ব্রিটেনে ইজরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মন্ত্রী প্রীতি পাটেলের বিরুদ্ধে। অবশেষে পদত্যাগ।
নিউইয়র্ক থেকে ড. ওমর ফারুক। তারিখঃ ৯ নভেম্বর ২০১৭।।
ইসরাইলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ব্রিটিশ international development secretary, Priti Patel অবশেষে ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রীতি পাটেলকে পদত্যাগ করতে হল। এখন তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বড় একটা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি সামার ভ্যাকেশনে ইচ্ছামত ইসরাইল গিয়ে বেশ ক’টি গোপন মিটিং করেছেন। অথচ সে মিটিংগুলো সম্পর্কে প্রধানম,ন্ত্রী থেরেসা মে’কে কোন রকম অবহিত করেন নি। কিংবা করলেও ভুল তথ্য দিয়েছেন। তার আচরণ এতটাই মারাত্মক যে, পার্লামেন্টের সদস্যপদও হারাতে পারেন প্রীতি পাটেল। বুধবার প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ফোন পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রীতি আফ্রিকা সফর কাটছাঁট করে তড়িঘড়ি লন্ডনে ফিরে এসেছেন। পদত্যাগ করলেন তাঁর দায়িত্ব থেকে।
প্রীতির বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের নিয়ম ভাঙার অনেক অভিযোগ উঠেছিল। গত কয়েক দিন ধরেই সে নিয়ে ব্রিটিশ রাজনীতির ময়দানে বেশ বিতর্ক। গত বুধবার আবারও ইজরায়েলের দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে দু’টি গোপন বৈঠকের কথা মিডিয়ায় প্রকাশ হলে নতুন করে জল্পনা শুরু হল তাঁকে নিয়ে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এ অভিযোগ প্রীতি স্বীকারও করে নিয়েছেন। ফলে ক্যাবিনেটের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে প্রীতিকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী মে। ।
জুলাই মাসে নিজের খরচে পরিবারের সঙ্গে ইজরায়েল ভ্রমণে গিয়েছিলেন প্রীতি। কিন্তু জানা গিয়েছে, তা কোনও সাধারণ সফর ছিল না। ইজরায়েলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে একটা ুটো নয়, ১২টি গোপন বৈঠক করেন প্রীতি। সেই তালিকায় ছিলেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু-ও। অভিযোগ, একটি বৈঠকের কথাও ইজরায়েলে ব্রিটিশ দূতাবাসকে জানান নি প্রীতি। কিছু জানত না প্রধানমন্ত্রীর দফতরও।
এ বৈঠকগুলোর কথা প্রকাশিত হয়ে গেলে প্রীতি প্রথমে বলেছিলেন, সেক্রেটারি অব ফরেন এ্যফেয়ার্স বরিস জনসন ইজরায়েলি নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের কথা জানতেন। পরে অবশ্য তাঁর সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন প্রীতি। কিন্তু এর পরে আরও দু’টি গোপন বৈঠকের কথা তিনি একেবারেই চেপে যান। এই বৈঠক দু’টি হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। প্রথমে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চত্বরেই ইজরায়েলের জননিরাপত্তা মন্ত্রী গিলাদ এর্দানের সঙ্গে গোপনে বৈঠক সারেন প্রীতি। এক সপ্তাহের মধ্যেই নিউ ইয়র্কে ইজরায়েলের বিদেশ মন্ত্রকের আধিকারিক ইয়ুভাল রটেমের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠকটি করেন। নিয়ম ভেঙে বৈঠক দু’টির একটির কথাও তিনি প্রশাসনকে জানাননি।
ইজরায়েলে থাকাকালীন সে দেশের সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে গোলান উচ্চভূমিতে গিয়েছিলেন প্রীতি। যা পুরোদস্তুর নিয়মবিরুদ্ধ, কারণ এই এলাকাকে ইজরায়েলের অংশ বলেই মানে না ব্রিটেন। বর্তমানে ইজরায়েলের দখলে থাকা গোলান উচ্চভূমি এক সময় সিরিয়ার অংশ ছিল। বিতর্কিত এই এলাকা নিয়ে মাথা না ঘামানোর নির্দেশ জারি ছিল ব্রিটিশ আধিকারিকদের উপরে। বিরোধী শিবিরের দাবি, ইজরায়েল সেনা পরিচালিত একটি হাসপাতালকে ব্রিটেনের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার বিষয়ে ইজরায়েলি মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করেন প্রীতি।
অগস্টের ওই ১২টি বৈঠকের কথা প্রকাশ্যে আসায় সোমবার প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র কাছে ক্ষমা চান প্রীতি। প্রীতির দাবি ছিল, উৎসাহের বশেই এই কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। তবে ওই ১২টি বৈঠকের কথা মেনে নিলেও এ দিন সেপ্টেম্বরের বৈঠক দু’টির কথা বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন প্রীতি।
ব্রিটেনের রাজনীতির আঙিনায় প্রীতি পটেল আদৌ নতুন মুখ নন। বরং ভারতীয় বংশোদ্ভুত রাজনীতিবিদদের মধ্যে তিনিই বেশি পোড়খাওয়া। তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র ঘনিষ্ঠও বটে। ব্রিটেনের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন দফতর-সহ বিদেশ সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দফতরের ভার এখন তাঁরই হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ, অপ্রীতিকর প্রশ্নের কাঁটা এড়াতেই তড়িঘড়ি কেনিয়া সফরে চলে যান প্রীতি। সেই সফর থেকেই ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে।
প্রীতির পদত্যাগের দাবিতে সরব হন বিরোধীরা। ক্ষোভ বাড়ছে দলের অন্দরেও। ফলে ঘরে বাইরে চাপের মুখে মে। প্রীতির রাজনৈতিক ভাগ্যের চাকা এখন কোন দিকে গড়াবে, নির্ভর করছে মে-র উপরেই। প্রীতির পদত্যাগ নিয়ে নিউইয়র্ক টাইম্সসহ আমেরিকার গণমাধ্যম বিভিন্ন প্রতিবেদন ও নিউজ ছাপে।
Britain’s international development secretary, Priti Patel, 45, resigned after breaching ministerial rules by holding a dozen unauthorized meetings with Israeli officials during a summer vacation, giving a misleading impression about whom she had informed and failing to disclose all the relevant details to the prime minister Mrs. May. It was the second cabinet minister to quit in a week. Basically it is another significant new setback for Theresa May.