যের মা বললেন, ‘‘ট্রাম্প উত্তর কোরিয়া নিয়ে কিছু বললেই বুক কেঁপে ওঠে।’

[গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্ট অবলম্বনে]

http://www.cnn.com/2017/11/04/politics/trump-tokyo-asia-trip-shinzo-abe/index.html

President Donald Trump waves as he boards Air Force One at Andrews Air Force Base, Md., Friday, Nov. 3, 2017, to travel to Joint Base Pearl Harbor Hickam, in Hawaii. Trump begins a 5 country trip through Asia traveling to Japan, South Korea, China, Vietnam and the Philippians. (AP Photo/Andrew Harnik)

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com