একরাত ঘুম কম হলে ৭টি ক্ষতি হবে আপনার

October 23, 2017 12:28 am0 commentsViews: 11

ঘুম কম হলে – প্রতি রাতে আপনার দরকার ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো । শতকরা ৪০ ভাগ লোক এর চেয়ে কম ঘুমায় । মাত্র এক রাত ঘুম কম হলেই আপনার শরীরে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে শুরু করে। যথেষ্ট ঘুম না হলে চোখ লাল হয়, গায়ের চামড়ার রঙ নষ্ট হয়। অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

একরাত ঘুম কম হওয়া বা কিছু সময় ধরে ঘুম কম হওয়ার সমস্যাটি শুরুতে অল্প থাকলেও পরে তা বড় সমস্যায় রূপ নেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ধরনের ঘুম না হওয়ার পিছনে অনেক কারণের একটি হচ্ছে খাবার-দাবার। অতিরিক্ত ক্যালরি আছে এমন খাবার বা অতিরিক্ত শর্করার খাবার খেলে বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।

১৫ জন লোকের ওপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে মাত্র এক রাত ঘুম না হলেই মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় শুরু হয়। ১৭৪১ জন নারী এবং পুরুষের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে যারা ১০ থেকে ১৪ বছর ধরে ছয় ঘণ্টারও কম ঘুমান তাদের মধ্যে মারাত্মক ধরনের মৃত্যুহার বেশি থাকে। তাছাড়া তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ সহ আরো অনেক রোগের হার বেশি।

এক রাত কম ঘুমালে যে সমস্যা হয়

১) ক্ষুধা বেড়ে যায় এবং আপনি বেশি খেতে শুরু করেন।

২) যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকির মধ্যে থাকেন আপনি।

৩) আপনি দেখতে যেমন আপনাকে তার চেয়ে খারাপ দেখায়।

৪) ঠাণ্ডা-সর্দি লাগার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৫) আপনার মস্তিষ্কের টিস্যু নষ্ট হওয়া শুরু হয়।

৬) আপনি সামান্য কারণে ইমোশোনাল হয়ে যান।

৭) আপনার স্মৃতিশক্তি হ্রাস পেতে শুরু করে।

একরাত ঘুম কম হওয়া বা অল্প সময়কাল ধরে ঘুম কম হওয়ার সমস্যাটি পরে গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। এটি রূপ নিতে পারে নিয়মিত ঘুম কম হওয়া বা ঘুম না হওয়ার সমস্যায়।

প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ঘুম না হওয়ার কারণে ব্রেস্ট ক্যান্সারসহ অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আর নিয়মিত ঘুম কম হলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে থাকে।

নিয়মিত কম ঘুমালে যে সমস্যাগুলি হয়

১) স্ট্রোক করার ঝুঁকি চারগুণ বেড়ে যায়

২) অবেসিটি রিস্ক বেড়ে যায়। ফলে তাড়াতাড়ি আপনি মোটা হতে থাকেন।

৩) কোনো ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৪) ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৫) হৃদরোগের আশঙ্কা বেড়ে যায়।

৬) আপনার শরীরে শুক্রাণু কম উৎপন্ন হতে থাকে।

৭) মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

বেশি ঘুমালে কী হয়

সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম খুব প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। সঠিকভাবে না ঘুমালে বা কম ঘুমালে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়। তবে কম ঘুম যেমন শরীরের ক্ষতি করে, তেমনি বেশি ঘুমও শরীরের জন্য ক্ষতি বয়ে আনে?

বেশি ঘুমানোর কিছু ক্ষতিকর বিষয়ের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট টপ টেন হোম রেমেডি।

১. একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সাধারণত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো জরুরি। তবে এর চেয়ে বেশি ঘুমালে হার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বেশি ঘুমালে লেফ্ট ভ্যান্টিকুলার মাস্কের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এতে হার্ট পুরো হয়ে যায়; হার্ট বিকল হওয়ার ঝুঁকি হয়।

২. বেশি ঘুমানোর সঙ্গে ওজন বাড়ার একটি সম্পর্ক রয়েছে। বেশি ঘুমালে অনেকক্ষণ ধরে শারীরিকভাবে কর্মহীন থাকা হয়। আর বেশিক্ষণ ধরে শারীরিকভাবে কর্মহীন থাকা মানে শরীর থেকে কম ক্যালোরি ঝরা। এতে ওজন বাড়ার আশঙ্কা বাড়ে।

৩. বেশি ঘুমালে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। যেহেতু বেশি ঘুমালে ওজন বাড়ে, তাই ডায়াবেটিসেরও ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কা থাকে।

৪. বেশি ঘুমানো মেজাজের ওপর প্রভাব ফেলে। বেশি ঘুমালে বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হয়।

৫. বেশি ঘুমালে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ওজনাধিক্য, মাথাব্যথা, কোমর ব্যথার সমস্যা হয়। এটি অকালমৃত্যু ঘটাতে পারে। তাই শরীরকে সুস্থ রাখতে কম বা বেশি নয়, পর্যাপ্ত ঘুমান।

ওষুধের হাই পাওয়ার-লো পাওয়ার বলতে কী বুঝব?

