ইসলাম নিয়ে মার্কিন কাউন্সিলরের বির্তকিত পোস্ট, মেয়র কর্তৃক পদত্যাগের দাবী নাকচ।

মার্কিন স্কুলগুলোতে ইসলাম নিষিদ্ধের জন্য একটি ভিডিও টেক্সাসের প্লানোর একজন সিটি কাউন্সিলর কর্তৃক সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করায় শহরটির মুসলিমদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় অবিলম্বে ওই কাউন্সিলরকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন শহরটির মেয়র হ্যারি লা’রসিলিয়ারে। ওই সিটি কাউন্সিলরের নাম টম হ্যারিসন। ‘জয়েন্ড হ্যান্ডস অ্যাক্রস আমেরিকা ফর ট্রাম্প’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপ থেকে মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ভিডিওটি হ্যারিসন তার পেজে শেয়ার করেন।ভিডিওটিতে স্কুলে মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের প্রার্থনা করার কয়েকটি দৃশ্য এবং হিজাব পরিহিত ছাত্রীদের ছবির শিরোনামে লেখা রয়েছে ‘যদি আপনি মনে করেন আমেরিকান স্কুলে ট্রাম্পের ইসলাম নিষিদ্ধ উচিত, তাহলে এটি শেয়ার করুন’।
ভিডিওটি বুধবারের প্রায় পুরোটা সময় এটি তার পেজে ছিল। পরে অবশ্য সন্ধ্যার দিকে সেখান থেকে এটি সরিয়ে ফেলা হয়। প্লানোর মেয়র হ্যারি লা’রসিলিয়ারে বলেন, এ বিষয়ে ব্যাখ্যার জন্য তিনি এবং শহরের ম্যানেজার ওই কাউন্সিলারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। মেয়র হ্যারি লা’রসিলিয়ারে বলেন, ‘তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে-এ ধরনের কিছু প্রতিক্রিয়া দেখার প্রত্যাশা নিয়ে আমি অপেক্ষা করছিলাম। আমি নিশ্চিত নই যে কেন তিনি এটা করেছেন।’ বুধবার বিকেলে এক প্রেস কনফারেন্সে লা’রসিলিয়ারে প্রকাশ্যে হ্যারিসনকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। লা’রসিলিয়ারে বলেন, ‘হ্যারিসনের অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি সমৃদ্ধ এই বৈচিত্র্যময় শহরটির প্রতিনিধিত্ব করার অযোগ্য। এই ধরনের আচরণ প্লানোর শহরের মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’
সিটি কাউন্সিলর টম হ্যারিসন
মেয়র জানান, তার সঙ্গে বা আনুষ্ঠানিক সিটি মিটিংয়ের সময়ে হ্যারিসন ইসলাম সম্পর্কে এর আগে কখনো কোন মতামত ব্যক্ত করেন নি। চার বছরের মেয়াদের জন্য ২০১৫ সালে হ্যারিসন শহরের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এবিষয়ে মার্কিন গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ফোনে এবং তার ইমেল অ্যাকাউন্টে ইমেলিংয়ের মাধ্যমে বুধবার হ্যারিসনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি। এনবিসি’র পক্ষ থেকে পরে তার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, তার বাবা ডাক্তারের চেম্বারে আছেন এবং তিনি আসলে বার্তাটি তার কাছে পৌঁছানো হবে। পরে বুধবার বিকালে ওই ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে দেয়া হয় এবং একই দিন সন্ধ্যায় হ্যারিসন এ বিষয়ে ক্ষমা চেয়ে আরেকটি পোস্ট দেন। তবে, তাকে পদত্যাগ করার জন্য মেয়রের আহ্বান সম্পর্কে কিছু বলেন নি। ধর্মীয় শিক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা, প্রার্থনা বা মুসলিম ছাত্রদের নিষিদ্ধ করা, স্কুলগুলো থেকে ইসলাম নিষিদ্ধের অর্থ কি- সে সম্পর্কে ভিডিওটিতে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয় নি। সুজানে নামে একজন নারী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি একজন মা। আমি প্লানো শহরের একজন বাসিন্দা। আমি একজন মুসলিমও। তাই পোস্টের ধরনটি আমাকে অনেক উপায়ে আঘাত করার মত।’
তিনি বলেন, বুধবার সকালে তার একজন বন্ধু তাকে পোস্টটির একটি স্ক্রিনশট পাঠায়। এটি তাকে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন করে। পরে তিনি পোস্টটি সম্পর্কে শহরটির মেয়রকে ইমেইল করেন এবং তারপর মেয়রের কাছ থেকে সরাসরি শোনার জন্য সিটি হলে যান।
সূত্রঃ এনবিসি