বিজ্ঞের মতো অনেক সময় আমরা এমন কিছু বলি, যা প্রকৃতপক্ষে সত্য বলে ধরে নেওয়া যায় না। ঠিক এ রকম ভুল ধারণা রয়েছে ওষুধের হাই পাওয়ার-লো পাওয়ার নিয়ে।

আসলে কি ওষুধের হাই পাওয়ার-লো পাওয়ার বলে কিছু আছে? অনেরই ধারণা, হাই পাওয়ার ওষুধের কারণে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়েছে কিংবা অমুক রোগটির জন্য হাই পাওয়ার ওষুধ দরকার অথবা শিশুদের হাই পাওয়ারের ওষুধ দেয়া যায় না।

আসলে হাই পাওয়ার সম্পর্কে এসব ধারণার কোনোটিই যথার্থভাবে ঠিক নয়। সত্যিকার অর্থে হাই পাওয়ার বলতে কোনো ওষুধের অতিরিক্ত ডোজকে মনে করা যেতে পারে। হাই পাওয়ার বলতে বিশেষ কিছু ওষুধকে বোঝায় না।

তবে সাধারণত লোকজন হাই পাওয়ার ওষুধ বলতে বিশেষ কিছু ওষুধকেই বুঝে থাকেন। কেউ কেউ হাই পাওয়ারের ওষুধ বলতে নতুন জেনারেশনের ওষুধ বুঝিয়ে থাকেন। সাধারণের এসব ধারণা ঠিক নয়।

অতি সাধারণ কিছু ওষুধ, যেমন—প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড এগুলোও যদি অতিমাত্রায় সেবন করা হয়, তবে সে ক্ষেত্রেও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত বিভিন্ন অসুবিধা দেখা দিতে পারে।

এমনকি এ ধরনের অনেক সাধারণ ওষুধই অতিরিক্ত মাত্রায় শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতিসাধন করতে পারে। একইভাবে বলা যায়, অনেক দামি ওষুধ, দুষ্প্রাপ্য ওষুধ কিংবা নতুন জেনারেশন অ্যান্টিবায়োটিক বা যেকোনো ওষুধের স্বাভাবিক মাত্রায় কোনো জটিলতা সৃষ্টি করার কথা নয়।

তবে ওষুধের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে অনেক সময় অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এই প্রতিক্রিয়া অনেক সময় ভয়ংকর হয়। তবে এই প্রতিক্রিয়া তথাকথিত হাই পাওয়ারের জন্য হয় না। কোন ওষুধের কার প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে, সেটি আগে থেকে বলা মুশকিল।

অর্থাৎ খাওয়ার পরই সেটি বোঝা যায়। শিশুদের ক্ষেত্রে কিছু কিছু ওষুধ, যা তাদের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে নিষেধ করা হয়, সেগুলো বাদ দিয়ে যেকোনো ওষুধ যথার্থ ডোজে শিশুকে দেওয়া যাবে। মনে রাখবেন, রোগ যত মারাত্মক হোক, ওষুধ সেই রোগের জন্য যথার্থতা বিবেচনা করে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে হাই পাওয়ার-লো পাওয়ারের কোনো প্রসঙ্গের স্থান নেই।

নির্দিষ্ট রোগের জন্য ওষুধও নির্দিষ্ট। কিছু ওষুধ দেওয়া হয় উপসর্গ বিবেচনা করে। অনেক সময় কোনো কোনো ওষুধের প্রতি রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করতে সক্ষম, সেটিকেই প্রয়োগ করা হয়। কাজেই রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে হাই পাওয়ার-লো পাওয়ার কোনো ব্যাপার নয়, সঠিক ওষুধ প্রয়োগ করাটাই আসল ব্যাপার।

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

Leave a Reply

You must be logged in to post a comment.

Editor in Chief: Dr. Omar Faruque

Editor: Dr. Morjina Akhter

All contact: 400E Mosholu Parkway South Apt # A23,The Bronx, New York 10458, USA

Mob. 001.347.459.8516
E-mail: dhakapost91@gmail.com